রেজাউল করিম, গাজীপুর
প্রকাশ : ২৯ মার্চ ২০২৫ ১৪:১০ পিএম
দিনভর স্বস্তিতে ঘরমুখো মনিুষ যাতায়াত করলেও সময়ের সাথ সাথে যানবাহন চলাচল বৃদ্ধি পেলে সড়কে সৃষ্টি হয় যানজটের। শুক্রবার ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের গাজীপুরের কালিয়াকৈর চন্দ্র ত্রিমোড় এলাকায়। প্রবা ফটো
দরাজায় কড়া নাড়ছে ঈদ। পরিবার সঙ্গে ঈদ করতে শহর ছেড়ে গ্রামের পথে কর্মজীবীরা। শুক্রবার বিকাল পর্যন্ত শিল্প এলাকা গাজীপুরের ৬৬ ভাগ কারখানা ছুটি হয়েছে। এতে বিকাল থেকে মহাসড়কে যাত্রীদের উপচে পড়া ভিড় দেখা গেছে। ফলে বিভিন্ন পয়েন্টে থেমে থেমে যানজটের সৃষ্টি হয়েছে।
শিল্প অধ্যুষিত গাজীপুরে ২ হাজার ১৭৬টি নিবন্ধিত কলকারখানা। এর মধ্যে ১ হাজার ১৫৪টি পোশাক কারখানা। এসব কারখানায় কাজ করে লাখ লাখ কর্মী। গতকাল বিকাল পর্যন্ত ১ হাজার ৪৭৯ কারখানা ছুটি হয়েছে। ছুটি হওয়ার পর শ্রমিকরা বাড়ি ফিরতে শুরু করেছে। অন্যান্য ঈদের থেকে এবার ঈদে তুলনামূলক বেশি ছুটি থাকায় অধিকাংশই বাড়ি যাচ্ছেন।
গাজীপুর শিল্প পুলিশ-২ এর এসপি একেএম জহিরুল ইসলাম বলেন, শুক্রবার বিকাল পর্যন্ত ৬৬ ভাগ কারখানা ছুটি হয়েছে। বাকি কারখানাগুলো শনিবারের মধ্যে ছুটি হয়ে যাবে। এ ছাড়া কারখানাগুলো মার্চ মাসের বেতন ৮০ ভাগ ও ৯৫ ভাগ বোনাস পরিশোধ করেছে।
সরেজমিন দেখা গেছে, ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার চন্দ্রা এলাকায় দিনভর স্বস্তি নিয়ে ঘরমুখী মানুষ যাতায়াত করলেও আসরের পর থেমে থেমে যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। এতে চন্দ্রা থেকে তিন দিকে প্রায় ১০-১২ কিলোমিটার যানজটের সৃষ্টি হয়েছ। কিছুটা দুর্ভোগে পড়েছে উত্তরবঙ্গগামী যানবাহনের যাত্রীরা। অন্যদিকে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের গাজীপুর অংশে কয়েকটি পয়েন্ট থেমে থেমে যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে। তবে পুলিশের তৎপরতার কারণে সেসব স্থানে ধীরগতিতে যানবাহন চলতে দেখা গেছে।
ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের আনসার ভিডিপি একাডেমি থেকে চন্দ্রা হয়ে কালিয়াকৈর বাইপাস পর্যন্ত যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। এ ছাড়া চন্দ্রা ত্রিমোড়গ থেকে নবীনগর দিকে চক্রবর্তী পর্যন্ত প্রায় ৫ থেকে ৭ কিলোমিটার পর্যন্ত যানবাহনের দীর্ঘ সারি দেখা গেছে। চন্দ্রা এলাকায় শত শত মানুষ গাড়ির জন্য অপেক্ষা করতে দেখা গেছে। ঘরমুখো মানুষ বাস ছাড়াও মোটরসাইকেল, পিকআপ ও ট্রাকে বাড়ি ফিরছেন। অন্যদিকে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের গাজীপুরের টঙ্গী চেরাগ আলী, মালেকের বাড়ি, ভোগড়া ও চান্দনা চৌরাস্তা এলাকায় যানবাহনের চাপের কারণে থেমে থেমে যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে। তবে পর্যাপ্ত পুলিশ থাকায় অনেকটাই নিয়ন্ত্রণ করতে পারছে।
গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের সহকারী উপকমিশনার আশোক কুমার পাল বলেন, ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে সারাদিন কোথাও কোনো যানজট ছিল না। সন্ধ্যার পর শিল্প কারখানা ছুটি হওয়ায় মানুষের ভিড় বাড়তে থাকে। বিভিন্ন পয়েন্টে ওঠানাম করায় কিছুটা জটলার সৃষ্টি হচ্ছে। চাপ থাকলেও যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে।
নাওজোর হাইওয়ে থানার ওসি রইছ উদ্দিন বলেন, মহাসড়কের নিরাপত্তা রক্ষায় জেলা, মেট্রোপলিটন ও হাইওয়ে পুলিশের চার হাজার সদস্য কাজ করছেন। চন্দ্রা এলাকায় সারাদিন যানবাহনের চাপ থাকলেও যানজটের সৃষ্টি হয়নি। তবে সন্ধ্যার পর মানুষ আর অতিরিক্ত যানবাহনের চাপের কারণে তিনদিকেই কয়েক কিলোমিটার এলাকায় যানবাহনের সারি হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী যানজট নিরসনের কাজ করছে।
এদিকে মহাসড়ক থেকে রেলওয়ে স্টেশনে যাত্রীদের ভিড় বেশি লক্ষ্য করা গেছে। জয়দেবপুর রেলওয়ে জংশনে সকাল থেকেই যাত্রীদের উপচে পড়া ভিড়। ট্রেন আসলেই দৌড়াদৌড়ি করে ঝুঁকি নিয়ে বাড়ি ফিরতে দেখা গেছে। বিকালের দিকে এই চাপ আরও বাড়ে। তবে স্টেশনে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। দুটি পকেট গেইট বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। মূল গেটে বাঁশের বেড়া দেওয়া হয়েছে। এসবের বাধা উপেক্ষা করেও পোশাক কারখানার শ্রমিকদের স্টেশনে প্রবেশ করতে দেখা গেছে।
জয়দেবপুর রেলওয়ে জংশনের স্টেশনমাস্টার আবুল খায়ের চৌধুরী বলেন, সাধারণ সময়েও জয়দেবপুর