পোশাক কারখানায় অপারেটরকে মারধর, সহকর্মীদের মহাসড়ক অবরোধ

গাজীপুরের শ্রীপুরে উৎপাদন ফ্লোরে অপারেটর মোশাররফ হোসেনকে সুপারভাইজার আল আমিন মারধর করেছেন। এর প্রতিবাদে এক্সিস নীটওয়্যারস লিমিটেডের শ্রমিকেরা দেড় ঘণ্টা ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন। পরে যৌথ বাহিনীর উপস্থিতিতে শ্রমিকদের দাবি পূরণে কর্তৃপক্ষের আশ্বাসে বিকাল সাড়ে ৩টার দিকে মহাসড়ক থেকে সরে যান তারা। 

এর আগে শনিবার (২২ মার্চ) দুপুর থেকে ওই কারখানার শ্রমিকেরা সহকর্মীকে মারধরের প্রতিবাদে সুপারভাইজার আল আমিনকে চাকরিচ্যুতিসহ বিভিন্ন দাবিতে কারখানা অভ্যন্তরে শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ করেন। পরে দুপুর দেড়টা থেকে বিক্ষুব্ধ শ্রমিকেরা ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের উপজেলার নয়নপুর এলাকায় কারখানার সামনে মহাসড়কে অবস্থান নিয়ে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করতে থাকে।

শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জয়নাল আবেদীন মণ্ডল এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

আন্দোলনরত শ্রমিকরা জানান, এক্সিস নীটওয়্যারস লিমিটেড কারখানার অপারেটর মোশাররফ হোসেন কয়েকদিন যাবত অসুস্থ ছিলেন। শনিবার সুস্থ হয়ে অফিসে কাজে যোগ দেন। বেলা ১১টার দিকে প্রাকৃতিক ডাকে সাড়া দিতে কারখানার ওয়াশরুমে যান তিনি। ওয়াশরুম থেকে মেশিনে বসার আগেই সুপারভাইজার আল আমিন তাকে লেট হয়েছে কেন জিজ্ঞাসা করেন। একপর্যায়ে অপারেটর মোশাররফকে চর, থাপ্পড় ও লাথি মেরে মেশিনের ওপর ফেলে দেন সুপারভাইজার। এতে মোশাররফের শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাত পেয়ে আহত হয়ে উৎপাদন ফ্লোরে পড়ে গেলে সহকর্মীরা তাকে উদ্ধার করে স্থানীয় তানিয়া হাসপাতালে নিয়ে যায়। ওই হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক প্রাথমিক চিকিৎসার পর মোশারফকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠান। এ খবর ছড়িয়ে পড়লে শ্রমিকেরা অভিযুক্ত সুপারভাইজার আল আমিনের চাকরিচ্যুতিসহ বিভিন্ন দাবিতে কারখানা অভ্যন্তরে শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ করে। পরে দুপুর দেড়টার দিকে শ্রমিকেরা ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে অবস্থান নিয়ে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করতে থাকে।

এক্সিস নীটওয়্যারস লিমিটেড পোশাক কারখানার মানবসম্পদ (এইচআর) বিভাগের কর্মকর্তা হাসেম করিম বলেন, হঠাৎ করেই কারখানার উৎপাদন ফ্লোরে একটি অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটে গেছে। এরপর শ্রমিকদেরকে প্রশাসন বিভাগে ডেকে এনে ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের বিচারের প্রতিশ্রুতি দিলেও তারা কর্তৃপক্ষের নির্দেশ অমান্য করে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে অবস্থান নিয়ে অবরোধ সৃষ্টি করে। আহত অপারেটর মোশাররফ হোসেনকে কারখানার পক্ষ থেকে সব ধরনের চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়েছে।

ওসি জয়নাল আবেদীন মণ্ডল বলেন, খবর পেয়ে শ্রীপুর থানা পুলিশ, মাওনা হাইওয়ে থানা পুলিশ, শিল্প পুলিশ ও সেনাবাহিনী শ্রমিকদের দাবি পূরণে কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে। কর্তৃপক্ষের আশ্বাসে বিকাল সাড়ে ৩টার দিকে শ্রমিকরা বিক্ষোভ বন্ধ করে। এরপর মহাসড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।