ঈদযাত্রা
আতিফ রাসেল, ভূঞাপুর (টাঙ্গাইল)
প্রকাশ : ২২ মার্চ ২০২৫ ১০:৪৭ এএম
ঈদযাত্রা সামনে রেখে এলেঙ্গা থেকে যমুনা সেতু পর্যন্ত ৪ লেনের সড়কে দ্রুত কাজ শেষ করা হচ্ছে। প্রবা ফটো
প্রতিবছর ঈদযাত্রায় যাত্রীদের দুর্ভোগের এক নাম ঢাকা-টাঙ্গাইল-যমুনা সেতু মহাসড়ক। বিশেষ করে এলেঙ্গা থেকে যমুনা সেতু পর্যন্ত সাড়ে ১৩ কিলোমিটার দীর্ঘ দুই লেনের সড়কটি ছিল যানজটের প্রধান কারণ। যানবাহনের চাপ বাড়লেই সেখানে দীর্ঘ সময় আটকে থাকতে হতো ঘরমুখো মানুষদের। তবে এবার সেই পরিস্থিতির পরিবর্তন আসতে পারে। ঈদযাত্রাকে নির্বিঘ্ন করতে কর্তৃপক্ষ সিদ্ধান্ত নিয়েছে, এই পুরো সড়কে চার লেনে যানবাহন চালানোর ব্যবস্থা করা হবে।
এই উদ্যোগ বাস্তবায়ন হলে উত্তরবঙ্গগামী যাত্রীদের ঈদযাত্রা তুলনামূলকভাবে স্বস্তিদায়ক হতে পারে বলে আশা করা হচ্ছে। তবে শুধু রাস্তা সম্প্রসারণই যানজট নিরসনের একমাত্র সমাধান নয়। চালকদের শৃঙ্খলাবোধ, ফিটনেসবিহীন যানবাহনের নিয়ন্ত্রণ এবং সুষ্ঠু ট্রাফিক ব্যবস্থাপনার অভাব হলে যানজটের আশঙ্কা থেকেই যাবে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, ঢাকা-টাঙ্গাইল-যমুনা সেতু মহাসড়কের চন্দ্রা থেকে এলেঙ্গা পর্যন্ত চার লেন চালু হওয়ায় যানজট অনেকটাই কমেছে। কিন্তু এলেঙ্গা থেকে যমুনা সেতু পর্যন্ত সাড়ে ১৩ কিলোমিটার সড়ক এখনও দুই লেনের হওয়ায় সেই অংশটিতে যানজটের সৃষ্টি হয়। সাধারণত ঈদের সময় এই রুটে স্বাভাবিক ১২-১৫ হাজার যানবাহনের পরিবর্তে ৫০-৫৫ হাজার গাড়ি চলাচল করে, যা যানজট বাড়িয়ে দেয়। এবার এই পরিস্থিতি এড়াতে এলেঙ্গা থেকে যমুনা সেতু পর্যন্ত সড়কে চার লেন চালু রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কর্তৃপক্ষ। এ ছাড়া প্রতিবছরই ঈদ সামনে রেখে একশ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ী সড়কে ফিটনেসবিহীন ও লক্কড়ঝক্কড় গাড়ি নামিয়ে দেন। এসব গাড়ি মহাসড়কে বিকল হয়ে গেলে উভয় পাশের যান চলাচল বাধাগ্রস্ত হয় এবং তীব্র যানজট তৈরি হয়।
যানবাহন চলাচল নির্বিঘ্ন করতে যমুনা সেতুর টোল প্লাজার উভয় প্রান্তে মোটরসাইকেলের জন্য চারটি বিশেষ লেনসহ মোট ১৮টি লেন চালু থাকবে বলে জানিয়েছে সেতু কর্তৃপক্ষ। এতে যানজট নিরসনে সহায়ক ভূমিকা রাখবে বলে আশা করা হচ্ছে।
চালকরা মনে করছেন, সময়মতো চার লেন চালু করা না হলে এবং সড়কে শৃঙ্খলা না থাকলে যানজট এড়ানো সম্ভব হবে না।
হানিফ ও দরবেশ পরিবহনের চালক মুমিন ও মো. হাবিব বলেন, রাস্তা বড় হলেও যদি সবাই নিয়ম না মানে, তাহলে যানজট হবেই। চালকদের আরও দায়িত্বশীল হতে হবে।
অন্যদিকে, যাত্রীরা মনে করছেন, পুলিশি তৎপরতা বাড়ানো হলে এবং চালকরা নিয়ম মেনে চললে যানজট অনেকটাই কমে আসবে।
ঢাকা থেকে রংপুরগামী যাত্রী শাহাদত হোসেন বলেন, যদি পুলিশ সঠিকভাবে ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ করে এবং চালকরা নিয়ম মেনে চলে, তাহলে এবারের ঈদযাত্রা অনেকটাই স্বস্তিদায়ক হবে।
আব্দুল মোনেম ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের প্রকৌশলী সমরেশ মজুমদার বলেন, আমরা দ্রুত কাজ এগিয়ে নিচ্ছি, ঈদের আগেই চার লেন যান চলাচলের জন্য প্রস্তুত করা হবে।
এ বিষয়ে টাঙ্গাইলের পুলিশ সুপার মো. মিজানুর রহমান বলেন, ‘যানজটমুক্ত ঈদযাত্রা নিশ্চিত করতে আমাদের ৭৫০ জন পুলিশ সদস্য মহাসড়কে দায়িত্ব পালন করবে।’