কাশিয়ানী (গোপালগঞ্জ) প্রতিবেদক
প্রকাশ : ২১ মার্চ ২০২৫ ২৩:২৪ পিএম
গোপালগঞ্জের কাশিয়ানীতে খাদ্য গুদাম থেকে খাওয়ার অযোগ্য ও নিম্নমানের ভিজিএফ কর্মসূচির চাল সরবরাহ করার অভিযোগ উঠেছে।
বৃহস্পতিবার (২০ মার্চ) উপজেলার ভাটিয়াপাড়া খাদ্যগুদাম থেকে সরবরাহ করা এসব চাল সদর ইউনিয়নে বিভিন্ন ওয়ার্ডের মানুষের মাঝে বিতরণ করা হয়। এ ঘটনায় ইউপি চেয়ারম্যান, সদস্যসহ উপকারভোগীদের মাঝে চরম ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
জানা গেছে, ঈদুল ফিতর উপলক্ষে এবার উপজেলার ১৪ ইউনিয়নের ১৩ হাজার ১৭৫ হতদরিদ্র পরিবারের জন্য ১০ কেজি করে মোট ১৩১ মেট্রিক টন ভিজিএফের চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। ভাটিয়াপাড়া খাদ্য গুদাম থেকে উপজেলার ৭ ইউনিয়নে চাল সরবরাহ করা হয়। এ খাদ্য গুদাম থেকে সরবরাহ করা প্রায় চালই পুরোনো, পোকায় খাওয়া ও দুর্গন্ধযুক্ত। নিম্নমানের চাল পেয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেন উপকারভোগীরা। খাওয়ার অযোগ্য চাল উত্তোলন করে তা বিক্রি করে দিয়েছেন অনেকে।
বৃহস্পতিবার সকালে সদর ইউনিয়নের ভাটিয়াপাড়া ক্লাব মাঠে গিয়ে দেখা যায়, ঈদুল ফিতর উপলক্ষে ওই ওয়ার্ডের ১৪৪ জন ভিজিএফ কার্ডধারীর মাঝে ১০ কেজি করে ভিজিএফ চাল বিতরণ করা হচ্ছে। ভাটিয়াপাড়া খাদ্য গুদাম থেকে সরবরাহ করা এ চাল অনেক পুরোনো, পোকায় খাওয়া, দুর্গন্ধযুক্ত।
ভিজিএফ কার্ডধারী নার্গিস বেগম ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘আমাগে যে চাইল দ্যাছে পুয়ে খায়া। অনেক গোন্ধ। ভাত রাইন্দে খাওয়া যায় না। মানুষরে কেউ এই চাইল খাতি দ্যায়। চাইল বাড়ি আইন্যে আস-মুরগিরে খায়াচ্ছি।’
অভিযোগ রয়েছে, কাবিখা-কাবিটাসহ বিভিন্ন সরকারি কর্মসূচির ডিও (ডেলিভারি অর্ডার) যেসব ব্যবসায়ী কেনেন, তারা খাদ্যগুদাম কর্মকর্তা ও সরদারদের টনপ্রতি উৎকোচ দিয়ে ভালো মানের চালগুলো নিয়ে বাজারে বিক্রি করেন। আর নিম্নমানের খাওয়ার অযোগ্য চালগুলো দরিদ্র মানুষের জন্য বরাদ্দ বিভিন্ন কর্মসূচিতে সরবরাহ করা হয়ে থাকে।
কাশিয়ানী সদর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মোহাম্মাদ আলী খোকন বলেন, ‘খাদ্য গুদাম থেকে খুবই নিম্নমানের চাল সরবরাহ করা হয়েছে। চালগুলো মানুষের খাওয়ার অনুপযোগী। বিষয়টি ইউএনও স্যার নিজেই দেখেছেন। ভবিষ্যতে এ ধরনের চাল সরবরাহ না করার জন্য খাদ্যগুদাম কর্মকর্তাকে সতর্ক করেছেন ইউএনও স্যার।’
৮ নম্বর ওয়ার্ড ইউপি সদস্য জাকির হোসেন বলেন, ‘ভাটিয়াপাড়া খাদ্য গুদাম থেকে খুবই নিম্নমানের চাল সরবরাহ করা হয়েছে। পোকায় খাওয়া, দুর্গন্ধযুক্ত চাল। এ চাল মানুষ খেতে পারবে না। বাড়িতে নিয়ে হাঁস-মুরগিকে খাওয়াতে হবে। বিষয়টি খুবই দুঃখজনক।’
খাদ্য গুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসিএলএসডি) মিজানুর রহমান মৃধা নিম্নমানের চাল সরবরাহের কথা অস্বীকার করে বলেন, ‘ভালো-মন্দ বুঝি না। গুদামে যে চাল ছিল, সেটাই আমরা সরবরাহ করেছি।’
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ফারজানা জান্নাত ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, ‘খাদ্য গুদাম কর্মকর্তাকে সতর্ক করা হয়েছে। পরবর্তীতে এ ধরনের ঘটনা যেন না ঘটে।’