মিঠাপুকুর (রংপুর) প্রতিবেদক
প্রকাশ : ২১ মার্চ ২০২৫ ২৩:০২ পিএম
কোলাজ, প্রবা
ঢাকার গুলশানে দুর্বৃত্তদের গুলিতে নিহত সুমনের গ্রামের বাড়ি মিঠাপুকুরের শালাইপুরে চলছে শোকের মাতম। শান্ত এবং ভদ্র ছেলে হিসেবে পরিচিত সুমনকে গুলি করে হত্যার খবর জানার পর থেকে প্রতিবেশীসহ স্বজনরা হতবাক হয়ে পড়েছেন। হত্যাকারীদের দ্রুত গ্রেপ্তার এবং শাস্তি নিশ্চিতের দাবি জানিয়েছেন নিহত সুমনের পরিবারসহ স্থানীয়রা।
শুক্রবার (২০ মার্চ) বিকালে সুমনের গ্রামের বাড়ি শালাইপুর ডোবারপাড়ায় গিয়ে দেখা যায়, নিহত সুমনের মা ঘরের বারান্দায় বসে ছেলের শোকে আহাজারি করছেন। একমাত্র বোনসহ প্রতিবেশীরা সুমনের মরদেহ ঢাকা থেকে কখন আসবে- তা নিয়ে উদ্বিগ্ন। ঢাকায় মরদেহের সঙ্গে থাকা স্বজনদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন তারা। সুমনের মা স্মৃতিচারণ করে বলছিলেন, আর কয়েকদিন পর সুমন বাড়িতে আসার কথা ছিল। গত বুধবার ফোন দিয়ে সুমন জানিয়েছিল, সে এবার ঈদে গ্রামের বাড়িতে আসবে। এ সময় তিনি আহাজারী করে বলেন, আমার বাবা ঠিকই আসতেছে, তবে এবার লাশ হয়ে। সুমনকে ইন্টারনেট ব্যবসার জেরে ৬/৭ টি মামলা দিয়ে হয়রানি করার কথাও বলেন তিনি।
প্রতিবেশী রহিম মিয়া জানান, সুমনের বাবার নাম মাহফুজার রহমান। সুমন দুই ভাই এক বোনের মধ্যে সবার বড়। সুমনের নানার বাড়ি ঢাকাতে হওয়ায় সুমন ছোট থেকে নানাবাড়িতে থাকতো এবং সে ঢাকাতে বিয়ে করে সেখানেই থাকে। ইয়াস (১০) এবং সুমাইয়া (৭) নামে সুমনের এক ছেলে এবং এক মেয়ে রয়েছে। সুমন গুলশান এলাকায় ইন্টারনেট ব্যবসা করে।
তিনি জানান, সরকার পতনের পর সুমনের ব্যবসায়িক পার্টনারদের সঙ্গে বিরোধ চলে আসছিল বলে শুনেছি। সম্ভবত সে কারণে তাকে হত্যা করা হয়েছে।
আতিয়ার রহমান নামে একজন জানান, সুমন ঢাকাতে থাকলেও ঈদ এবং বিভিন্ন সময়ে বাড়িতে এসে পরিবারের সঙ্গে সময় দিতেন। যে কয়েকদিন গ্রামের বাড়িতে থাকেন, সবার সঙ্গে খুব ভালো ব্যবহার করতেন। নিয়মিত নামাজ পড়েন। এমন একটি ছেলেকে কেউ হত্যা করতে পারে! আমি জানার পর অবাক হয়েছি।
গুলশান থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মারুফ আহমেদ জানান, ময়নাতদন্ত শেষে নিহতের মরদেহ তার স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এ ঘটনায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। জড়িতদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
গত বৃহস্পতিবার (১৯ মার্চ) রাত আনুমানিক ৯টার দিকে হাতিরঝিল সংলগ্ন পুলিশ প্লাজার সামনে সুমনকে দুর্বৃত্তরা এলোপাতাড়ি গুলি করে। আহত অবস্থায় উদ্ধার করে স্থানীয়রা তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল নিয়ে গেলে চিকিৎসক সুমনকে মৃত ঘোষণা করেন।