× ই-পেপার প্রচ্ছদ সর্বশেষ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি শিক্ষা ধর্ম ফিচার ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

দীঘলকান্দি রেল সেতু

৯ মাসের কাজ চার বছরেও শেষ হয়নি

মহসিন রেজা রুমেল, দেওয়ানগঞ্জ (জামালপুর)

প্রকাশ : ২১ মার্চ ২০২৫ ২০:৫১ পিএম

প্রবা ফটো

প্রবা ফটো

জামালপুরের দেওয়ানগঞ্জে চার বছরেও শেষ হয়নি দেওয়ানগঞ্জ-মোশাররফগঞ্জ স্টেশনের মধ্যবর্তী দীঘলকান্দি এলাকার ৩১ নম্বর রেল সেতুর নির্মাণ কাজ। ৬০ ফিটের এ সেতুর কাজ নয় মাসে শেষ করার কথা থাকলেও দুই দফায় সময় বাড়ানো হয়েছে। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের গাফিলতির কারণে নির্ধারিত সময়ে সেতুর কাজ শেষ হয়নি বলে অভেযোগ। এতে চরম ভোগান্তি পোহাচ্ছেন দেওয়ানগঞ্জ-ঢাকা রুটে যাতায়াতকারী হাজার হাজার রেলযাত্রীর। 

রেলওয়ে সূত্রে জানা গেছে, দেওয়ানগঞ্জ-ঢাকা রেলপথের দীঘলকান্দি ৩১ নম্বর রেল সেতুটি ২০২০ সালের বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়। সেতুটি পুনর্নির্মাণের জন্য সে বছরই রেলওয়ে পূর্বাঞ্চল প্রধান প্রকৌশলীর কার্যালয় দরপত্র আহ্বান করে। এ কাজের ব্যয় ধরা হয় দুই কোটি ২৭ লাখ। প্রয়োজনীয় প্রক্রিয়া শেষে ঢাকার এসএস ইঞ্জিনিয়ারিং ট্রেড সেন্টার নামে একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে কার্যাদেশ দেওয়া হয়। ২০২১ সালের শুরুতে কাজ শুরু করে সে বছরের শেষের দিকে কাজ শেষ করার কথা ছিল। কিন্তু ঠিকাদারের গাফিলতি ও দায়সারা ভাবের কারণে চার বছরেও শেষ হয়নি ৯ মাসের কাজ। 

সরেজমিনে দেখা গেছে, সেতু নির্মাণ কাজে কোনো শ্রমিক নেই। ভাঙা সেতুতে শুধু ষাট ফিট দূরত্বে দুটি পিলার উঠেছে। ব্রিজের লাইনে স্লিপারে কাঠের বিটের পাত লাগানো হয়েছে। সেটাও নড়বড়ে। আন্তঃনগর তিস্তা ও কমিউটার ট্রেন চলাচলের সময় ব্রিজ জাম্পিং লক্ষ করা গেছে। এখনও দুই পিলারের ওপর স্টিলের গার্ডার বসানো, ওয়াল ক্যাপ, দুই পাশের ওয়াল, দুই সাইডের ব্লক, মাটিকাটা, ঢালাইয়ের কাজসহ অনেক কাজ বাকি রয়েছে। 

এদিকে গুরুত্বপূর্ণ এ রেল সেতুর কাজ দীর্ঘদিনেও শেষ না হওয়ায় ভোগান্তিসহ দুর্ঘটনার আশঙ্কায় রয়েছে হাজার হাজার যাত্রী। দেওয়ানগঞ্জ রেলওয়ে স্টেশন সূত্রে জানা গেছে, প্রারম্ভিক এ স্টেশন থেকে গন্তব্যস্থল ঢাকায় আন্তঃনগর তিস্তা এক্সপ্রেস, ব্রহ্মপুত্র এক্সপ্রেস, ভাওয়াল এক্সপ্রেস, কমিউটার মেইল লোকালসহ সাত জোড়া ট্রেন চলাচল করে। যাওয়া-আসার সময় প্রত্যেকবার ট্রেনগুলো ওই ভাঙা ব্রিজে দাঁড়িয়ে দেখাশোনার কাজে নিয়োজিত রেলকর্মীর অনুমতিপত্র নিয়ে যেতে হয়। 

দীর্ঘদিনেও সেতুর কাজ শেষ না হওয়ায় আক্ষেপ প্রকাশ করেন পৌর শহরের কালিকাপুর এলাকার বাসিন্দা মাজম মাহমুদ। তিনি বলেন, দীর্ঘদিন ধরে ভাঙা সেতুর আগে ট্রেন দাঁড়ায়। এতে যেমন যাত্রার সময় বেশি লাগছে, তেমনি ঝুঁকিপূর্ণ সেতু পার হওয়ার ভয়ও থাকছে। চার বছর পেরিয়ে গেলেও কেন সেতুর কাজ আদৌ শেষ হয়নি তা বোধগম্য নয়। 

আহসান হাবিব নামে এক রেলযাত্রী বলেন, ভাঙা সেতুতে ট্রেন উঠলে ট্রেনের বগিগুলো জাম্পিং করে, হেলেদুলে চলে। এ সময় প্রচণ্ড ভয় করে। দ্রুত এ সেতু মেরামতের দাবি জানাই। 

স্বাগতম দাস নামে আরেকজন বলেন, ব্রহ্মপুত্র এক্সপ্রেস ট্রেনটি প্রায় দিনই গভীর রাতে দেওয়ানগঞ্জ স্টেশন এসে পৌঁছে। শেষ গন্তব্যস্থল হওয়ায় সে সময় ট্রেনে যাত্রী কম থাকে। স্টেশনের অদূরে ভাঙা সেতুর কাছে ট্রেন একেবারে থেমে যায়। তখন ভয়ে গা ছমছম করে। ইতঃপূর্বে ওই জায়গায় ছিনতাইসহ ট্রেন যাত্রীদের মালামাল নিয়ে যাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এভাবে চলতে থাকলে ভবিষ্যতে আরও বড় কোনো দুর্ঘটনার সম্ভাবনা রয়েছে।

সেতু সংলগ্ন দীঘলকান্দী এলাকার বাসিন্দা সোহাগ গাজী বলেন, এক মাস কাজ চললে তিন মাস কাজ বন্ধ থাকে। এভাবেই খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে চার বছর ধরে কাজ চলছে। তবে গত ছয়-সাত মাস থেকে কাজ একেবারে বন্ধ রয়েছে। ঠিকাদার পক্ষের কিংবা রেলওয়ে পক্ষের কাউকেই এই সময়ে দেখা যায়নি।

সেতুর ঠিকাদার মো. সোহাগ জানান, সেতুতে স্থাপনের জন্য স্টিলের গাডার সরবরাহ করার কথা রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের। তারা গার্ডার সরবরাহ করতে বিলম্ব করায় কাজ শেষ করতে সময় লাগছে।

রেলওয়ের ঢাকা বিভাগীয় প্রকৌশলী সিরাজ জিন্নাত বলেন, সেতুটির কাজ সম্পন্ন করতে ষাট ফিট গার্ডার প্রয়োজন, যেটা দেশের অন্য প্রান্ত থেকে আনা সম্ভব হচ্ছে না। গার্ডারটি ষাট ফিট পিলারের ওপর স্থাপন করে রেলপাত বসাতে হবে। গার্ডার স্থাপন করার জন্য ঈদের আগেই দরপত্র আহ্বান করা হবে। আশা করছি, এ বছর জুনের মধ্যেই গার্ডার স্থাপন করে সেতুটি সচল করা যাবে।

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক : মোরছালীন বাবলা

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা