পঞ্চগড় প্রতিবেদক
প্রকাশ : ১৮ মার্চ ২০২৫ ২০:৪১ পিএম
মাদ্রাসাশিক্ষক রেজওয়ান পারভেজ। ছবি : সংগৃহীত
পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জে মাদ্রাসাশিক্ষার্থীকে ঘুম থেকে ডেকে নিয়ে বলাৎকারের অভিযোগ উঠেছে এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় ধর্ষণ মামলায় অভিযুক্ত মাদ্রাসাশিক্ষককে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
রবিবার (১৬ মার্চ) উপজেলার চিলাহাটি ইউনিয়নের টোকরাভাষা মোশাররফ নগর এলাকার আল জামিয়াতুল ইসলামিয়া মারকাজুল উলুম মাদ্রাসায় (লিল্লাহ বোডিং ও এতিমখানা) এ বলাৎকারের ঘটনা ঘটে।
অভিযুক্ত মাদ্রাসাশিক্ষক হলেন- রেজওয়ান পারভেজ। তিনি ওই মাদ্রাসার আবাসিক শিক্ষক ছিলেন। তার বাড়ি জেলার বোদা উপজেলার বড়শশী ইউনিয়নের বগদুলঝুলা সর্দারপাড়া এলাকায়।
সোমবার (১৭ মার্চ) রাতে স্থানীয়রা বিষয়টি জানতে পেরে শিক্ষক পারভেজকে আটক করে দেবীগঞ্জ থানা পুলিশকে খবর দেওয়া হয়। পরে রাতেই তাকে আটক করে থানায় নিয়ে যায় পুলিশ। পরে মঙ্গলবার (১৮ মার্চ) ভোরে বলাৎকারের শিকার মাদ্রাসাশিক্ষার্থীর বাবা বাদী হয়ে থানায় একটি ধর্ষণ মামলা দায়ের করেন। পরে ওই মামলায় অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
এদিকে ওই ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য তাকে পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, গত ১৬ মার্চ রাতে ওই শিক্ষার্থী মাদ্রাসার কক্ষে ঘুমিয়ে পড়ে। একপর্যায়ে মাদ্রাসার আবাসিক শিক্ষক রেজওয়ান পারভেজ তাকে জরুরি প্রয়োজনে নিজ কক্ষে ডেকে নিয়ে যায়। এরপর ভয়ভীতি ও হুমকি দিয়ে জোরপূর্বক মুখ চেপে তাকে বলাৎকার করে। পরে ওই শিক্ষার্থীকে কোরআন শরীফের উপর হাত দিয়ে কাউকে না জানাতে শপথ করান ওই শিক্ষক। ১৭ মার্চ রাতে মাদ্রাসার মসজিদের তারাবির নামাজের পর এক প্রতিবেশীকে দেখতে পেয়ে সব ঘটনা খুলে বলে মাদ্রাসা ছাত্রটি। পরে ঘটনাটি মাদ্রাসাশিক্ষার্থীর বাবাকে জানানো হয়।
এদিকে ঘটনাটি এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে স্থানীয়রা ক্ষিপ্ত হয়ে পড়ে। পরে ওই শিক্ষার্থীর বাবা মাদ্রাসায় উপস্থিত হলে স্থানীয়রা পুলিশকে খবর দেয়। এরপর ঘটনাস্থলে গিয়ে ওই শিক্ষককে গ্রেপ্তার করা হয়।
মাদ্রাসার মুহতামিম নুর নবী বলেন, রাতে মাদ্রাসায় স্থানীয়দের অবস্থান দেখে বিষয়টি জানার চেষ্টা করি। তারা আমাদেরকে কোনোকিছু না জানিয়ে সেখান থেকে বের করে দেয়। একপর্যায়ে লোকজন ঘটনাটি মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষকে অবগত না করেই অভিযোগ তুলেছে।
দেবীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সোয়েল রানা বলেন, খবর পেয়ে অভিযুক্ত শিক্ষককে গ্রেপ্তার করে রাতেই থানায় নেওয়া হয়। ধর্ষণের অভিযোগে মঙ্গলবার ভোরে থানায় ওই শিক্ষার্থীর বাবা বাদী হয়ে মামলা করেছেন। আসামিকে এ মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতের মাধ্যমে জেলা কারাগারে পাঠানো হয়েছে। ধর্ষণের শিকার মাদ্রাসাশিক্ষার্থীর শারীরিক মেডিকেল পরীক্ষার জন্য পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। একইসঙ্গে এ ঘটনায় আইনিপ্রক্রিয়া চলমান।