হাতের মেহেদী শুকানোর আগেই যৌতুকের বলি হলো গৃহবধূ ঝুমুর

ফেনী সদর উপজেলার কালীদহ ইউনিয়নের দক্ষিণ গোবিন্দপুর এলাকায় যৌতুক না পেয়ে মারজান আক্তার ঝুমুর নামের এক গৃহবধূ কে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। ৪ মার্চ ওই গৃহবধূ কে পেটানোর পর শনিবার চিকিৎসাধীন অবস্থায় চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তার মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় শনিবার রাতে পুলিশ এজহারভুক্ত আসামী ঝুমুরের শশুর সাহাব উদ্দিনকে গ্রেপ্তার করেছে। আজ রবিবার তাকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

মামলার এজহার ও গৃহবধূর পরিবার জানায়, পারিবারিকভাবে বিগত ৮ ডিসেম্বর দক্ষিণ গোবিন্দপুর এলাকার কামু ভূঞা বাড়ির প্রবাসী ছায়েদুর রহমান তৌহিদের সাথে ঝুমুরের বিবাহ হয়। স্বল্প পরিসরে বিয়ের পর ঝুমুরের স্বামীর পরিবারের আপত্তির কারণে বিগত ২৭ ফেব্রুয়ারী বড় আয়োজন করে ২ শতাধিক লোককে দাওয়াত করে খাওয়ানো হয়। ওই অনুষ্ঠানের পর ঝুমুরের স্বামী ও তার পরিবারের লোকজন ৩ লাখ টাকা ও ৫ ভরি স্বর্ণ যৌতুক দাবি করে। কিন্তু ঝুমুরের নির্মাণ শ্রমিক বাবার পক্ষে তা অসম্ভব হওয়ায় ঝুমুরের উপর নির্যাতনের খড়গ নেমে আসে। ৪ মার্চ সকালে এসব বিষয় নিয়ে তর্ক বিতর্কের এক পর্যায়ে স্বামী তৌহিদ, শশুর সাহাব উদ্দিন ও শাশুড়ি বিবি হাজেরা একত্রিত হয়ে ঝুমুরকে পিটিয়ে গুরুতর জখম করে। অবস্থা বেগতিক দেখে স্বামী ও পরিবারের সদস্যরা তাকে প্রথমে ফেনী জেনারেল হাসপাতালে ও পরে তাকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে।

 ঝুমুরের মা ফরিদা আক্তার জানান, খবর পেয়ে আমার মেয়েকে দেখতে আমরা চট্টগ্রাম হাসপাতালে যাই। সেখানে মেয়ের মুখে নির্যাতনের বিস্তারিত জেনে ১২ মার্চ ফেনী মডেল থানায় মেয়ের জামাই তৌহিদ, শশুর সাহাব উদ্দিন ও শাশুড়ি হাজেরাকে আসামি করে আমার স্বামী আবদুল আলিম বাদী হয়ে মামলা করি। শনিবার সকালে আমার মেয়ে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায়। আমি আমার মেয়ে হত্যার বিচার চাই।

ফেনী মডেল থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ সামছুজ্জামান বলেন, যৌতুকের জন্য গৃহবধূকে মারধরের পর চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়েছে। ইতোমধ্যে গৃহবধূকে নির্যাতনের ঘটনায় তার শশুর সাহাব উদ্দিনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অন্য আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।