ভৈরব (কিশোরগঞ্জ) প্রতিবেদক
প্রকাশ : ১৬ মার্চ ২০২৫ ১৩:০০ পিএম
প্রতীকী ছবি
কিশোরগঞ্জের ভৈরবে টিকটকে আসক্ত এক কিশোরী ফাঁসিতে ঝুলে আত্মহত্যার অভিযোগ পাওয়া গেছে। মোবাইল ফোন টিপতে মায়ের বাধায় অভিমান করে সে এমন ঘটনা ঘটিয়েছে বলে পরিবারের দাবি।
শনিবার (১৫ মার্চ) বিকালে উপজেলার শিমুলকান্দি ইউনিয়নের কান্দিপাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে ওইদিন রাত ১১টায় মরদেহ উদ্ধার করে ভৈরব থানা পুলিশ।
নিহত কিশোরীর নাম মিনা বেগম। সে ওই এলাকার মেরাজ মিয়ার মেয়ে। পরিবারে চার বোনের মধ্যে সে তৃতীয়।
ভৈরব থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খন্দকার ফুয়াদ রুহানী এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
স্থানীয় ও পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, কিশোরী মিনা দীর্ঘদিন ধরে টিকটকে আসক্ত। ১৫ মার্চ রোজা সে রেখেছিল। এমনকি কোরআন শরিফও পড়ত সে। দুপুরে মায়ের সঙ্গে ঘরের কাজকর্ম নিয়ে তার বাগবিতণ্ডা হয়। বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে নিজবাড়িতে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে ফাঁসিতে ঝুলে আত্মহত্যার চেষ্টা করে। তার দাদু নামাজ পড়তে ঘরে গিয়ে দেখে সে ফাঁসিতে ঝুলে আছে। এ সময় পরিবারের সদস্যরা ফাঁস থেকে নামিয়ে তার মাথায় পানি দেয়। এরপরে বাড়ির পাশে একটি ফার্মেসিতে নিয়ে গেলে সেখানে ফার্মাসিস্ট জানায় মিনার মৃত্যু হয়েছে।
এ বিষয়ে নিহতের বড় বোন নুসরাত জাহান বলেন, আমার বোন অনেকদিন থেকেই টিকটকে আসক্ত ছিল। আমি বাধা দিলে টিকটক চালানো বন্ধ করে দিয়েছিল। আবারও সে মোবাইলে আসক্ত হয়ে যায়। দুপুরে মা মোবাইল রেখে ঘরের কাজকর্ম করতে বলে। এ সময় মায়ের সঙ্গে মিনার ঝগড়া হয়। পরে আমার চাচাতো ভাইও তাকে শাসন করে। এরপরে সে গোসল করে বাড়ির উঠানে হাঁটাহাঁটি করে। বিকালে ঘরে ঢুকে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে সে আত্মহত্যা করেছে। আমার বোন সারা দিন রোজা রেখেছিল। সকালে কোরআন শরিফ পড়েছে। আমরা ভেবেছিলাম, সে বিকালে আসরের নামাজ পড়তে ঘরে ঢুকেছিল। পরে আমার দাদু নামাজ পড়তে গিয়ে দেখে মিনা ফাঁসিতে ঝুলে আছে।
নিহতের বাবা মেরাজ মিয়া বলেন, টিকটকে বেশি আসক্তির কারণে এর আগেও আমার মেয়েকে মোবাইল দেওয়া বন্ধ করে দিয়েছিলাম। মাসখানেক আগেও সে একবার আত্মহত্যার চেষ্টা করেছিল। পরে তাকে আবারও মোবাইল দেওয়া হয়।
ওসি খন্দকার ফুয়াদ রুহানী বলেন, রবিবার সকালে মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য কিশোরগঞ্জ সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, সে ফাঁসিতে ঝুলে আত্মহত্যা করেছে।