নরসিংদী প্রতিবেদক
প্রকাশ : ১৫ মার্চ ২০২৫ ২৩:০১ পিএম
আপডেট : ১৫ মার্চ ২০২৫ ২৩:৩৭ পিএম
ছবি : সংগৃহীত
নরসিংদীতে পুলিশের অভিযানে উদ্ধার হওয়া ৯৬ কেজি মাদক (গাঁজা) ধ্বংস করার নির্দেশ দেন আদালত। সেই গাঁজা ধ্বংস না করে বিক্রি করার অভিযোগ উঠেছে নরসিংদী গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. কামরুজ্জামানের বিরুদ্ধে। তবে আদালতের নথিতে দেখা যায় জব্দকৃত ৯৬ কেজি মাদক ধ্বংস করা হয়েছে।
এদিকে বিষয়টি জানাজানির পর প্রাশাসনিক কারণ দেখিয়ে ওসি কামরুজ্জামান ও কোর্ট পুলিশের ওসি খন্দকার জাকির হোসেনকে দায়িত্ব থেকে সরিয়ে ঢাকার রেঞ্জ অফিসে সংযুক্ত করা হয়েছে।
শনিবার (১৫ মার্চ) পুলিশের ঢাকা রেঞ্জর ডিআই জি এ কে এম আওলাদ হোসেন স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপন থেকে বদলির বিষয়টি জানা গেছে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, চলতি বছরের ৪ ফেব্রুয়ারি শিবপুর উপজেলার সৃষ্টিঘর আটাশিয়া এলাকায় মনির হোসেনের লটকন বাগান থেকে পরিতক্ত্য অবস্থায় ৯৬ কেজি গাঁজা উদ্ধার করেন তৎকালীন ডিবি পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) আব্দুল গাফফার। তিনি গাঁজাগুলো নরসিংদী ডিবি অফিসে নিয়ে অসেন এবং ওসি কামরুজ্জামানকে অবহিত করেন। জব্দ তালিকায় ৯৬ কেজি গাঁজার বাজারমূল্য দেখানো হয়েছে ১৯ লক্ষ ২০ হাজার টাকা।
ওই সময় আদালতের বিচারক জব্দকৃত ৯৬ কেজি গাঁজা (মাদক) ধ্বংস করে বা পুড়িয়ে ফেলার নির্দেশ প্রদান করেন। কিন্তু ওসি কামরুজ্জামান নরসিংদী কোর্ট পুলিশের ওসি খন্দকার জাকির হোসেনকে ‘ম্যানেজ করে’ গাঁজাগুলো মাধবদী আলগী এলাকার মাদক কারবারি মায়া প্রধানের কাছে বিক্রি করেন। প্রতিকেজি গাঁজা ১৫ হাজার টাকা কেজি দরে ১৪ লক্ষ ৪০ হাজার টাকায় বিক্রি কর করা হয়। পরে সেই টাকা ডিবির ওসি ও কোর্টের ওসি ভাগ করে নেন। বিষয়টি জানাজানি হলে নরসিংদী পুলিশ সুপারের নিকট মৌখিক অভিযোগ করেন দায়িত্বরত এক পুলিশ সদস্য।
পুলিশের একটি সূত্র থেকে জানা যায়, নরসিংদী ডিবি পুলিশের ওসি উদ্ধার হওয়া মাদক বিক্রি করে দেওয়ার স্বভাব পুরানো। এর আগেও ১৮০০ টাকা প্রতি পিস হিসেবে প্রায় ৬০০ বোতল ফেনসিডিল ১০ লক্ষ ৮০ হাজার টাকা বিক্রির অভিযোগও রয়েছে তার বিরুদ্ধে।
এসব বিষয়ে অভিযোগ অস্বীকার করে ওসি কামরুজ্জামান বলেন, ‘আমাদের অফিসার অলামত জব্দ করে তলিকা কোর্টে পাঠিয়েছে। কোর্ট সেটা রিসিভ করেছে এবং ধ্বংস করেছে। এই অর্ডারও আমার অফিসে আছে। এখন কোর্ট ধ্বংস করেছে, না করে নাই সেটা কোর্টের ব্যাপার। এখানে আমার কি দায় আছে! এখানে আমার কোনো জবাব নেই। তাছাড়া এই আলামত ধ্বংস করার দায়িত্ব সংশ্লিষ্ট ম্যাজিষ্ট্রেটের।’
গাঁজা বিক্রির বিষয়ে তিনি বলেন, ‘এটা ভিত্তিহীন একটি অভিযোগ। এখানে আমি ষড়যন্ত্রের শিকার। কি ষড়যন্ত্রের শিকার তা যাচাই করে দেখেন।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমি বিক্রি করলে কোর্ট কি ধ্বংস করল?’
নরসিংদী পুলিশ সুপার মো. আব্দুল হান্নান বলেন, ‘ডিবির ওসি বিরুদ্ধে উদ্ধার হওয়া মাদক ধ্বংস না করে বিক্রির একটি মৌখিক অভিযোগ পাওয়া গেছে। বিষয়টি নিয়ে অফিসিয়ালি তদন্ত চলছে। তাই কোনো মন্তব্য করতে চাই না। প্রথমে সত্য মিথ্যা যাচাই হোক। তদন্ত শেষে এর বিস্তারিত বলা যাবে।’