নরসিংদী প্রতিবেদক
প্রকাশ : ১৫ মার্চ ২০২৫ ২২:৫২ পিএম
নরসিংদীতে পুলিশের উদ্ধার করা ৯৬ কেজি গাঁজা প্রায় ১৫ লাখ টাকায় বেচে টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে নরসিংদী গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশে ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামরুজ্জামানের বিরুদ্ধে। জানাজানি হওয়ায় ওসি কামরুজ্জামান ও কোর্ট পুলিশের ওসি খন্দকার জাকির হোসেনকে দায়িত্ব থেকে সরিয়ে ঢাকার রেঞ্জে সংযুক্ত করা হয়েছে।
শনিবার (১৫ মার্চ) পুলিশের ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি একেএম আওলাদ হোসেনের সই করা প্রজ্ঞাপেনে তাদেরকে ঢাকা রেঞ্জ অফিসে সংযুক্তির কথা জানানো হয়েছে। জানা যায়, গত ৪ ফেব্রুয়ারি শিবপুর উপজেলার সৃষ্টিঘর আটাশিয়া এলাকায় মনির হোসেনের লটকন বাগান থেকে ৯৬ কেজি গাঁজা উদ্ধার করেন তৎকালীন ডিবি পুলিশের উপ-পরিদর্শক আব্দুল গাফফার। তিনি গাঁজা উদ্ধার করে নরসিংদী ডিবি অফিসে নিয়ে আসেন এবং ওসি কামরুজ্জামানকে বিষয়টি জানান। জব্দ তালিকায় ৯৬ কেজি গাঁজার বাজার মূল্য দেখান ১৯ লাখ ২০ হাজার টাকা। আইন অনুসারে উদ্ধার হওয়া মালামাল আদালতে তুলে ধরা হয়। আদালতের বিচারক উদ্ধার হওয়া গাঁজা (মাদক) ধ্বংস করে ফেলার নির্দেশ দেন। কিন্তু ওসি কামরুজ্জামান, ওসি খন্দকার জাকির হোসেনকে ম্যানেজ করে ওই গাঁজা মাধবদী আলগী এলাকার মাদক ব্যবসায়ী মায়া প্রধানের কাছে বেচে দেন।
প্রতি কেজি গাঁজার বাজার দাম ২৫ হাজার টাকা হলেও মাদক ব্যবসায়ীর কাছে ১৫ হাজার টাকা কেজি ধরে ১৪ লাখ ৪০ হাজার টাকায় বিক্রি করেন বলে কামরুজ্জামানের বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠে। পরে সেই টাকা কামরুজ্জামান ও খন্দকার জাকির হোসেন ভাগ-বণ্টন করে নেন।
এটি জানাজানি হলে নরসিংদী পুলিশ সুপারের কাছে মৌখিক অভিযোগ করেন দায়িত্বরত পুলিশ সদস্য। তবে আদালতের নথিতে দেখা যায় উদ্ধার হওয়া ৯৬ কেজি গাঁজা ধ্বংস করা হয়েছে।
এসব বিষয়ে ওসি কামরুজ্জামান বলেন, ‘আমাদের অফিসার অলামত জব্দ করেছেন এবং তা জব্দ তালিকা করে কোর্টে পাঠিয়েছেন। কোর্ট রিসিভ করেছেন। কোর্ট ধ্বংস করেছেন। এই অর্ডারও আমার অফিসে আছে। এখন কোর্ট ধ্বংস করেছেন না করেননি, সেটা তো কোর্টের ব্যাপার। এখানে আমার কী লায়াবিলিটি আছে? এখানে আমার তো কোনো জবাব নেই। তা ছাড়া এই আলামত ধ্বংস করার দায়িত্ব সংশ্লিষ্ট ম্যাজিস্ট্রেটের।’
৯৬ কেজি গাঁজা বেচার ব্যাপারে তিনি বলেন, ‘এটা ভিত্তিহীন অভিযোগ। এখানে আমি ষড়যন্ত্রের শিকার।’ ওসি খন্দকার জাকির হোসেন বলেন, ‘ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে মালামাল ধ্বংস করা হয়েছে। মালামাল আমার হাতে আসেওনি, আমার মাধ্যমে যায়ওনি। শুধু দায়িত্বে ছিলাম বলে আমি বলির পাঠা হলাম। আমি কোনো অপরাধ করিনি।
নরসিংদী পুলিশ সুপার আব্দুল হান্নান বলেন, ‘ওসি ডিবির বিরুদ্ধে উদ্ধার হওয়া গাঁজা ধ্বংস না করে বিক্রির একটি মৌখিক অভিযোগ পাওয়া গেছে। বিষয়টি নিয়ে তদন্ত চলছে। তাই কোনো মন্তব্য করতে চাই না।’