নওগাঁ প্রতিবেদক
প্রকাশ : ১৫ মার্চ ২০২৫ ২০:৫৬ পিএম
প্রবা ফটো
বাংলাদেশের প্রত্নতাত্ত্বিক ঐতিহ্য সংরক্ষণ ও সাংস্কৃতিক সহযোগিতা জোরদারের লক্ষ্যে নওগাঁর পাহাড়পুর বৌদ্ধবিহার ও জাদুঘর এবং কুসুম্বা মসজিদ পরিদর্শন করেছেন চীনের সংস্কৃতি ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের উপমন্ত্রী এবং জাতীয় সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য প্রশাসনের প্রধান এইচ ই লি কুউনসহ ছয় সদস্যের প্রতিনিধিদল।
শনিবার (১৫ মার্চ) সকালে বিশ্ব ঐতিহ্যের তালিকাভুক্ত নওগাঁর বদলগাছীতে অবস্থিত পাহাড়পুর বৌদ্ধবিহার ও জাদুঘর এবং দুপুরে জেলার মান্দায় অবস্থিত কুসুম্বা মসজিদ পরিদর্শন করেন তারা।
চীনা প্রতিনিধিরা এ সফরকে দুই দেশের সাংস্কৃতিক সম্পর্ক আরও সুদৃঢ় করার গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে দেখছেন।
এ সময় নওগাঁ জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আব্দুল আউয়াল, প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের রাজশাহী ও রংপুর অঞ্চলের আঞ্চলিক পরিচালক মো. সাইফুর রহমান প্রতিনিধি দলকে স্বগত জানান।
পরিদর্শনকালে চীনা প্রতিনিধি দল বাংলাদেশের প্রত্নতাত্ত্বিক গবেষণা ও ঐতিহ্য সংরক্ষণে চীন-বাংলাদেশ যৌথ উদ্যোগের গুরুত্ব তুলে ধরেন। তারা আশা প্রকাশ করেন, ভবিষ্যতে প্রত্নতাত্ত্বিক সংরক্ষণ ও গবেষণার ক্ষেত্রে দুই দেশের মধ্যে সহযোগিতা আরও বাড়বে।
এ সময় চীনা উপমন্ত্রী লি কুউন বলেন, ‘বাংলাদেশের প্রত্নতাত্ত্বিক ঐতিহ্য অত্যন্ত সমৃদ্ধ। চীন এবং বাংলাদেশ যৌথভাবে গবেষণা ও সংরক্ষণের মাধ্যমে এই ঐতিহ্যকে বিশ্বদরবারে আরও বিশদভাবে তুলে ধরতে পারে।’
চীনা প্রতিনিধিরা পাহাড়পুর বৌদ্ধবিহারের ঐতিহাসিক গুরুত্ব এবং সংরক্ষণ কার্যক্রম পর্যালোচনা করেন। তারা বাংলাদেশ সরকারের প্রত্নতাত্ত্বিক সংরক্ষণ প্রচেষ্টার প্রশংসা করেন এবং ভবিষ্যতে কারিগরি ও গবেষণাগত সহায়তা বৃদ্ধির আগ্রহ প্রকাশ করেন।
এ বিষয়ে প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের আঞ্চলিক পরিচালক মো. সাইফুর রহমান বলেন, ‘বাংলাদেশের প্রত্নতাত্ত্বিক স্থাপনা সংরক্ষণে চীনের সহযোগিতা নতুন দিগন্ত উন্মোচন করবে। পাহাড়পুর বৌদ্ধবিহারের সংরক্ষণ ও গবেষণার ক্ষেত্রে পারস্পরিক সহযোগিতা বৃদ্ধির বিষয়ে আলোচনা হয়েছে।’
এই সফরের মাধ্যমে বাংলাদেশ ও চীনের মধ্যে সাংস্কৃতিক ও প্রত্নতাত্ত্বিক গবেষণার ক্ষেত্রে একটি নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হতে পারে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
এ প্রসঙ্গে নওগাঁ জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আব্দুল আউয়াল বলেন, ‘সাংস্কৃতিক বিনিময় ও ঐতিহ্য সংরক্ষণে আন্তর্জাতিক সহযোগিতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। চীনা প্রতিনিধি দলের এই সফর আমাদের প্রত্নতাত্ত্বিক উন্নয়নে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে।’
চীনা প্রতিনিধি দলের এ সফর বাংলাদেশের প্রত্নতত্ত্ব গবেষণা, ঐতিহ্য সংরক্ষণ এবং সাংস্কৃতিক বিনিময়ে একটি মাইলফলক হয়ে থাকবে বলে সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন। বাংলাদেশ সরকার এবং চীন যৌথভাবে প্রত্নতাত্ত্বিক ঐতিহ্য সংরক্ষণে কাজ করলে ভবিষ্যতে ঐতিহ্য সংরক্ষণ ও পর্যটন খাতের নতুন সম্ভাবনা সৃষ্টি হবে।
এ সময় বদলগাছী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইসরাত জাহান ছনি, পাহাড়পুর জাদুঘরের কাস্টোডিয়ান মুহাম্মদ ফজলুল করিম আরজু এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।