লক্ষ্মীপুর প্রতিবেদক
প্রকাশ : ১৫ মার্চ ২০২৫ ২০:১৪ পিএম
আপডেট : ১৫ মার্চ ২০২৫ ২০:১৬ পিএম
লক্ষ্মীপুরে বেড়িবাঁধ সংস্কার কাজের ঠিকাদারের কাছ থেকে চাঁদা না পেয়ে ৬ শ্রমিককে পিটিয়ে আহত করার অভিযোগ উঠেছে যুবদল নেতা আনোয়ার সম্রাটের বিরুদ্ধে।
শনিবার (১৫ মার্চ) বেলা ১১টার দিকে সদর উপজেলার চররমনী মোহন ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডে এই ঘটনা ঘটে।
আহত শ্রমিকরা হলেন- কাসেম সর্দার, ইসলাম সর্দার, জাহের সর্দার ও ৩ জন ভেক্যু চালক।
অভিযুক্ত সম্রাট সদর চররমনী মোহন ইউনিয়ন যুবদলের সহ-সভাপতি ও স্থানীয় মনপুরা এলাকার বাসিন্দা।
শ্রমিকরা জানান, প্রথমে সম্রাটের পাঠানোর ২০-৩০ জন লোক এসে কাজে বাধা দেয়। এরপরও কাজ চলমান থাকায় সম্রাট এসে লাঠি দিয়ে এলোপাতাড়ি আমাদের পিটিয়ে আহত করে। তবে কত টাকা চাঁদা চেয়েছেন তা নিরাপত্তাজনিত কারণে জানাননি ঠিকাদার ও তার লোকজন।
শ্রমিক কাশেম সর্দার বলেন, ‘শুক্রবার ৩-৪ জন লোক এসে আমাদের কাজ বন্ধ করে দেয়। তারা কয়েকজন নেতার সঙ্গে কথা বলতে বলেছে। শনিবার সকালে কাজ শুরু করার পর লোকজন এসে কাজে বাঁধা দেয়। কাজ বন্ধ না করায় সম্রাট এসে লাঠি দিয়ে এলোপাতাড়ি আমাদেরকে পিটিয়ে আহত করে। তারা আমাদেরকে এমপি-মন্ত্রী দেখায়।’
ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সমন্বয়ক মামুনুর রশিদ বলেন, ‘বেড়িবাঁধ সংস্কার কাজে কয়েক দফা বাধাগ্রস্ত হয়েছি। আনোয়ার সম্রাট চাঁদা চেয়েছে। তা না দেওয়ায় কাজে বাধা দিয়ে আমার শ্রমিকদের মারধর করেছে। শুধু বলে টাকা দিতে, কত টাকা তাও বলেনি।’
আনোয়ার সম্রাট বলেন, ‘আমি ব্যবসা করি। আমি বেঁড়িবাধের কাজ বন্ধ করিনি। শ্রমিকদের মারধরের ঘটনায় আমি কিংবা আমার কোনো লোক জড়িত নয়। আমি ঘটনাস্থলে যাইনি।’
জেলা যুবদলের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক সৈয়দ রশিদুল হাসান লিংকন বলেন, ‘আনোয়ার সাবেক যুবদল নেতা ছিলেন। পরে আওয়ামী লীগে যোগ দেয়। তাকে আমরা দল থেকে বিতাড়িত করেছি। আওয়ামী লীগের কোনো দোসরের জায়গা আমাদের দলে নেই। বেঁড়িবাধের কাজ বন্ধসহ শ্রমিকদের মারধর করায় সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ নেওয়ার পরামর্শ রইল।’
লক্ষ্মীপুর সদর মডেল থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) ঝলক মোহন্ত বলেন, ‘ঘটনাটি আমার জানা নেই। আমি বাইরে আছি। থানায় গেলে জানতে পারব কেউ কোনো অভিযোগ দিয়েছে কি না।’
এ ব্যাপারে জানতে লক্ষ্মীপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী নাহিদ-উজ জামান খাঁনের মোবাইলফোনে কল করলেও তিনি রিসিভ করেননি।
জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্র জানায়, বাংলাদেশ সরকার ও বিশ্ব ব্যাংকের অর্থায়নে মজুচৌধুরীর হাটে ‘ক্লাইমেট স্মার্ট এগ্রিকালচার এন্ড ওয়াটার ম্যানেজমেন্ট প্রজেক্ট’ হাতে নেওয়া হয়। এতে ক্ষতিগ্রস্ত ১০.০৪৮ কিলোমিটার বাঁধ সংস্কারের পাশাপাশি ভাঙা অংশে একটি স্লুইস গেট নির্মাণ করা হবে। একইসঙ্গে বাঁধ এলাকার ২ কিলোমিটার অংশে ক্যাম্পের খাল পুনঃখনন করা হচ্ছে। বাঁধ সংস্কার ও খাল খননে ৫ কোটি ২১ লাখ টাকা ব্যয় ধরা হয়েছে। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স মোস্তফা এন্ড সন্স কাজটি করছে। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে বাঁধের উচ্চতা সাড়ে ৭ মিটার ও উপরিভাগের প্রস্থ ৬ মিটার হবে। এছাড়া প্রায় ২ কোটি টাকা ব্যয় হবে স্লুইসগেট নির্মাণে। চলতি বছরের জুনে কাজ শেষ হওয়ার কথা রয়েছে।