সঞ্জিত চক্রবর্তী, চাটমোহর (পাবনা)
প্রকাশ : ১৫ মার্চ ২০২৫ ১৩:২৩ পিএম
১০ গ্রামের ৪০ হাজার মানুষ করতোয়া নদীর ওপর নির্মিত বাঁশের সাঁকোতে পারাপার হচ্ছে। চাটমোহরের মির্জাপুর এলাকায়। প্রবা ফটো
একটি সংযোগ সেতুর অভাবে অন্তত ১০টি গ্রামের মানুষ চরম ভোগান্তির শিকার। স্বাধীনতার তেপ্পান্ন বছর পরেও তারা দেখলেন না সুখের মুখ। পাবনার চাটমোহর উপজেলার বহরমপুর-মির্জাপুর এলাকার করতোয়া নদীর ওপর একটি সেতু দেখতে চেয়েছিলেন স্থানীয়রা। সেতু হলে এ নদীর দুপাড়ের অন্তত দশটি গ্রামের মানুষকে ভোগান্তি পোহাতে হতো না।
বছরের প্রায় আট মাস নৌকায় এবং বাকি চার মাস বাঁশের সাঁকোতে পারাপার হতে হয় স্থানীয়দের বিশেষ করে শিক্ষার্থী, কৃষক ও অসুস্থ রোগীদের জন্য এ পরিস্থিতি চরম দুর্ভোগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। বহরমপুর ও বেলগাছি গ্রামের চারপাশেই নদী থাকায় অনেক বছর ধরে উন্নয়ন বঞ্চিত গ্রাম দুটি।
সরেজমিন স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, নদীর পশ্চিম পাড়ে বিন্যাবাড়ি, গৌড়নগর, করকোলা, বরদানগর, চিনাভাতকুর, বহরমপুরসহ আরও কয়েকটি গ্রামের মানুষ জীবনের ঝুঁকি নিয়ে শুকনো মৌসুমে বাঁশের সাঁকো আর বর্ষাকালে নৌকায় পারাপার হন।
খোঁজ-খবর নিয়ে জানা যায়, পূর্ব পাড়ের মির্জাপুরে রয়েছে নিমাইচড়া ইউনিয়ন পরিষদ, মির্জাপুর ডিগ্রি কলেজ, উচ্চ বিদ্যালয়, মাদ্রাসা, নিমাইচড়া ইউনিয়ন ভূমি অফিস, ব্যাংকসহ এলাকার বিখ্যাত মির্জাপুর হাট। এছাড়া আরও বেশ কিছু গ্রামের অবস্থান নদীর পূর্ব পাড়ে। বিভিন্ন প্রয়োজনে নদীর পশ্চিম পাড়ের মানুষকে পূর্বপাড়ে এবং পূর্ব পাড়ের মানুষকে পশ্চিম পাড়ে যাতায়াত করতে হয়। নদী পারাপারে দশ গ্রামের অন্তত চল্লিশ হাজার মানুষ সেতুর অভাবে বিড়ম্বনার শিকার হচ্ছেন।
গৌরনগর গ্রামের বাসিন্দা মাসুদ রানা বলেন, ‘আমি একটি দুধের মিলে চাকরি করি। বর্ষাকালে খেয়া নৌকার জন্য অপেক্ষা করতে হয়। নদীর পানি কমে গেলে বাঁশের সাঁকো দেওয়া হয়। এ সময় সাঁকোর ওপর দিয়ে নদী পাড় হতে হয় তাদের। মোটরবাইক নিয়ে নদী পারাপার খুবই ঝুঁকিপূর্ণ।’
বহরমপুর গ্রামের মজিবর রহমান বলেন, ‘বগালালী ও মরা করতোয়া নদীর ওপর বহরমপুর-মির্জাপুর ব্রিজ না হওয়ায় কয়েকটি গ্রামের হাজার মানুষকে প্রতিদিন কষ্ট করতে হচ্ছে। নিমাইচড়া ইউনিয়ন পরিষদ, ভূমি অফিস, মির্জাপুর ডিগ্রি কলেজ, মির্জাপুর হাটসহ ইউনিয়ন সদরে যাতায়াত করতে ব্রিজের অভাবে এলাকাবাসীকে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।’
অসুস্থ রোগী, সন্তান সম্ভবা মাকে দ্রুত হাসপাতালে নেওয়া সম্ভব হয় না। শিশু, বৃদ্ধরা ও বিড়ম্বনার বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে এলজিইডি চাটমোহরের প্রকৌশলী সুলতান মাহমুদ বলেন, ‘সেতু নির্মাণ প্রকল্পের আওতায় ঊর্ধ্বতন দপ্তরে আটটি সেতু নির্মাণের প্রস্তাবনা পাঠানো আছে। তার মধ্যে এ সেতুর প্রস্তাবনাও রয়েছে। এখনও সমীক্ষা, যাচাই-বাছাই হয়নি।’