× ই-পেপার প্রচ্ছদ সর্বশেষ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি শিক্ষা ধর্ম ফিচার ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

পুকুর ভরাটে অগ্নিঝুঁকিতে শহর

মোহন আখন্দ, বগুড়া

প্রকাশ : ১৫ মার্চ ২০২৫ ১৩:২০ পিএম

প্রবা গ্রাফিক্স

প্রবা গ্রাফিক্স

তিন যুগের ব্যবধানে বগুড়া শহরের শতাধিক পুকুর ভরাট হয়ে গেছে। শহরের পাশ দিয়ে বয়ে চলা করতোয়া নদীও মরে গেছে অনেক আগে। এসব কারণে শহর কিংবা আশপাশের এলাকায় যেকোনো অগ্নিকাণ্ড নিয়ন্ত্রণে ফায়ার সার্ভিসকে তাদের নিজস্ব মজুদ পানির ওপরই ভরসা করতে হয়। ফলে জেলা সদরের অগ্নি নির্বাপণ ব্যবস্থা প্রচণ্ড ঝুঁকিতে আছে। প্রতিবছরে আগুনে মানুষ নিঃস্ব হয়ে পড়ছে। কোটি কোটি টাকার সম্পদ পুড়ে ছাই হচ্ছে। ফায়ার সার্ভিসের হিসাব অনুযায়ী গত বছর ২০৫টি অগ্নিকাণ্ডে প্রায় ৯ কোটি টাকার সম্পদ ভস্ম হয়েছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ফায়ার সার্ভিসের পক্ষ থেকে প্রায় দেড় দশক আগে আগে ১০টি পানির জলাধার (রিজার্ভার) নির্মাণের সুপারিশ করা হয়। এটি নিয়ে আলোচনা হলেও বাস্তবে কোনো অগ্রগতি নেই। জলাধারগুলো কবে নির্মিত হবে কিংবা আদৌ হবে কি না, এ নিয়ে সংশ্লিষ্টরা কিছু বলতে পারছেন না। একজন কর্মকর্তারা বলেন, ‘বগুড়া শহরে কয়েকটি পুকুর আছে। শহরে আগুন নেভাতে ওইসব পুকুরের পানির ওপর তাদের নির্ভর করতে হয়। কিন্তু শুকনো মৌসুমে পুকুরগুলোর পানি কমে যায়। ফলে পর্যাপ্ত পানি সংগ্রহ করা সম্ভব হয় না। এ কারণে ফায়ার সার্ভিস কার্যালয়ের নিজস্ব জলাধারের পানি দিয়ে আগুন নেভানোর চেষ্টা করা হয়। এতে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সময় লেগে যায় বলে ক্ষয়ক্ষতিও বেড়ে যায়।’ 

সর্বশেষ উদাহরণ হিসেবে দেখা যাচ্ছে, ২০১৩ সালের ৯ ডিসেম্বর রাতে বগুড়া শহরের সবচেয়ে বড় পাইকারি আড়ত রাজাবাজারের ভয়াবহ আগুন লাগে। ওইদিন রাতে সেখানে ফায়ার সার্ভিসের দুটি গাড়ির পানি ফুরিয়ে গেলে আশপাশে কোথাও পানি না পাওয়া যায়নি। বাধ্য হয়ে পানির জন্য ছুটতে হয় ফায়ার সার্ভিস কার্যালয়ে। এই আসা-যাওয়ায় যে সময় চলে গেল, ফলে ওদিকে রাজাবাজারে আগুন ভয়ংকর রূপ নেওয়ার সুযোগ পেয়েছে। 

কর্মকর্তারা বলেন, ইতোমধ্যেই অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা যুগোপযোগী করতে ১০টি পানির রিজার্ভার নির্মাণের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। এতে মার্কেট ও বিপণিবিতান ছাড়াও বিভিন্ন ভবনের উপরিভাগে ন্যূনতম ১০০ বর্গফুট করে জলাধার নির্মাণের সুপারিশ করা হয়। যাতে শহরের কোনো স্থানে আগুন লাগলে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা দ্রুত জলাধার থেকে পানি নিয়ে আগুন নেভাতে পারে। 

সংশ্লিষ্টরা বলেছেন, একাধিক সভায় জলাধার নির্মাণের বিষয়টি উত্থাপন করা হয়েছে। কিন্তু কোনো অগ্রগতি হয়নি।

ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তাদের দেওয়া তথ্য অনুসন্ধানে দেখা গেছে, শহরের মার্কেটগুলোই বেশি ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। আর এগুলোর মধ্যে আবার অধিক ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে নিউমাকের্ট। এ ছাড়া সংলগ্ন চুড়িপট্টি, কাঁঠালতলা, শরিফ উদ্দিন সুপার মার্কেটও মারাত্মক ঝুঁকিতে রয়েছে। ওইসব এলাকায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা কঠিন হয়ে পড়ে। ফলে ব্যাপক সম্পদের ক্ষতি হয়। পাশাপাশি শহরে যেসব সুউচ্চ ভবন রয়েছে, সেগুলোও ঝুঁকিতে আছে। কারণ কোনো ভবনেই অগ্নিনির্বাপণের জন্য পানির জলাধার বানানো হয়নি। 

চলতি বছরের ২ ফেব্রুয়ারি বগুড়া শহরের জিরো পয়েন্ট সাতমাথা সংলগ্ন সপ্তপদী মার্কেটের পশ্চিমে ফলপট্টিতে আগুনে ১২টি দোকান পুড়ে যায়। এর আগে গত বছরের ৭ এপ্রিল বগুড়া রেলওয়ে হকার্স মার্কেটে আগুনে প্রায় কোটি টাকার সম্পদ ভস্ম হয়। ২০১৬ সালের মাঝামাঝি আগুনে নিউমার্কেটের ১০টি দোকান পুড়ে ২ কোটি টাকার ক্ষতি হয়। এর আগে দুই হাজার সালে নিউমার্কেট এলাকায় ভয়াবহ আগুনে ওই মাকের্টের রঞ্জু মার্কেটটি পুরোপুরি পুড়ে যায়। এতে ক্ষতি হয় প্রায় ১০ কোটি টাকার। ২০০৭ সালের ৫ এপ্রিল আগুনে নিউমার্কেটের আহম্মদিয়া মার্কেটের প্রায় ৪ কোটি টাকার ক্ষতি হয়। তার কিছুদিন আগে নিউমার্কেট সংলগ্ন আকবরিয়া হোটেলের কনফেকশনারি কারখানায় আগুন লাগে, এতে ক্ষতি হয় প্রায় ৩ কোটি টাকা।

বগুড়ায় ফায়ার সার্ভিসের সহকারী পরিচালক মঞ্জিল হক বলেন, ‘পানির মজুদ বা জলাধার নির্মাণ সংক্রান্ত প্রস্তাবটি এখনও আলোচনার মধ্যেই সীমাবদ্ধ।’ তিনি বলেন, ‘আমরা বিষয়টি নিয়ে বিভিন্ন মার্কেটের মালিক সমিতির নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করব বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছি। তাদের সম্মতি পাওয়া গেলেই বৈঠকে বসা হেবে।’ 

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক : মোরছালীন বাবলা

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা