বাগেরহাট প্রতিবেদক
প্রকাশ : ১৩ মার্চ ২০২৫ ১৯:৫৪ পিএম
প্রবা ফটো
বাগেরহাট পৌর যুবদলের সাবেক আহ্বায়ক মো. জসিম সরদারের দুই পায়ের রগ কেটে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে সাবেক শ্রমিক দল নেতা সেলিম ভূঁইয়ার ভাই আজিম ভূঁইয়া ও তার লোকজনের বিরুদ্ধে।
বুধবার (১২ মার্চ)রাতে শহরের বাসাবাটি এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
পরে স্থানীয়রা আহত অবস্থায় উদ্ধার করে বাগেরহাট ২৫০ শয্যা হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে থেকে গুরুত্বর হওয়ায় খুলনা এবং খুলনা থেকে ঢাকায় প্রেরণ করা হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয়রা জানান, বুধবার সন্ধ্যায় সাবেক শ্রমিক দল নেতা সেলিম ভূঁইয়ার ভাই আজিম ভূঁইয়ার ও তার লোকজন শহরের নাগের বাজার এলাকায় মো. জসিম সরদারের প্রতিবেশী আজিম খান নামের এক ব্যক্তিকে মারধর করেন। রাত ৮টার দিকে বাসাবাটি এলাকার বগা ক্লিনিকের সামনে বসে আজিম ভূঁইয়ার কাছে মারধরের কারণ জানতে চান জসিম সরদার। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে আজিম ভূঁইয়া ও তার লোকজন জসিমের ওপর অতর্কিত হামলা করে। প্রাণ বাঁচাতে স্থানীয় মদনের বাড়িতে প্রবেশ করেন জসিম। আজিম ভূঁইয়া ও তার লোকজন মদনের বাড়ির গেট ও রুমের দরজা ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করে বেধরক মারপিট করে এবং ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে জখম করে। পরে দুই পায়ের রগ কেটে ফেলে। এরপর এলাকাবাসীর টের পেয়ে পালিয়ে যায় তারা।
জসিম সরদারের মামাতো ভাই সাইফুল ইসলাম পিঞ্জুর বলেন, ‘শুধু মারধরের কারণ জানতে চাওয়ায় আজিম ভূঁইয়া ও তার লোকজন জসিমকে কুপিয়েছে। ওদের হাত থেকে বাঁচার জন্য মদনের ঘরের মধ্যে পালিয়েও রক্ষা পায়নি। তার অবস্থা খুবই আশঙ্কাজনক, আমরা খুলনা থেকে ঢাকার হাসপাতালে নিয়ে আসছি। এর আগে জসিমের ভাগ্নে রাব্বিকে মারধর ও তার মোটরসাইকেল নিয়ে গেছিল আজিম ভূঁইয়া। সেই মোটরসাইকেল এখনও ফেরত দেয়নি।’
মারধরের শিকার আজিম খানের স্ত্রী নাদিরা বেগম বলেন, ‘আজিম ভূঁইয়া ও তার লোকজন এর আগেও আমাদের বাড়িতে এসে হুমকি-ধামকি দিয়েছে। বুধবার আমার স্বামীকে মেরেছে, মারধরের কারণ জানতে চাওয়ায় জসিম কাকাকে মেরেছে তারা। আজিম ভূঁইয়ার সাথে কয়েল ফারুক, মাসুদ, মুরাদ, অভি, শাওনসহ ১৫-১৬ জন ছিল। আমরা এর বিচার চাই।’
এদিকে এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার দুপুরে বাগেরহাট শহরের প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে শহররক্ষা বাঁধ এলাকায় আজিম ভূঁইয়ার বিচারের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করেছেন যুবদল কর্মী ও মাছ ব্যবসায়ীরা। আধাঘণ্টা মাছ বাজার বন্ধ রাখেন তারা।
মাছ ব্যবসায়ী মো. ওসমান বলেন, ‘জসিমকে মারধর করার পরে আজিম ভূঁইয়া ও তার লোকজন এসে মাছ ব্যবসায়ী কুটুকে মারধর করেছে। এর আগে গরুর গোশত ব্যবসায়ী আব্দুস সালামও আমাদের এক মাছ ব্যবসায়ীকে মারধর করেছে। আমরা ছালাম, আজিম ভূঁইয়া ও সেলিম ভূঁইয়ার বিচার চাই।’
এদিকে ঘটনার ২০ ঘণ্টা পরেও হামলা ও রগ কাটার ঘটনায় থানায় কোনো অভিযোগ দেয়নি আহতের স্বজনরা। কাউকে আটকও করতে পারেনি পুলিশ।
এ বিষয়ে জানতে বাগেরহাট শ্রমিক দলের সাবেক সভাপতি সেলিম ভূঁইয়াকে ফোন করলে বন্ধ পাওয়া যায়।
বাগেরহাট মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মাহমুদ-উল হাসান বলেন, এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত কেউ কোনো অভিযোগ দেয়নি। অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।