সুবল বড়ুয়া, চট্টগ্রাম
প্রকাশ : ১৩ মার্চ ২০২৫ ১৩:১২ পিএম
সরকারি পর্যায়ে (জি-টু-জি) সই করা চুক্তির আওতায় তিন দেশ থেকে আসছে প্রায় ৭৭ হাজার টন চাল।
সরকারি পর্যায়ে (জি-টু-জি) সই করা চুক্তির আওতায় তিন দেশ থেকে আসছে প্রায় ৭৭ হাজার টন চাল। সরকারি এই চুক্তির আওতায় পাকিস্তান থেকে চালের দ্বিতীয় চালান গত মঙ্গলবার বহির্নোঙরে পৌঁছেছে। এই চালানে রয়েছে ২৬ হাজার ৩১৩ টন চাল । বাকি দুই দেশের মধ্যে ভারত ও ভিয়েতনাম থেকে ৫০ হাজার টনের বেশি চালবাহী জাহাজ এখন পথে রয়েছে। আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে এসব চাল দেশে এসে পৌঁছাবে।
খাদ্য বিভাগের চলাচল ও সংরক্ষণ নিয়ন্ত্রক দপ্তরের তথ্যানুযায়ী, সেন্টভিনসেন্ট পতাকাবাহী জাহাজ মরিয়াম পাকিস্তান থেকে চালের দ্বিতীয় চালানটি নিয়ে গত মঙ্গলবার বহির্নোঙরে এসে পৌঁছেছে। চালের নমুনা সংগ্রহ এবং রাসায়নিক পরীক্ষাসহ প্রয়োজনীয় কার্যক্রম শেষে দুয়েকদিনের মধ্যে এই চাল খালাস শুরু হবে।
পাকিস্তান থেকে ৫০ হাজার মেট্রিক টন চাল আমদানির ব্যাপারে সম্প্রতি ঢাকায় সরকারি পর্যায়ে যে সমঝোতা স্মারক সই হয় তার আওতায় প্রথম চালানটি নিয়ে পাকিস্তান ন্যাশনাল শিপিং করপোরেশনের বাল্ক ক্যারিয়ার এমভি সিবি এসে পৌঁছে গত ৫ মার্চ।
এ প্রসঙ্গে খাদ্য বিভাগের চলাচল ও সংরক্ষণ নিয়ন্ত্রক জ্ঞান প্রিয় বিদূর্শী চাকমা প্রতিদিনের বাংলাদেশকে বলেন, ‘পাকিস্তান থেকে দ্বিতীয় চালানে ২৬ হাজার ৩১৩ মেট্রিক টন চালবাহী জাহাজ বহির্নোঙরে এসে পৌঁছেছে। সিডিউল পেলেই জাহাজটি বন্দরে ভিড়বে। এরপর আশা করি দুই-তিন দিনের মধ্যে প্রয়োজনীয় নমুনা পরীক্ষা ও সার্ভে শেষে চালগুলোর খালাস কার্যক্রম শুরু হবে।’
তিনি আরও বলেন, পাকিস্তান ছাড়াও সরকারি চুক্তি অনুযায়ী ভারত ও ভিয়েতনাম থেকে আরও ৫০ হাজার টনের বেশি চাল নিয়ে এক সপ্তাহের মধ্যে আরও তিনটি জাহাজ বন্দরে পৌঁছবে। এর মধ্যে ভারত থেকে সাড়ে ২১ হাজার ৮০ টন চাল নিয়ে আরও একটি জাহাজ চট্টগ্রামের পথে রয়েছে। বেলিজ পতাকাবাহী এই জাহাজটি বুধবার বহির্নোঙরে পৌঁছেছে। ভিয়েতনাম থেকে আরও একটি জাহাজ আসছে। সাড়ে ১২ হাজার টন চাল রয়েছে জাহাজটিতে। ভিয়েতনাম থেকে আরও একটি জাহাজ চাল নিয়ে পথে রয়েছে। ১৭ মার্চ জাহাজটি পৌঁছার সূচি রয়েছে। ১৬ হাজার টন চাল নিয়ে আসছে জাহাজটি।
জানা যায়, বাংলাদেশ বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ উৎপাদনকারী দেশ হওয়া সত্ত্বেও প্রতিবছর বিপুল পরিমাণ চাল অন্য দেশ থেকে কিনতে হয়। ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরে বাংলাদেশ দুই লাখ টন চাল আমদানি করেছিল। এসব চাল আনা হয়েছিল ভারত, থাইল্যান্ড, ভিয়েতনাম এবং মিয়ানমার থেকে।
খাদ্য অধিদপ্তরের তথ্যানুযায়ী, গত ১৬ জানুয়ারি সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির বৈঠকে ভারত ও পাকিস্তান দুই দেশ থেকেই এক লাখ টন চাল আমদানির প্রস্তাব
অনুমোদিত হয়। অর্থ উপদেষ্টা সালেহ উদ্দিন আহমেদ ওই বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন। এ ছাড়াও রাষ্ট্রীয় জরুরি প্রয়োজনে ও জনস্বার্থে চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরে আন্তর্জাতিক উৎস থেকে ছয় লাখ টন চাল আমদানির জন্য অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটি অনুমোদন দেয়।
সে অনুযায়ী পাকিস্তান পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে ৫০ হাজার টন আতপ চাল রপ্তানির প্রস্তাব দেয় বাংলাদেশকে। প্রতি টন ৪৯৯ মার্কিন ডলার হিসাবে পাকিস্তান থেকে ৫০ হাজার টন চালের আমদানি মূল্য দুই কোটি ৪৯ লাখ ৫০ হাজার মার্কিন ডলার। প্রতি ডলার ১২২ টাকা হিসাবে, যা বাংলাদেশি মুদ্রায় ৩০৪ কোটি ৩৯ লাখ টাকা।