× ই-পেপার প্রচ্ছদ সর্বশেষ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি শিক্ষা ধর্ম ফিচার ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

মুড়িকাটা পেঁয়াজ

লাভ তো দূরের কথা খরচ উঠানোই দায়

রফিকুল ইসলাম সান, বেড়া-সাঁথিয়া (পাবনা)

প্রকাশ : ১২ মার্চ ২০২৫ ১১:০০ এএম

পাবনার বেড়ায় কৃষক থেকে মুড়িকাটা পেঁয়াজ কিনে বিভিন্ন এলাকায় নেওয়ার উদ্দেশ্যে বস্তায় ভরছেন ব্যাপারীরা। মঙ্গলবার করমজা চতুরহাট এলাকায়। প্রবা ফটো

পাবনার বেড়ায় কৃষক থেকে মুড়িকাটা পেঁয়াজ কিনে বিভিন্ন এলাকায় নেওয়ার উদ্দেশ্যে বস্তায় ভরছেন ব্যাপারীরা। মঙ্গলবার করমজা চতুরহাট এলাকায়। প্রবা ফটো

পাবনার বেড়া, সাঁথিয়া ও সুজানগর উপজেলা উত্তরাঞ্চলের মধ্যে পেঁয়াজ উৎপাদনকারী এলাকা হিসেবে পরিচিত। এ এলাকার পেঁয়াজ এখানকার চাহিদা পূরণ করে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে সরবরাহ করা হয়। কিন্তু এ বছর আগাম জাতের (মুড়িকাটা) পেঁয়াজ আবাদে কৃষকরা লাভের মুখ দেখা তো দূরের কথা, উৎপাদন খরচ উঠানোই দায় হয়ে পড়েছে। লোকসান গুনতে হচ্ছে কৃষকদের। 

কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, পেঁয়াজ চাষে উৎপাদন খরচ বেড়ে যাওয়া, বাজারে ন্যায্যমূল্য না পাওয়ায় স্থানীয় কৃষকদের প্রতি বিঘায় প্রায় ৫০ হাজার টাকা লোকসান গুনতে হয়েছে। বেড়া উপজেলার কৃষকরা মনে করেন সরকারের যথাযথ পদক্ষেপে ও কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের মাধ্যমে মুড়িকাটা পেঁয়াজের মৌসুমে পেঁয়াজ আমদানি বন্ধ রাখলে দাম কিছুটা বাড়তে পারে। 

কৃষকরা বলেন, পেঁয়াজের উৎপাদন ব্যয়, বাজারমূল্যের অস্থিরতা এবং মধ্যস্বত্বভোগীদের দৌরাত্ম্যই এই লোকসানের প্রধান কারণ। এসব কারণে পেঁয়াজ চাষে আগ্রহ হারাতে পারেন কৃষকরা। কয়েক বছর ধরে পেঁয়াজের উৎপাদন খরচ ক্রমাগত বেড়েই চলেছে। জমি প্রস্তুত, বীজ, সার, সেচ, কীটনাশক এবং শ্রমিক খরচ মিলে এক বিঘা জমিতে পেঁয়াজ চাষ করতে যা খরচ হয়েছে, তার অর্ধেক দামেও বিক্রি করতে পারছি না। 

করমজা চতুরহাটে মুড়িকাটা পেঁয়াজ বিক্রি করতে আসা সাঁথিয়া উপজেলার বায়া এলাকার কৃষক শামছুর রহমান বলেন, এবার মুড়িকাটা পেঁয়াজ বীজ প্রতিমণ ৮ হাজার ৫০০ টাকা দরে ৬ মণ বীজ এক বিঘা জমিতে লাগিয়েছিলাম। শুধু বীজ বাবদ ৫১ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। সঙ্গে সার, কীটনাশক, সেচ, শ্রমিকসহ বিঘায় খরচ দাড়িয়েছে ৯০ হাজার থেকে ১ লাখ টাকা। এক বিঘা জমিতে ৪৩ মণ মুড়িকাটা পেঁয়াজ উৎপাদন হয়েছে। বাজারে প্রতিমণ মুড়িকাটা পেঁয়াজ বিক্রি করতে হচ্ছে মাত্র ৮০০ থেকে ১০০০ টাকা দরে। সে হিসাবে একা বিঘায় ৫০ হাজার টাকা লোকসান হবে। 

তিনি আরও বলেন, ব্যাংক থেকে মোট এক লাখ টাকা ঋণ করে এক বিঘা জমিতে মুড়িকাটা পেঁয়াজের আবাদ করেছিলাম। ভেবেছিলাম পেঁয়াজ বিক্রি করে ঋণের টাকা পরিশোধ করব। এখন সেটাও হলো না। 

কালিবাজার এলাকার কৃষক মমিন উদ্দিন জানান, জমিতে বিঘাপ্রতি পেঁয়াজের ফলন হয়েছে ৪৫ মণ। বর্তমান বাজারে ৭০০ বা ৮০০ টাকা মণ দরে পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে। তাতে প্রতি বিঘা জমির পেঁয়াজ বিক্রি করে ৩১ হাজার থেকে ৩৬ হাজার টাকা পাচ্ছেন। বিঘায় তার গড়ে লোকসান হচ্ছে ৫০ থেকে ৫৫ হাজার টাকা।

বেড়া পৌর এলাকার করমজা চতুরহাটের বেশ কয়েটি আড়ত ঘুরে দেখা যায়, প্রতিমণ মুড়িকাটা পেঁয়াজ প্রকারভেদে পাইকারি ৭০০ থেকে ১০০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। আড়তদার আলম মোল্লা বলেন, হাটে প্রচুর পরিমাণ মুড়িকাটা পেঁয়াজের সরবরাহ রয়েছে। বেপারিরা সেগুলো কিনে ঢাকা, চট্টগ্রাম, খুলনাসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় নিয়ে যাচ্ছেন। এ বছর মুড়িকাটা পেঁয়াজের ফলন ভালো হওয়ায় দাম অনেকটাই কম। 

বেড়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা নুসরাত কবীর বলেন, এ বছর বেড়া উপজেলায় ১ হাজার ৯৮৮ হেক্টর জমিতে মুড়িকাটা পেঁয়াজের আবাদ হয়েছে। ফলন অত্যন্ত ভালো তাই বাজারে সরবরাহ বেড়ে যাওয়ায় দাম কমে গেছে। তবে সরকার যদি মুড়িকাটা পেঁয়াজের মৌসুমে আমদানি বন্ধ রাখে, তবে বাজার স্বাভাবিক থাকবে। এ ছাড়া কৃষকেরা মুড়িকাটা পেঁয়াজের সঙ্গে সাথি ফসল হিসেবে অন্যান্য ফসল চাষ করলে লাভবান হবেন। 

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক : মোরছালীন বাবলা

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা