গাজীপুর প্রতিবেদক
প্রকাশ : ১১ মার্চ ২০২৫ ১০:২০ এএম
আপডেট : ১১ মার্চ ২০২৫ ১০:৫৪ এএম
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ঘটনাস্থলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। প্রবা ফটো
বকেয়া বেতন ও কারখানা শ্রমিককে মারধরের ঘটনায় গাজীপুরের ঢাকা-ময়মনসিংহ ও ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়ক অবরোধ করেছেন শ্রমিকরা। এতে দুই মহাসড়কে যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। দুর্ভোগে পড়েছেন মহাসড়কে চলাচলকারীরা। অনেকেই হেঁটে গন্তব্যে যাচ্ছেন। এদিকে মৌচাকের আশপাশের সব কারখানা বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।
গাজীপুরের টঙ্গীর হোসেন মার্কেট এলাকায় একটি পোশাক তৈরি কারখানার শ্রমিকরা বেতনের দাবিতে মঙ্গলবার (১১ মার্চ) সকাল ৭টায় বিক্ষোভ শুরু করেন। তারা ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে অবস্থান নিয়ে অবরোধ সৃষ্টি করেন। এতে ওই মহাসড়কের উভয় দিকে যানবাহন চলাচল বন্ধ রয়েছে। অন্যদিকে গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার মৌচাকে গ্লোবাস কারখানার শ্রমিককে মারধরের ঘটনায় মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন শ্রমিকরা। তাদের আন্দোলনের ফলে আশপাশের অন্তত ১৫টি কারখানা ছুটি দেওয়া হয়েছে।
শিল্পপুলিশ ও কারখানার শ্রমিকরা জানান, টঙ্গীর হোসেন মার্কেট এলাকায় বিএইচআইএস অ্যাপারেলস লিমিটেড কারখানার শ্রমিকদের ফেব্রুয়ারির বেতন ৯ মার্চ দেওয়ার কথা ছিল। বেতন না দেওয়ায় সোমবার সকাল থেকে কাজ বন্ধ করে কারখানার ভিতরেই অবস্থান করে বিক্ষোভ দেখান শ্রমিকরা। কিন্তু তারা সারা দিন বেতন না দিয়ে নানা ধরনের টালবাহানা করেন। পরে বিকালে শ্রমিকরা বাড়ি ফিরে যান। মঙ্গলবার সকালে শ্রমিকরা কাজে যোগ দিতে গিয়ে দেখেন কারখানার সামনে অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধের নোটিস সাঁটিয়ে দিয়েছেন কর্তৃপক্ষ। ওই নোটিস দেখে শ্রমিকরা সকাল ৭টায় কারখানার সামনে বিক্ষোভ শুরু করেন। একপর্যায়ে তারা হোসেন মার্কেট ইম্পেরিয়াল হাসপাতালের সামনের ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে অবস্থান নিয়ে অবরোধ সৃষ্টি করেন। এতে ওই মহাসড়কের উভয় দিকে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। সকাল থেকে প্রায় আড়াই ঘণ্টা ধরে মহাসড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকায় উভয় দিকে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়। এতে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন ওই মহাসড়কে চলাচলকারীরা। খবর পেয়ে শিল্পপুলিশ ও থানা পুলিশ গিয়ে শ্রমিকদের বুঝিয়ে শান্ত করার চেষ্টা করছে।
কারখানার সামনে দেওয়া নোটিসে বলা হয়েছে, ‘এতদ্বারা অত্র কারখানার সকল কর্মী ও কর্মচারীদের অবগতির জন্য জানানো যাচ্ছে যে, ১০ মার্চ অনুমান সকাল ১০টার সময় কর্মী ও কর্মচারীগণ নিয়মবহির্ভূতভাবে কাজ বন্ধ করে কারখানার অভ্যন্তরে উচ্ছৃঙ্খল আচরণ করে। কর্মী ও কর্মচারীগণকে কাজে যোগদানের জন্য বারবার অনুরোধ করা সত্ত্বেও কর্মী ও কর্মচারীগণ কাজে যোগদান থেকে বিরত থাকে। কর্মী-কর্মচারীগণের এই ধরনের আচরণ অবৈধ ধর্মঘটের শামিল। কর্তৃপক্ষ মনে করছে উচ্ছৃঙ্খল কর্মী-কর্মচারীগণ কারখানায় যেকোনো ধরনের নাশকতা সৃষ্টি করতে পারে। যার কারণে কারখানা কর্তৃপক্ষ বাধ্য হয়ে বাংলাদেশ শ্রম আইন, ২০০৬ -এর ১৩(১) ধারা মোতাবেক ১১ মার্চ হতে অনির্দিষ্টকালের জন্য কারখানা বন্ধ ঘোষণা করল।’
অন্যদিকে শনিবার মৌচাকের গ্লোবাস কারখানায় কয়েকজন শ্রমিককে ডেকে নিয়ে মারধর করেন স্টাফরা। এতে শ্রমিকরা কারখানার ভেতর আন্দোলন শুরু করেন। পরে ঝামেলা মিটে গেলেও আজ পর্যন্ত কারখানা বন্ধ রেখেছে। এ কারণেই আজ বিক্ষোভ শেষে মহাসড়ক অবরোধ করে রেখেছেন শ্রমিকরা। তাদের আন্দোলনে আশপাশের সব কারখানা বন্ধ করা হয়েছে।
গাজীপুর শিল্পপুলিশের পরিদর্শক মো. ইসমাইল হোসেন বলেন, সকাল ৭টা থেকে শ্রমিকরা গত মাসের বেতনের দাবিতে বিক্ষোভ করছে। মহাসড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ রয়েছে। শ্রমিকদের বুঝিয়ে শান্ত করার চেষ্টা চলছে।