বরিশাল সংবাদদাতা
প্রকাশ : ০৪ ডিসেম্বর ২০২২ ১৮:০৩ পিএম
আপডেট : ০৪ ডিসেম্বর ২০২২ ১৮:৩৫ পিএম
বরিশালের উজিরপুরে শিকারপুর বাজারের কয়েকটি দোকানে ডাকাতির অভিযোগ উঠেছে। ছবি : প্রবা
বরিশালের বাবুগঞ্জে বিয়েবাড়িতে এবং পাশের উজিরপুরে ব্যাংকের এজেন্ট শাখা, তিনটি স্বর্ণের দোকান, ফার্মেসিসহ বেশ কয়েকটি ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে ডাকাতির অভিযোগ পাওয়া গেছে। শনিবার (৩ ডিসেম্বর) মধ্য রাত থেকে ভোর পর্যন্ত এই ঘটনা ঘটে।
স্থানীয়দের অভিযোগ, ডাকাতরা বাবুগঞ্জে বিয়েবাড়িতে বোমা বিস্ফোরণ ঘটিয়ে টাকা ও স্বর্ণালংকার লুট করেছে। অন্যদিকে উজিরপুরের শিকারপুর বাজারে প্রায় ১০ লাখ টাকার মালামাল ও টাকা লুটের অভিযোগ উঠেছে। তবে দোকান লুটের ঘটনাকে চুরি হিসেবে দাবি করছে পুলিশ।
তারা জানান, বাবুগঞ্জ উপজেলার পূর্ব ভুতেরদিয়া গ্রামে মজিবর রহমানের বাড়িতে ছেলের বিয়ে উপলক্ষে আয়োজন চলছিল। রবিবার (৪ ডিসেম্বর) ভোর পৌনে ৪টার দিকে সেখানে ডাকাতির ঘটনা ঘটে। গ্রামবাসী ধাওয়া দিলে ডাকাতরা তিনটি হাতবোমার বিস্ফোরণ ঘটায়। এ সময় মোসলেম উদ্দিন নামে এক গ্রামবাসী আহত হয়েছেন। তাকে উপজেলা হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে।
বিয়েবাড়িতে ডাকাতি ও হাতবোমা বিস্ফোরণের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন কেদারপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নুরে আলম বেপারী।
ডাকাতি হওয়া বাড়ির গৃহকর্তা মজিবর রহমান বলেন, ‘গভীর রাত পর্যন্ত কাজ করে বিয়েবাড়ির বেশিরভাগ লোকজন ঘুমিয়ে পড়েছিল। বাবুর্চিরা রান্না শুরুর প্রস্তুতি নিচ্ছিল। ভোর আনুমানিক ৪টার দিকে ১৫-২০ জনের দুর্বৃত্ত ধারাল অস্ত্র নিয়ে বাড়িতে হানা দেয়। তারা প্রথমে বাইরে বাবুর্চিদের বেঁধে ফেলে। ঘর খোলা থাকায় ডাকাতরা অনায়াসে ঘরের মধ্যে ঢুকে পড়ে।’
তিনি বলেন, ‘ডাকাতরা অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে সাড়ে ৫ লাখ টাকা ও ৮-১০ ভরি স্বর্ণালংকার লুট করে নিয়ে যায়। বাড়ির লোকজন চিৎকার করলে গ্রামের লোকজন ধেয়ে আসে। তখন তারা তিনটি হাতবোমার বিস্ফোরণ ঘটিয়ে পালিয়ে যায়।’
বাবুগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘জেলা পুলিশ সুপার মো. ওয়াহেদুজ্জামান, সিআইডি পুলিশ সুপার মো. কামরুল ইসলাম, পিবিআই পুলিশ সুপার হাবিবুর রহমানসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। ডাকাতির ঘটনায় জড়িতদের শনাক্ত ও গ্রেপ্তারে পুলিশি তৎপরতা চলছে। ঘটনার শিকার পরিবার থেকে বেলা ২টা পর্যন্ত অভিযোগ দেওয়া হয়নি।’
এদিকে উজিরপুরের শিকারপুর বাজারে ব্যাংক এশিয়ার এজেন্ট শাখা, তিনটি স্বর্ণের দোকান ও ফার্মেসিতে ডাকাতির অভিযোগ উঠেছে। এসব ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান থেকে ১০ লাখ টাকার মালামাল ও টাকা লুট করা হয়েছে।
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, শিকারপুর বন্দর বাজারের জামাল হোসেনের কণিকা জুয়েলার্স, জনি সরদারের আহমেদ জুয়েলার্স, সিরাজুল ইসলামের রিয়া জুয়লার্স, মাহাবুব আলমের আল মদিনা ফার্মেসি, ব্যাংক এশিয়া (এজেন্ট ব্যাংক) শাখার তালা ভেঙে টাকা এবং স্বর্ণালংকার নিয়ে গেছে দুর্বৃত্তরা।
ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীরা অভিযোগ করেছেন, গভীর রাতে সংঘবদ্ধ ১০-১২ জনের একটি ডাকাত দল দেশীয় অস্ত্রের মুখে বাজারের নাইট গার্ডকে বেঁধে রেখে ব্যাংক এশিয়া (এজেন্ট ব্যাংক) থেকে ৫৫ হাজার টাকা, রিয়া জুয়েলার্স থেকে প্রায় চার ভরি, কনিকা জুয়েলার্স থেকে প্রায় আট ভরি ও রুপা জুয়েলার্স থেকে প্রায় তিন ভরি স্বর্ণ লুট করেছে। এ ছাড়া তারা মদিনা ফার্মেসি থেকে প্রায় দেড় লাখ টাকা লুট করে নিয়ে গেছে। একই সময়ে বাজারের বিভিন্ন ফল ও মিষ্টির দোকান থেকেও পণ্য নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
এ বিষয়ে উজিরপুর থানার ওসি (তদন্ত) মো. জাফর আহমেদ বলেন, ‘শিকারপুর বন্দরে কয়েকটি দোকানে চুরি হয়েছে। দোকানের তালা ভেঙেছিল দুর্বৃত্তরা। বিভিন্ন দোকানে দুর্বৃত্তের হানা দেওয়ার কথা সঠিক। কিন্তু স্বর্ণের দোকানে এখন আর কিছুই রাখে না। ওষুধের দোকান থেকে কী ওষুধ চুরি করবে? দোকানে অল্পস্বল্প টাকা পয়সা থাকতে পারে, সেগুলো চোর চক্র নিয়ে গেছে। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত অভিযোগও পাইনি।’