× ই-পেপার প্রচ্ছদ সর্বশেষ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি শিক্ষা ধর্ম ফিচার ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

গাছে গাছে আমের মুকুল

কৃষ্ণ ব্যানার্জী, সাতক্ষীরা

প্রকাশ : ০৯ মার্চ ২০২৫ ১৩:৩৭ পিএম

সাতক্ষীরার তালা উপজেলার নগরঘাটা এলাকা থেকে সম্প্রতি তোলা। প্রবা ফটো

সাতক্ষীরার তালা উপজেলার নগরঘাটা এলাকা থেকে সম্প্রতি তোলা। প্রবা ফটো

সাতক্ষীরায় মুকুলে মুকুলে ছেয়ে গেছে আম বাগান। চারদিকে ছড়িয়ে পড়ছে পরাগের পাগল করা ঘ্রাণ। কবির ভাষায়Ñ ‘ফাল্গুনে বিকশিত, কাঞ্চন ফুল, ডালে ডালে পুঞ্জিত, আম্রমুকুল। চঞ্চল মৌমাছি, গুঞ্জরি গায়, বেণুবনে মর্মরে, দক্ষিণবায়।’ বাংলার প্রকৃতিতে সবে এসেছে বসন্ত। কিন্তু মাঘের মাঝামাঝিতেই ফলের রাজা আমের গাছে গাছে মুকুল ফুটেছে। আমের মুকুলের ম ম ঘ্রাণে মুখরিত এখন সাতক্ষীরা জুড়ে। শহর কিংবা গ্রামে সর্বত্র আমগাছ তার মুকুল নিয়ে সোনালি রঙ ধারণ করে আছে। তবে বছরের প্রথম থেকেই বৈরী আবহাওয়ায় উৎপাদন কমে যাওয়ার আশঙ্কাও করছেন আম চাষিরা।

কৃষি বিভাগের তথ্যমতে, সাতক্ষীরায় পাঁচ হাজার আম বাগান রয়েছে। আমের চাষ হয়েছে ৪ হাজার ১১৮ হেক্টর জমিতে। জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর এবার আম উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করেছে ৫০ থেকে ৬০ হাজার মেট্রিক টন। গত মৌসুমে জেলার আম বাগানগুলোর অধিকাংশ বাগানে আশানুরূপ আমের মুকুলের দেখা মেলেনি। গত মৌসুমের তুলনায় এবার জেলার আম বাগানগুলোয় দ্বিগুণ মুকুল এসেছে। আমের এই সোনালি মুকুলে জেলার প্রায় ১৫ হাজার আম চাষির স্বপ্ন দোল খাচ্ছে। তাই তারা আম বাগান পরিচর্যার কাজে ব্যস্ত। এ ছাড়া ব্যক্তিপর্যায়ে রয়েছে আরও কয়েক হাজার আম চাষি। 

কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা যায়, এবার জেলায় ৪ হাজার ১১৮ হেক্টর জমিতে ৪০ হাজার মেট্রিক টন আম উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে কৃষি বিভাগ। গড় ৬০ টাকা কেজি ধরে ৫০ থেকে ৬০ হাজার মেট্রিক টন আমের বাজারমূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে প্রায় ৩৬০ কোটি টাকা। জেলার বিভিন্ন এলাকার মাঠপর্যায়ের আম চাষিরা বলেন, তাদের আম বাগানগুলোয় মুকুল অপূর্ব শোভা নিয়ে এসেছে। মুকুলে মুকুলে ভরে গেছে বাগানগুলো। প্রায় জেলার ৯৫ শতাংশ আমগাছ মুকুলে শোভা পাচ্ছে। এর মধ্যে ল্যাংড়া, গোপালভোগ, হিমসাগর, লতা, আশ্বিনা, গোবিন্দভোগ, কালীভোগ, আম্রপালিসহ বিভিন্ন জাতের আম রয়েছে। কৃষি বিভাগের বিভিন্ন পরামর্শ মতে চলছেন জানিয়ে আম চাষিরা বলেন, আবহাওয়া ও জলবায়ুগত কারণে সাতক্ষীরার বাগানগুলোয় আগাম মুকুল আসে। রাজশাহী অঞ্চলের বাগানগুলোর অন্তত ১৫-২০ দিন আগে সাতক্ষীরা অঞ্চলের আম বাগানে মুকুল আসে। ফলে এ অঞ্চলের আমও রাজশাহী অঞ্চলের তুলনায় ২৫-২০ দিন আগে পাকে। এ কারণে সাতক্ষীরার আমের প্রতি আলাদা চাহিদা রয়েছে বাজারে।

নগরঘাটা এলাকার জাহাঙ্গীর আলম, জামাল উদ্দিন, বছির উদ্দিন ও রবিউল ইসলামসহ একাধিক আম চাষি বলেন, মুকুল আসার আগে আমগাছের পরিচর্যা নিতে হয়। ইতোমধ্যে মুকুল সংরক্ষণে নিয়মিত স্প্রে ও সেচ দেওয়া শুরু হয়েছে। এবার কিছুটা আগে আমের মুকুল আসতে শুরু করেছে। গাছগুলোতে মুকুল আশাতেই সাতক্ষীরার বাইরের ব্যবসায়ীরা আসছেন এবং বাগানে বাগানে গিয়ে খবর নিচ্ছেন। আবার অনেকে আগাম আম বাগান কিনছেন। 

এ বিষয়ে সাতক্ষীরা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের (খামারবাড়ী) উপপরিচালক সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘এবার সাতক্ষীরা জেলার ৪ হাজার ১১৮ হেক্টর জমিতে আমের চাষাবাদ হচ্ছে; যা থেকে ৫০ থেকে ৬০ হাজার মেট্রিক টন আম উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করেছে কৃষি বিভাগ। ইতোমধ্যেই আমের মুকুল এসেছে। এ সময়ে সাধারণত হুপার পোকা আক্রমণ করে। যার ফলে আমের মুকুল নষ্ট হয়। তাছাড়াও প্রতিটি উপজেলার মাঠপর্যায় উপজেলা কৃষি কর্মকর্তাসহ উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তারা সার্বক্ষণিক কৃষকদের জন্য কাজ করছেন। এ ছাড়া বিচিং পদ্ধতিতে সেচ না দেওয়ায় মুকুল শুকিয়ে ঝরে পড়ে। এগুলো থেকে রক্ষা পেতে ও ফলন ভালো পেতে কৃষি দপ্তরের পক্ষ থেকে আম চাষিদের সবধরনের পরামর্শ ও সহযোগিতা দেওয়া হচ্ছে বলে জানান ওই কর্মকর্তা।

কালবৈশাখীসহ কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে চাষিদের ধারণা, এবার আমের ভালো ফলন হবে। তবে প্রকৃতির নিয়ম মেনে শেষ মাঘে যেসব গাছে মুকুল আসবে, সেসব গাছে মুকুল স্থায়ী হবে বলে জানান সদর উপজেলা কৃষি বিভাগ। আমের মুকুল টিকিয়ে রাখতে এখন বাগানে বাগানে পরিচর্যায় ব্যস্ত মালিক ও ব্যবসায়ীরা। কেউ কেউ উন্নত পদ্ধতিতে আম চাষ ও রক্ষণাবেক্ষণের নানা পদক্ষেপ নিতে কাজ করছেন। প্রযুক্তি কাজে লাগিয়ে বিভিন্ন জাতের আমের ভালো রঙ ও ফলন পাওয়া যায়। তবে বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে আম চাষ করলে যেমন উৎপাদন বাড়বে, তেমন সার্বিকভাবে সংরক্ষণ, পরিবহন ও রপ্তানিসহ বাজারজাত করতে পারলে কৃষক ব্যাপক লাভবান হবেন। কৃষি কর্মকর্তারা এমনটাই বলছেন।

অন্যদিকে আম রপ্তানিতে সরকারের পৃষ্ঠপোষকতা ও প্রশাসনের সহযোগিতা পাওয়ার আশা করছেন আম ব্যবসায়ীরা। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে আমের বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা রয়েছে। খেতে সুস্বাদু হওয়ায় সাতক্ষীরার আম বিদেশে রপ্তানিও করা হয়।

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক : মোরছালীন বাবলা

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা