× ই-পেপার প্রচ্ছদ সর্বশেষ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি শিক্ষা ধর্ম ফিচার ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

চার বছরে ৫ হাজার মামলা নিষ্পত্তি, আদায় সাড়ে ৩ হাজার কোটি টাকা

হুমায়ুন মাসুদ, চট্টগ্রাম

প্রকাশ : ০৩ মার্চ ২০২৫ ১৩:৩৯ পিএম

ছবি : সংগৃহীত

ছবি : সংগৃহীত

ঋণ নিয়ে পরিশোধ না করায় ২০১৮ সালে ঢাকার আদালতে লিজেন্ড হোল্ডিংসের মালিক এসএম আব্দুল হাই ও তার স্ত্রী-সন্তানদের বিরুদ্ধে মামলা করে সাউথইস্ট ব্যাংক। ১৪৬ কোটি টাকা খেলাপি ঋণ আদায়ে দায়ের করা মামলার ঋণের বিপরীতে বন্ধকি সম্পত্তি চট্টগ্রামের খুলশী থানা এলাকায় হওয়ায় মামলাটি ২০২১ সালে চট্টগ্রাম অর্থঋণ আদালতে স্থানান্তর হয়। এরপর খেলাপি ঋণ আদায়ে তৎপর হন আদালতের বিচারক মুজাহিদুর রহমান। এসএম আব্দুল হাই শীর্ষ ঋণখেলাপি হওয়ায় খেলাপি ঋণ আদায়ে শুনানির জন্য প্রতি মাসে দুইটি করে দিন ধার্য করেন তিনি। এতে একপর্যায়ে ব্যাংকের সঙ্গে সমঝোতায় বসতে বাধ্য হন এসএম আব্দুল হাই। এরই অংশ হিসেবে গত ২২ জানুয়ারি ৭২ কোটি ৫ লাখ টাকা ঋণ পরিশোধ করতে বাধ্য হন। 

শুধু লিজেন্ড হোল্ডিংসের মালিকের বিরুদ্ধে সাাউথইস্ট ব্যাংকের দায়ের করা এই ঋণখেলাপি মামলাটি নয়, বিচারক মুজাহিদুর রহমানের কঠোর অবস্থানের কারণে গত চার বছরে চট্টগ্রাম অর্থঋণ আদালতে বেড়েছে খেলাপি ঋণের আদায়। একই সময় বেড়েছে মামলার নিষ্পত্তি। 

অর্থঋণ আদালতের সদ্যসাবেক বেঞ্চ সহকারী রেজাউল করিম শাহেদ বলেন, ‘স্যার যোগদান করার পর খেলাপি ঋণ আদায়ে তিনি কঠোর অবস্থান নিয়েছিলেন। ২০২০ সালের ডিসেম্বর মাসে তিনি যোগদানের পর গত ৪ বছর ৩ মাস সময়কালে চট্টগ্রাম অর্থঋণ আদালতে ৫ হাজার ৩০টি মামলা নিষ্পত্তি হয়। একই সময় সব মিলিয়ে খেলাপি ঋণ আদায় হয়েছে ৩ হাজার ৪৩৯ কোটি টাকা। 

গত ২৬ ফেব্রুয়ারি চট্টগ্রাম অর্থঋণ আদালতের বিচারক পদ থেকে বিদায় নেন মুজাহিদুর রহমান। এর আগে ২৪ ফেব্রুয়ারি প্রজ্ঞাপনমূলে তাকে চট্টগ্রাম অর্থঋণ আদালত থেকে বদলি করে আইন ও বিচার বিভাগে সংযুক্ত করা হয়। দায়িত্ব পালনকালে তিনি চট্টগ্রাম অর্থঋণ আদালতকে খেলাপি ঋণ আদায়ে একটি কার্যকর আদালত হিসেবে দৃশ্যমান করে তোলেন। বিচারক মুজাহিদুর রহমান যোগদানের পর অর্থঋণ আদালতে মামলা নিষ্পত্তির হার বাড়তে শুরু করে। তিনি যোগদানের পর ২০২১ সালে যেখানে মামলা নিষ্পত্তি হয় ৫৪২টি। সেখানে পরবর্তী তিন বছর গড়ে ১ হাজার ৩০০-এর বেশি মামলা নিষ্পত্তি হয়।

অর্থঋণ আদালত সূত্রে জানা যায়, ২০২১ সালে নিষ্পতি হয়েছিল ৫৪২টি মামলা। একই সময় আদালতে অর্থঋণ ও জারি মামলা দায়ের হয়েছিল ১ হাজার ১৭৪টি। এসব মামলা থেকে ওই বছর আদালত খেলাপি ঋণ আদায় করে ৫৫৭ কোটি টাকা। একইভাবে ২০২২ সালে নিষ্পত্তি হয়েছিল ১ হাজার ৫৮৮টি মামলা। ওই বছর আদালতে অর্থঋণ ও জারি মামলা হয়েছিল ১ হাজার ৪৬৮টি। এসব মামলা থেকে খেলাপি ঋণ আদায় হয়েছিল ৮৯৮ কোটি টাকা। আর ২০২৩ সালে নিষ্পতি হয়েছিল ১ হাজার ৬০৬টি মামলা। একই বছর অর্থঋণ ও জারি মামলা হয়েছিল ২ হাজার ১৮৯টি। আর এসব মামলা থেকে ৯৮৫ কোটি খেলাপি ঋণ আদায় করেন আদালত। সর্বশেষ ২০২৪ সালে নিষ্পতি হয়েছিল ১ হাজার ১৪৪টি মামলা। একই সময়ে অর্থঋণ ও জারি মামলা হয়েছিল ১ হাজার ৮০৯টি। আর এসব মামলা থেকে ৯৯৮ কোটি টাকা খেলাপি ঋণ আদায় করেন আদালত। 

আদালতের আইনজীবী রফিকুল আলম বলেন, আমি বিবাদীপক্ষের আইনজীবী হিসেবে কাজ করলেও এটি সত্য যে, সদ্যসাবেক বিচারক মুজাহিদুর রহমান সাহেবের সময়কালে অর্থঋণ আদালতের কার্যক্রম অনেক বেশি গতিশীল ছিল। বিশেষ করে ২০২১ থেকে ২০২৪ এই সময়ে দেশে যখন ডলার ক্রাইসিসের কারণে দেশের ব্যাংকগুলো অর্থ সংকটে ভুগছিল। তখন তিনি বিবাদীদের বিরুদ্ধে দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দিয়ে বিদেশ যাওয়া রোধ করেছেন। তার কঠোর অবস্থানের কারণে এই চার বছরে সাড়ে ৩ হাজার কোটি টাকা খেলাপি ঋণ আদায় হয়েছে। আমরা আশা করছি, সামনেও অর্থঋণ আদালতের কার্যক্রম এ রকম গতিশীল থাকবে। এখন যিনি বিচারক নিযুক্ত হয়েছেন, তিনিও আগের বিচারকের ধারাবাহিকতায় খেলাপি ঋণ আদায়ে কার্যকর উদ্যোগ নেবেন।

মার্কেন্টাইল ব্যাংকের ফাস্ট এভিপি তৌহিদুল হাসান বলেন, মামলাজট কমিয়ে আনার বিষয়ে বিচারকের ভূমিকাই মুখ্য। মুজাহিদুর রহমান স্যার দায়িত্ব গ্রহণের পর উনি অনেক প্রোঅ্যাক্টিভলি কাজ করেছেন। আসামিরা যতই প্রভাবশালী হোক, ছাড় দেননি। বড় ঋণখেলাপিদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন। অনেক আসামির বিরুদ্ধে দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন। অনেক বিবাদীকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন। এ কারণে খেলাপিরা ভয়ে মামলা নিষ্পত্তিতে এগিয়ে আসছেন।

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক : মোরছালীন বাবলা

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা