× ই-পেপার প্রচ্ছদ সর্বশেষ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি শিক্ষা ধর্ম ফিচার ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

চাহিদার ৪০% গাজর মেলে সিঙ্গাইরে

আতিকুল ইসলাম, সিঙ্গাইর (মানিকগঞ্জ)

প্রকাশ : ০৩ মার্চ ২০২৫ ১৩:৩৪ পিএম

মানিকগঞ্জের সিঙ্গাইর উপজেলার জামির্তা ইউনিয়নের সুদক্ষিরা এলাকা থেকে কৃষক নজরুল ইসলামের জমি থেকে গাজর তুলতে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষি শ্রমিকরা। সম্প্রতি তোলা। প্রবা ফটো

মানিকগঞ্জের সিঙ্গাইর উপজেলার জামির্তা ইউনিয়নের সুদক্ষিরা এলাকা থেকে কৃষক নজরুল ইসলামের জমি থেকে গাজর তুলতে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষি শ্রমিকরা। সম্প্রতি তোলা। প্রবা ফটো

গাজর চাষের জন্য মানিকগঞ্জের সিঙ্গাইরের পরিচিতি ছড়িয়ে পড়েছে। স্বল্প খরচে দ্বিগুণ লাভ হওয়ায় গাজর চাষে ঝুঁকেছেন এখানকার কৃষক। প্রতি মৌসুমের জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারিতে গাজর তোলা শুরু হয়। চলে মার্চ মাস পর্যন্ত। তিন মাস সময় লাগে গাজর পরিপক্ব হতে। এ বছর উপজেলায় ৯৬০ হেক্টর জমিতে গাজর চাষ হয়েছে। গত বছরের তুলনায় যা ১০ হেক্টর বেশি। দেশে চাহিদার ৪০ ভাগ গাজরই সিঙ্গাইরে চাষ হয়। চলতি মৌসুমে ৬৫ কোটি টাকার গাজর বেচাকেনা হবে বলে আশা করছে কৃষি বিভাগ।

উপজেলা কৃষি দপ্তরের তথ্যমতে, সিঙ্গাইরের প্রতিটি ইউনিয়নেই গাজরের চাষ হয়ে থাকে। তবে এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি চাষ হয় জয়মন্টপ ইউনিয়নের দুর্গাপুর, চর দুর্গাপুর, ভাকুম, চর ভাকুম, পূর্ব ভাকুম, পশ্চিম ভাকুম গ্রামে। গাজরের গ্রাম হিসেবেই এসব গ্রামের পরিচিতি গড়ে উঠেছে।

সরেজমিনে দেখা গেছে, ভোরে জমি থেকে গাজর তুলতে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষি শ্রমিকরা। দল বেঁধে গাজর তোলার কাজ করছেন তারা। শ্রমিকদের সঙ্গে গাজর ব্যবসায়ী ও কৃষকও রয়েছেন ফসলের মাঠে। গাজর তুলে সারিবদ্ধভাবে জমিতে ফেলে রাখা হয়। এরপর বস্তায় ভরে গাজর পরিষ্কার করার জন্য নেওয়া হয় মিলে। মিলে এনে পরিষ্কার করা হয়। সিঙ্গাইরের মাঠজুড়ে দেখা মিলবে গাজর তোলার দৃশ্য। জেলার চাহিদা মিটিয়ে এখানকার গাজর ঢাকাসহ দেশব্যাপী সরবরাহ করা হচ্ছে। বিদেশেও রপ্তানির সম্ভাবনা রয়েছে।

লাভজনক হওয়ায় ব্যাপক হারে গাজর চাষে ঝুঁকছেন এই অঞ্চলের কৃষক। কিন্তু বর্তমানে বীজ কীটনাশকের দাম বেশি হওয়ায় লোকসানের আশঙ্কায় গাজর চাষিরা। কৃষি দপ্তর ও স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, সিঙ্গাইর উপজেলায় গাজর চাষ শুরু হয় প্রায় দুই দশক আগে। প্রথমদিকে শুধু জয়মন্টপ ইউনিয়নের দেউলী-দশানী ও ধল্লা ইউনিয়নের নয়াপাড়ায় স্বল্প পরিসরে চাষ শুরু হয়। বর্তমানে গাজর চাষ হচ্ছে সমগ্র সিঙ্গাইরে। 

উপজেলার চর আজিমপুর গ্রামের কৃষক নজরুল ইসলাম প্রতিদিনের বাংলাদেশকে জানান, প্রতি বছরের মতো এবারও তিনি সাত বিঘা জমিতে গাজর চাষ করেছেন। এ বছর গাজর চাষে সাড়ে তিন লাখ টাকার বেশি খরচ হয়েছে। তবে গাজর বেচেছেন প্রায় সাত লাখ টাকা। এতে খরচ বাদে বিঘাপ্রতি ৪০ হাজার টাকা লাভ হবে। 

গাজর ব্যবসায়ী সিদ্দিক বলেন, ‘দুই যুগের বেশি সময় ধরে গাজরের ব্যবসা করি। শুরুর দিকে কারওয়ান বাজার থেকে গাজর কিনে নোয়াখালী ও চট্টগ্রামের পাইকারি বাজারে বিক্রি করতাম। তাতে খরচা বেশি আর লাভটাও কম হতো। তবে গত ১০ বছরে সিঙ্গাইরের কৃষকদের কাছে থেকে গাজর কিনছি। পরিবহন খরচ ও শ্রমিকের মজুরি দিন দিন বেড়ে যাওয়া লাভের পরিমাণ কম হচ্ছে।’

শ্রমিক ফজলুল হক বলেন, ‘খোলা তৈরি করে কয়েকজন পা দিয়ে ঘষে ঘষে গাজর পরিষ্কার করতাম। কিন্তু এ বছর মেশিন দিয়ে গাজর পরিষ্কার করা হচ্ছে। পা দিয়ে যেখানে ৮০ কেজির ১২০ বস্তা গাজর পরিষ্কার করা যেত, এখন মেশিনের সহায়তায় ৮০ কেজির ৩০০-৪০০ বস্তা পরিষ্কার করা যায়। আমাদের দলে ১০ জন আছে, ৮০ কেজির এক বস্তা গাজর ধুয়ে পরিষ্কার করে বস্তাবন্দি করা পর্যন্ত মজুরি ১২০ টাকা করে পাই। দিনে গড়ে ১০০-১১০ বস্তার কাজ করতে পারি এতে আয় রোজগার ভালোই হয়।

সিঙ্গাইর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা হাবিবুল বাশার চৌধুরী বলেন, ‘এই বছর সিঙ্গাইরে ৯৬০ হেক্টর জমিতে গাজরের আবাদ হয়েছে। দেশে গাজরের মোট চাহিদার ৪০ শতাংশ সিঙ্গাইর উপজেলায় আবাদ হয়।’ চলতি মৌসুমে বাজারদর ঠিক থাকলে উপজেলার কৃষকরা ৬৫ কোটি টাকার গাজর বিক্রি করতে পারবেন বলে তিনি জানান।

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক : মোরছালীন বাবলা

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা