মোরেলগঞ্জ পৌরসভা
এম. পলাশ শরীফ, মোরেলগঞ্জ
প্রকাশ : ০৩ মার্চ ২০২৫ ১৩:২৭ পিএম
বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জ পৌর শহরের বয়রাতলা এলাকায় গণশৌচাগারটি এখন বেদখল। প্রবা ফটো
বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জ পৌরসভার নাগরিক সেবা খুবই নিচে নেমে এসেছে। দীর্ঘদিন ধরে শহরের ১০টি গণশৌচাগারের অবস্থা খারাপ। ব্যবহার করাই যায় না এমন অবস্থায় দাঁড়িয়েছে। সংস্কার না করার ফলে এমনটা হয়েছে। কতগুলো বেদখলও হয়ে গেছে। এতে পৌর প্রশাসনের বিন্দুমাত্র মাথাব্যথা নেই। গণশৌচাগারের বেহাল দশার কারণে নাগরিক সেবা বিঘ্নিত হচ্ছে, এটা নিয়ে কর্তৃপক্ষ নির্বিকার থাকায় পৌরবাসী হতাশ ও ক্ষুব্ধ।
গণশৌচাগারগুলো ব্যবহার অনুপযোগী হয়ে পড়ায় জনভোগান্তি চরমে উঠেছে। সরেজমিন খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মোরেলগঞ্জ পৌরসভা পানগুছি নদীর তীরবর্তী দুই প্রান্তে ৯টি ওয়ার্ড নিয়ে গঠিত। এতে প্রায় ৩০ হাজার মানুষের বসবাস। পৌরসভাটি প্রথম শ্রেণিতে উন্নীত হওয়ার পরেও পরিবর্তনের ছোঁয়া লাগেনি গণশৌচাগার, রাস্তাঘাট, ড্রেনেজ ব্যবস্থা ও পয়ঃনিষ্কাশনে। সুপেয় পানির প্রচণ্ড অভাব রয়েছে। পৌরবাসী কাঙ্ক্ষিত নাগরিক সুবিধা থেকে বঞ্চিত তা দৃশ্যমান।
শহরের প্রাণকেন্দ্র বারইখালী ব্রিজ, সানকিভাঙ্গা খেয়াঘাট, মাছের বাজার, মুক্তিযোদ্ধা অফিস, কর্মকারপট্টি সড়কের বয়রাতলা, পৌর ভবন, নব্বইরশী বাসস্ট্যান্ডÑ এসব জায়গায় গণশৌচাগার রয়েছে। ২০০৭ সালে প্রলয়ঙ্করী ঘূর্ণিঝড় সিডর-পরবর্তী সময়ে ১০টি শৌচাগার নির্মাণ করা হয়। পরে পৌর কর্তৃপক্ষের তদারকির অভাব ও নির্দিষ্ট পরিচ্ছন্নতাকর্মী না থাকায় অধিকাংশ গণশৌচাগারের মোটার, পানির ট্যাংকসহ মালামাল চুরি হয়ে যায়। বর্তমানে ২-১টি সচল থাকলেও অধিকাংশই ব্যবহারের অনুপযোগী। যে কারণে প্রতিনিয়ত ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে প্রত্যন্ত গ্রামগঞ্জ থেকে উপজেলা শহরে আশা মানুষগুলোর। কর্মকারপট্টি সড়কের বয়রাতলা গণশৌচাগারটি হয়েছে বেদখল। সংস্কারের অভাবে ফাটল ধরে জরাজীর্ণ অবস্থায় পড়ে রয়েছে একাধিক শৌচাগার। মূল ফটকে নেই দরজা।
পৌরসভার সাবেক ৮ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘সানকিভাঙ্গা গণশৌচাগারটি নির্মাণের পর থেকেই মাটার ও পানির ট্যাংকসহ মালামাল চুরি হওয়ায় সেটি এখন আর ব্যবহার হচ্ছে না। জরাজীর্ণ অবস্থায় পড়ে রয়েছে। দূর-দূরান্ত থেকে আসা মানুষের ভোগান্তির অন্ত নেই।’ শৌচাগারগুলো সংস্কার করে সচল করার জন্য প্রশাসনের প্রতি জোর দাবি জানান তিনি।
স্থানীয় মাছ বাজার ব্যবসায়ী আনোয়ার হোসেন খান, জাকির খান ও বেলায়েত হোসেন বলেন, ‘শৌচাগার নির্মাণের পর থেকে আর কোনো সংস্কার হয়নি। নিজেদের অর্থ ব্যয় করে কোনোমতে মেরামত করে ব্যবহার করছেন তারা।’ পৌর কর্তৃপক্ষের কাছে এগুলো সংস্কার করে ব্যবহারের উপযোগী করে দেওয়ার দাবি জানান।
এ বিষয়ে পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী ওয়াজিহুর রহমান বলেন, ‘পৌরসভা এলাকায় গণশৌচাগারগুলোর অধিকাংশই ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। অচিরেই সংস্কার করে সচল করে তোলা হবে। ইতোমধ্যে শহরের জনগুরুত্বপূর্ণ দুটি শৌচাগার সংস্কার করে সেখানে দেখভালের জন্য পরিচ্ছন্নতাকর্মী নিয়োগের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।
এ সম্পর্কে নবাগত মোরেলগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) হাবিবুল্লাহ্ বলেন, ‘পৌরসভার গণশৌচাগারগুলো বেহাল দশার ব্যাপারে তিনি কিছু জানেন না।’ খোঁজখবর নিয়ে শৌচাগারগুলো ব্যবহার উপযোগী করে তোলার ব্যবস্থা নেবেন বলে জানান ইউএনও।