বাউফল (পটুয়াখালী) প্রতিবেদক
প্রকাশ : ০২ মার্চ ২০২৫ ১৬:৫৯ পিএম
আপডেট : ০২ মার্চ ২০২৫ ১৯:২৫ পিএম
ভুক্তভোগী মো. সাগরের মা বিউটি বেগম।
পটুয়াখালী বাউফলের এক যুবককে মালয়েশিয়ায় নিয়ে জিম্মি করে নির্যাতন ও মুক্তিপণ চাওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
রবিবার (২ মার্চ) ছেলেকে ফিরে পেতে এবং দালাল চক্রের সদস্যদের শাস্তি দাবিতে বাউফল থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন ওই যুবকের মা বিউটি বেগম।
ভুক্তভোগী মো. সাগর উপজেলার চন্দ্রদ্বীপ ইউনিয়নের দিয়ারা কচুয়া গ্রামের ইদ্রিস ফরাজির ছেলে। দেড় বছর আগে ভালো বেতনে চাকরি দেওয়ার কথা বলে তাকে পাঁচ লাখ টাকা চুক্তিতে মালয়েশিয়ায় নিয়ে যাওয়া হয়।
অভিযুক্ত ব্যক্তি একই উপজেলার দাশপাড়া গ্রামের প্রবাসী মো. আমিন হাওলাদার।
সাগরের মা বিউটি বেগম অভিযোগ করে বলেন, আমার ছোট ভাই সোহরাব প্যাদা ও তার শ্যালক আমিন হাওলাদার দীর্ঘদিন ধরে মালয়েশিয়া থাকেন। তিনি মালয়েশিয়ায় অনেক লোক নিয়েছেন। আমার ছেলেকেও ভালো বেতনে মালয়েশিয়ায় চাকরির প্রলোভন দেখায় আমার ভাই সোহরাব। বিনিময়ে তার শ্যালককে দিতে হবে ৫ লাখ টাকা। এর পর ধারদেনা করে টাকা জোগাড় করি। ভাইয়ের শ্যালক আমিন দেড় বছর আগে আমার ছেলেকে মালয়েশিয়া নিয়ে যান। বিদেশ নিয়ে ভালো চাকরি না দিয়ে উল্টো আমার ছেলেকে জিম্মি করে নির্যাতন শুরু করেন আমিন। ছেলের মুক্তির জন্য সাড়ে তিন লাখ টাকা দাবি করে। টাকা না দেওয়ায় ছেলের সঙ্গে আমাদের কোনো যোগাযোগ করতে দিচ্ছেন না তিনি। কয়েকদিন আগে আমাকে ফোন দিয়ে ছেলেকে মারধর করেন। ছেলের কান্নায় আমার বুকটা ফেটে গেছে। আর এসব কিছুর সঙ্গে সাথে আমার ভাই সোহরাব জড়িত। সোহরাবের বুদ্ধি-পরামর্শে তার শ্যালক আমার ছেলেকে জিম্মি করে নির্যাতন করতেছেন।
ছেলেকে ফিরে পেতে আকুতি জানিয়ে বিউটি বলেন, ভালো বেতনের জন্য আমার ছেলেকে বিদেশ পাঠিয়েছি। ভাবছি- ছেলের বেতনের টাকায় অসুস্থ স্বামীকে নিয়ে বাকি জীবন সুখে থাকব। সব স্বপ্ন শেষ। আমার ভাই ও তার শ্যালক আমার ছেলেকে বিদেশ নিয়ে নির্যাতন করতেছে। ছেলেকে আমাদের সঙ্গে কথাও বলতে দিচ্ছে না। ছেলেকে ফিরিয়ে আনতে সরকারের কাছে সহযোগিতা ও দোষীদের বিচার দাবি করেছেন বিউটি বেগম।
জিম্মি সাগরের মামা মো. ইউসুফ বলেন, দালাল আমিন প্রথমবার ২০২৩ সালে অবৈধভাবে মালয়েশিয়া নেওয়ার সময় আমার ভাগিনা সাগর থাইল্যান্ডে আটক হন। এক মাস ১৭দিন কারাভোগ করার পর তাকে মুক্তি দিয়ে বাংলাদেশে পাঠিয়ে দেয় থাইল্যান্ড সরকার। পরে বৈধ ভিসায় তাকে মালয়েশিয়া নেওয়া হয়। এর পর সেখানে আমার ভাগিনাকে নির্যাতন শুরু করেন আমিন। তিনি এখন মুক্তিপণ চাচ্ছে।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে আমিন হাওলাদারের হোয়াটসঅ্যাপে একাধিক বার ফোন করা হলেও তিনি কল রিসিভি করেনি।
সোহরাব প্যাদা বলেন, সাগরকে আমার শ্যালকের মাধ্যমে বিদেশে পাঠিয়েছি। তাকে বিদেশ পাঠাতে আমার অনেক টাকা খরচ হয়েছে। সেই টাকা এখনও পরিশোধ করা হয়নি। আর নির্যাতনের বিষয়ে কিছু জানি না।
এ বিষয়ে বাউফল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. কামাল হোসেন বলেন, লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।