ইলিশের অভয়ারণ্য
প্রবা প্রতিবেন
প্রকাশ : ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ১৯:৪৫ পিএম
আপডেট : ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ১৯:৫৫ পিএম
প্রবা ফটো
ইলিশের উৎপাদন বাড়াতে ও নদীতে জাটকার নিরাপদ বিচরণ নিশ্চিতে মার্চ-এপ্রিল দুই মাস সকল প্রকার মাছ শিকার নিষিদ্ধ করছে সরকার। শনিবার (১ মার্চ) থেকে এ নিষেধাজ্ঞা শুরু হয়ে চলবে ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত। নিষেধাজ্ঞা নিয়ে আমাদের প্রতিবেকদের পাঠানো খবর….
লক্ষ্মীপুর: লক্ষ্মীপুরের রামগতি-কমলনগরের মেঘনা নদীতে ইলিশসহ সবধরনের মাছ ধরার ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করছে সরকার। একই সঙ্গে এই দুই মাস ইলিশ মাছ ক্রয়, বিক্রয়,পরিবহন এবং মজুত নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে মৎস্য অধিদপ্তর।
ইলিশের অভয়াশ্রম হিসেবে রামগতির আলেকজান্ডার থেকে চাঁদপুরের ষাটনল পর্যন্ত একশ কিলোমিটার এলাকার আশপাশের বরফকলগুলোকেও নিষেধাজ্ঞা চলাকালে বন্ধ রাখতে বলা হয়েছে। নিষেধাজ্ঞা চলাকালীন মেঘনায় মাছ না ধরতে নদীর উপকূলীয় এলাকাসহ হাটবাজারগুলোতে মাইকিং, লিফলেট ও পোস্টারসহ বিভিন্ন সচেতনতামূলক প্রচারণা চালাচ্ছে জেলা-উপজেলা মৎস্য অধিদপ্তর।
এছাড়াও জেলেদের মাছ ধরা থেকে বিরত রাখতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সমন্বয়ে টাস্কফোর্স গঠন করা হয়েছে। নিষিদ্ধ সময়ে নদীতে মাছ শিকারে গেলে জেলেদের বিরুদ্ধে জেল-জরিমানার বিধান রয়েছে। নিষেধাজ্ঞার দুই মাসে প্রতিজন জেলে ভিজিএফের চাল পাবেন ৮০ কেজি করে।
চাঁদপুর: চাঁদপুরের পদ্মা-মেঘনা নদীর ৭০ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে জাটকা সংরক্ষণ অভিযান পরিচালনা করতে প্রস্তুত প্রশাসন। জাটকা সংরক্ষণ অভিযান সফল করতে জেলা প্রশাসন, মৎস্য বিভাগ, নৌ-পুলিশ ও কোস্টগার্ডসহ একটি ট্রাস্কফোর্স কমিটি করা হয়েছে। জেলা প্রশাসন থেকে জানানো হয়েছে, জাটকা রক্ষার অভিযান বিভিন্ন টিমে পর্যায়ক্রমে ২৪ ঘন্টা পদ্মা-মেঘনায় টহল থাকবে ট্রাস্কফোর্স।
চাঁদপুর নৌ-পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. ইমতিয়াজ আহমেদ জানান, চাঁদপুর অঞ্চলে ২৬ টিমে ২০০ পুলিশ পর্যায়ক্রমে নদীতে থাকবে। জাটকা নিধনের এই অভায়শ্রমে পুলিশ নিষ্ঠার সাথে দায়িত্ব পালন করবে।
চাঁদপুর মৎস্য বণিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক শবেবরাত বলেন, জেলেদেরকে প্রণোদণা দেয়া হলেও দেশের ইলিশের সবচেয়ে বড় বাজার চাঁদপুর বড় স্টেশন মাছ ঘাট। এই ঘাটে প্রায় ৩০০ শ্রমিক আছে। এই দুই মাস তাদেরকে প্রণোদনার আওতায় আনতে হবে। এদিকে জেলা মৎস্য অফিস থেকে জানানো হয়েছে, চাঁদপুরে এবার নিবন্ধিত জেলের সংখ্যা কমেছে। যাচাই-বাছাই শেষে ৪৪ হাজার জেলে থেকে ৪০ হাজার ৫ জন জেলেকে ৪০ কেজি করে দুই মাস ভিজিএফের চাল দেওয়া হবে।
ভোলা: ভোলার মেঘনা ও তেতুলিয়া নদী থেকে তাদের নৌকা, ট্রলার ও জালসহ মাছ ধরার সকল উপকরণ নদী থেকে নিয়ে এসেছেন। ২ মাসের নিষেধাজ্ঞা সফল করতে দ্রুত চাল বিতরণ, আগের চেয়ে বেশি চাল দেওয়া ও এনজিওর কিস্তি বন্ধ রাখাসহ নানান দাবি জানিয়েছেন ভোলার জেলেরা।
জেলা মৎস্য কর্মকর্তা বিশ্বজিৎ কুমার দেব জানান, ইলিশের অভায়াশ্রম ভোলার মেঘনার ৯০ কিলোমিটার ও তেতুলিয়া নদীর ১০০ কিলোমিটার এলাকায় সব ধরণের মাছ শিকারের ওপর নিষেধাজ্ঞা থাকবে।ভোলার সাত উপজেলা সরকারিভাবে নিবন্ধিত জেলের সংখ্যা রয়েছে ১ লাখ ৭০ হাজার ২৮৩ জন। এরমধ্যে এবছর ৪০ কেজি করে চাল পাবেন ৮৯ হাজার ৬০০ জন জেলে। জেলেদের নামে বরাদ্দকৃত চাল আগামীয় এক সপ্তাহের মধ্যে বিতরণ শুরু হবে। জেলেদের ঋণের কিস্তি আদায় দুই মাসের জন্য বন্ধের বিষয়ে তারা আলোচনা করবেন।