ভৈরব (কিশোরগঞ্জ) প্রতিবেদক
প্রকাশ : ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ১৯:১৫ পিএম
আপডেট : ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ১৯:২৭ পিএম
লটারি টিকেটে আগ্রহ মেলায় আসা দর্শনার্থীদের। প্রবা ফটো
কিশোরগঞ্জের ভৈরবে ২০ টাকার লটারি টিকেটে দারুণ লাভ করছে বিক্রেতারা। বাণিজ্য মেলাও জমে ওঠেছে। মাসব্যাপী এ মেলার শুক্রবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) ছিল শেষ দিন।
বিকালে মেলা প্রাঙ্গণে দেখা যায়, লটারি টিকেট কিনতে ক্রেতাদের উপচে পড়া ভিড়। ২০টিরও বেশি টিকেট বিক্রির কাউন্টার সাজিয়ে বসেছেন বিক্রেতার।
ক্রেতাদের মধ্যে দিনমজুর, অসহায়-গরিব ও কিশোরদের সংখ্যা বেশি। তবে কম নেই ধনীদের সংখ্যাও। নিজের ভাগ্য পরীক্ষায় ২৫টি টিকেট নিতেও দেখা গেছে অনেককে। মেলাকে ঘিরে ভিড় না থাকলেও লটারি ক্রয়-বিক্রয় ও শেষ রাতে ড্র উদযাপনে মানুষের উপস্থিতি চোখে পড়ার মতো। এদিকে শহরজুড়ে মাইকিংয়ের মাধ্যমেও মোটরসাইকেল সাজিয়ে ঘুরে ঘুরে টিকেট বিক্রি করতে দেখা গেছে।
ক্রেতারা বলছেন, লটারি হলো ভাগ্য পরীক্ষা। ২০ টাকার টিকেটে ভাগ্য পরীক্ষা করতেই টিকেট ক্রয় করছেন। এছাড়া টিকেট কেনা ও লটারিতে কোনোরকম গাফিলতি বা বেইমানি নেই। লটারিতে পুরস্কার পাওয়ার ভরসা থেকেই টিকেট কিনছেন তারা।
ব্যবসায়ী নোয়াজ মিয়া বলেন, আমি ২৫টি টিকেট কিনেছি। প্রতিদিন কেউ না কেউ প্রথম পুরস্কার মোটরসাইকেল, স্বর্ণালংকার, ফ্রিজ, ষাঁড়, গরুসহ বিভিন্ন পুরস্কার পাচ্ছে। তাই ভাগ্য পরীক্ষা করতে টিকেট কিনেছি।
মাছুম ও জেবুন্নেছা দম্পতি বলেন, আমার প্রথমদিকে মেলায় ঘুরতে আসতাম। এক জায়গায় প্রতিদিন আসা-যাওয়া ভালো লাগত না। এখন লটারি কেটে মেলায় আসি। লটারি দিয়েই মেলাটা জমে উঠেছে।
বিক্রেতা আকাশ ও আতিক বলেন, আমরা মেলা কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে এক হাজার করে টিকেট নিয়ে এসেছি। আমাদের শতাধিক বিক্রেতা রয়েছে। তবে সব টিকেট সবাই বিক্রি করতে পারে না।
বিক্রেতা রিপন বলেন, আমি এক হাজার টিকেট এনেছি। ৫০০ টিকেট ইতোমধ্যে বিক্রি করেছি। ড্র হওয়ার আগে সব টিকেট বিক্রি হতে পারে।
এদিকে টিকেট নিয়ে স্থানীয় সচেতন-সমাজের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে। কেউ কেউ বলছে মেলাটিকে জোয়ার আসরে পরিণত করা হয়েছে। মেলা ঘিরে শিক্ষা ও সংস্কৃতিকে গুরুত্ব না দিয়ে জুয়াকেই বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।
ভৈরব বাণিজ্য মেলার ম্যানেজার সুমন মিয়া বলেন, ১২ দিন যাবত ২০ টাকা করে লটারির টিকেট বিক্রি হচ্ছে। ইতোমধ্যে বেশ কয়েকটি মোটরসাইকেল, স্বর্ণালংকার, টিভি, ফ্রিজ ও গরুসহ বিভিন্ন ধরনের পুরস্কার দেওয়া হয়েছে। আজ মেলার শেষ দিনে ৪টি মোটরসাইকেল, এক ভরি স্বর্ণের কানের দুলসহ ৭১টি পুরস্কার রয়েছে। মেলাটিকে জমিয়ে রাখতেই লটারি বিক্রির কৌশল অবলম্বন করা হয়েছে। কোনো ব্যবসায়িক সুবিধা নিতে তা করা হয়নি। দীর্ঘদিন পর ভৈরবে বাণিজ্য মেলা হয়েছে। মেলাটি যেন সারা বছর চালিয়ে নেওয়া যায়, সেজন্য এ লটারির আয়োজন।
এ বিষয়ে কথা বলতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শবনম শারমিনকে একাধিকবার ফোন দিলেও তার ব্যবহৃত মোবাইল ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়।