মিঠাপুকুর (রংপুর) প্রতিবেদক
প্রকাশ : ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ১৭:৫৯ পিএম
প্রবা ফটো
রংপুরের মিঠাপুকুরে আদালতের আদেশ অমান্য করে খামারের মাছ লুট এবং চার শতাধিক আম কাছ কেটে ফেলার অভিযোগ উঠেছে ফকিরহাট উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আমিনুল ইসলাম বুলবুল এবং তার লোকজনের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী বাদী হয়ে মিঠাপুকুর থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।
বৃহস্পতিবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) রাতে উপজেলার চেংমারী ইউনিয়নের ফকিরহাট এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, ফকিরহাট উচ্চ বিদ্যালয়ের বেশকিছু জমির মালিকানা নিয়ে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এবং স্থানীয়দের দ্বন্দ্ব রয়েছে। এর মধ্যে বিদ্যালয়ের লিজ দেওয়া গিলাঝুঁকি মৌজায় ৭ একর ৯৩ শতাংশ একটি মাছের খামার এনামুল হক চৌধুরী (হীরা) ওয়ারিশ সূত্রে প্রাপ্ত বলে দাবি করে আসছিলেন। এমনকি খামারটি তিনি দখলে নিয়ে মাছ চাষ করে আসছেন।
এ বিষয়ে এনামুল হক চৌধুরী মিঠাপুকুর সিনিয়র সহকারী জজ আদালত, রংপুরে একটি রেকর্ড সংশোধনী মামলা দায়ের করেছেন। মামলা চলমান অবস্থায় তিনি খামার বেদখলের সম্ভবনা থেকে আদালতের মাধ্যমে একটি অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা জারি করেন। কিন্তু আদালতের নির্দেশ পাওয়ার পরও তা অমান্য করে ফকিরহাট উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আমিনুল ইসলাম বুলবুল ও তার লোকজন খামারে গিয়ে কেয়ারটেকার সাগর মিয়া ও মোকছেদ আলীকে মারধর করে মাছগুলো ‘লুট’ করেন এবং আমগাছগুলো কেটে ফেলেন।
এনামুল হক চৌধুরী বলেন, ‘প্রধান শিক্ষক তার ভাড়াটে লোকজন দিয়ে ভোরে আমার খামারের বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে মাছগুলো লুট করে নিয়ে গেছে এবং খামারের গাছ কেটেছে। খামারে ৩০০ মণের অধিক মাছ ছিল।’ তবে কি পরিমাণ মাছ লুটপাট এবং মারা গিয়েছে তা নেটজাল দিয়ে দেখার পর বুঝতে পারবেন বলে জানান তিনি।
খামারের কেয়ারটেকার সাগর মিয়া ও মোকছেদ আলী বলেন, আমিনুল ইসলাম বুলবুলের নেতৃত্বে তার ভাড়াটে লোকজন আমাদের বেধড়ক মারধর করেছে। আমরা ওই শিক্ষকের উপযুক্ত শাস্তি চাই।
খামারের নৈশপ্রহরী মোন্নাফ বলেন, ‘রাতে আমাকে ভয়ভীতি দেখায় এবং খামারে বিদ্যুৎ না থাকায় আমি বাড়ি চলে যাই। সকালে এসে দেখছি মরা মাছগুলো আশেপাশের লোকজন নিয়ে যাচ্ছে। গাছগুলো সব কেটে ফেলেছে। সম্ভবত মাছ নিয়ে যাওয়ার পর দুষ্কৃতিকারীরা এখানে বিষ প্রয়োগ করেছেন।’
অভিযোগের বিষয়ে জানতে প্রধান শিক্ষক আমিনুল ইসলাম বুলবুলের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘খামারটি বিদ্যালয় লিজ দিয়েছে, সুতরাং এটি বিদ্যালয়ের। সেখানে গাছ লাগানোর অধিকার অন্য কারও নেই।’ খামারের মাছ লুটের বিষয়টি তিনি অস্বীকার করে বলেন, ‘এ বিষয়ে আমি কিছুই জানি না।’
এ বিষয়ে মিঠাপুকুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু বক্কর সিদ্দিক বলেন, ‘ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছিল। তদন্ত সাপেক্ষ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’