মনিরুজ্জামান বাবলু, চাঁদপুর
প্রকাশ : ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ১০:৪৩ এএম
আপডেট : ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ১১:২৩ এএম
ছবি : সংগৃহীত
শুক্রবার মধ্যরাত থেকে টানা দুই মাস চাঁদপুরের পদ্মা-মেঘনাসহ দেশের ছয়টি অভায়াশ্রমে ইলিশসহ সব ধরনের মাছ ধরায় নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে সরকার। জেলেরা জাল, নৌকাসহ মাছ ধরার সরঞ্জাম নিয়ে ফিরছেন তীরে। এদিকে জেলেদের প্রণোদনা হিসেবে চার ধাপে ৪০ কেজি করে চাল বরাদ্দ দেওয়ার কথা জানিয়েছে মৎস্য বিভাগ।
চাঁদপুরের মতলবের ষাটনল থেকে হাইমচর উপজেলার চরভৈরবী পর্যন্ত ৭০ কিলোমিটার এলাকায় মার্চ-এপ্রিল দুই মাসে ইলিশসহ কোনো ধরনের মাছ ধরা যাবে না। এ ঘোষণায় ইতোমধ্যে জেলেরা তাদের জাল, নৌকাসহ সরঞ্জাম নিয়ে পদ্মা-মেঘনার তীরে ফিরছেন। ইতোমধ্যে জেলা প্রশাসন ও মৎস্য বিভাগ থেকে জেলেদের নিয়ে মতবিনিময়, লিফলেট বিতরণ ও মাইকিং করা হয়েছে। এ সময়ে ইলিশ মাছ ক্রয়-বিক্রয়, পরিবহন ও মজুদ সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ থাকবে। দুই মাসের বেকারত্ব নিয়ে দুশ্চিন্তায় জেলেরা। সরকারের পক্ষ থেকে পাওয়া বরাদ্দ তাদের জন্য অপ্রতুল, দাবি তাদের।
লক্ষ্মীপুর ইউনিয়নের মধ্য সাখুয়া গ্রামের জেলে ইসমাইল হোসেন বলেন, মার্চ মাসের দিকে জেলেদের যে জাটকা প্রতিরোধের ২ মাসের অভিযান শুরু হবে, এটি সফল হবে যদি বাংলাদেশ কোস্ট গার্ড এবং নৌ-বাহিনী দায়িত্ব পালন করে। তাহলে অসৎ জেলেরা এই গাঙের জাটকা ধরতে পারবে না।
পুরানবাজার রনগোয়াল এলাকার জেলে শাহজাহান মিয়া বলেন, সরকার আমাদের যে চাল দেয়, এই চালে তো আমাদের সব চাহিদা মেটে না। আমাদের সরকার যদি এর মধ্যে জেলেদের আর্থিক সহযোগিতা করে টাকাপয়সা দিয়ে, তাহলে জেলেরা ও আমরা যারা আছি সবাই উপকৃত হতাম।
চাঁদপুর লঞ্চঘাট এলাকার জেলে জাহাঙ্গীর আলম রাজু বলেন, আমরা এখন থেকে সবকিছু ওপরে তুলে ফেলছি। ২ মাস আমাদের বেকার থাকতে হবে। সরকার আমাদের যে চাল দেয় এই চালে আমাদের হয় না।আমাদের কিস্তি আছে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে যদি আমাদের কিস্তি বন্ধ করে দেওয়া হয় তাহলে উপকার হবে। সরকার যদি আমাদের আর্থিক সহযোগিতা করে তাহলে আমাদের বাচ্চাদের পড়ালেখা করাতে সুবিধা হয়।
জাটকা সংরক্ষণ অভিযান সফল করতে মৎস্য বিভাগ, কোস্ট গার্ড, নৌ-পুলিশসহ টাস্ক ফোর্সের সদস্যরা পর্যায়ক্রমে ২৪ ঘণ্টা নদীতে টহল দিতে প্রস্তুতি নিয়েছে। এবার নিবন্ধিত ৪০ হাজার ৫ জন জেলেকে ভিজিএফ কর্মসূচির আওতায় আনা হয়েছে বলে জানান জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. গোলাম মেহেদী হাছান।
তিনি বলেন, জেলেদের যে ভিজিএফ কর্মসূচি সেটা ইতোমধ্যে চলে এসেছে এবং ইউনিয়ন পরিষদের অনুকূলে আমরা বরাদ্দ দিয়ে দিয়েছি। খুব দ্রুতই বিতরণ শুরু হচ্ছে। বিভিন্ন লোনের যে বিষয়টা ক্ষুদ্র ঋণÑ এই কিস্তি যেন না দিতে হয় এই জন্য জেলা প্রশাসক থেকে চিঠি দেওয়া হয়েছে। আমরা আশা করছি যে, জেলেরা এবার নদীতে নামবে না। এবং আমাদের একেবারে ৪০,০০৫ জন জেলেকে এই ভিজিএফ কর্মসূচির আওতায় নিয়ে এসেছি। এবং প্রত্যেক মাসে তাদের ৪০ কেজি করে ভিজিএফ কর্মসূচি দেওয়া হবে। এবং চার মাস এটা অব্যাহত থাকবে।
আইন অমান্য করে কেউ জাটকা ইলিশ আহরণ করলে তার বিরুদ্ধে মৎস্য আইনে দুই বছর কারাদণ্ড, ৫ হাজার টাকা জরিমানা অথবা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত করার বিধান রাখা হয়েছে।