বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক
প্রকাশ : ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ২১:৪১ পিএম
বুধবার সকালেচট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে এক অনুষ্ঠানে কথা বলেন বন, পরিবেশ ও জলবায়ু বিষয়ক উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। প্রবা ফটো
বন, পরিবেশ ও জলবায়ু বিষয়ক উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেছেন, গবেষণা কেবল শিক্ষকদের কাজ নয়, বাংলাদেশের অনেক কৃষকও গবেষণা করছে। তারা নতুন নতুন ফসলের প্রজাতি উদ্ভাবন করছে। যদিও এটি প্রথাগত গবেষণা হিসেবে গণ্য হয় না, তবে তাদের কাজের যথেষ্ট মূল্য রয়েছে। গবেষণা কোনো অভিজাত বিষয় নয়, এটি মানুষের সঙ্গে মানুষের কাজ করার মাধ্যমও।
বুধবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) সকাল ১০টায় চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের বুদ্ধিজীবী চত্বরে জামাল নজরুল ইসলাম গণিত ও ভৌতবিজ্ঞান গবেষণা কেন্দ্রের উদ্যোগে আয়োজিত ‘চট্টগ্রাম গবেষণা ও উদ্ভাবন মেলা ২০২৫’-এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি আরও বলেন, 'গবেষণার জন্য সবচেয়ে জরুরি বিষয় হলো বস্তুনিষ্ঠতা। যদি আমি সরকারি প্রতিষ্ঠানে গবেষণা করি, তাহলে সেই গবেষণার ফলাফল প্রভাবিত হওয়ার আশঙ্কা থাকে। গবেষণার নিরপেক্ষতা রক্ষা করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।'
গবেষণা মেলায় চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়সহ চট্টগ্রাম বিভাগের ভেতরে ও বাইরে শতাধিক স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভাগ, গবেষণাগার ও গবেষণা ইনস্টিটিউট অংশ নেয়। প্রায় ১২০ এর অধিক স্টলে গবেষণাকর্ম এবং বিগত বছরের গবেষণায় অবদান তুলে ধরা হয়। এতে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ৭টি অনুষদের ৪৭টি বিভাগ এবং ৩৪টি ল্যাবরেটরি ও গবেষণা ইনস্টিটিউট অংশগ্রহণ করে।
সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান শব্দ দূষণের প্রসঙ্গ টেনে বলেন, 'বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে প্রচন্ড রকমের হর্ন বাজছে। এটা নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ আমরা একটা কাজ করেছি। এটা যদি প্রত্যেক মানুষকে জানানো যায় যে, হর্ন বাজানোটা অত্যন্ত ক্ষতিকর এবং বেআইনি। এদেশে অনেকেই জানে না যে হর্ন বাজানো একটা বেআইনি কাজ। অনেক মানুষ এই হর্ন ইচ্ছে করেই বাজায়। আমরা যদি মানুষের মাঝে সচেতনতার বার্তা ছড়িয়ে দিতে পারি। তাহলে আমরা এই শব্দ দূষণ থেকে কিছুটা হলেও রক্ষা পাবো। '
গবেষণা মেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. ইয়াহইয়া আখতার বলেন, 'সরকারের উচিত শিক্ষাকে সংস্কারের মাধ্যমে গবেষণাবান্ধব করা। শিক্ষাকে অবহেলা করলে জাতির মেরুদণ্ড দুর্বল হয়ে যাবে। আমি সরকারের প্রতি আহ্বান জানাই, যেন একটি কমিশন গঠন করে শিক্ষাকে শিক্ষার্থীবান্ধব ও গবেষণাবান্ধব করা হয়।'
গবেষণা ও উদ্ভাবন মেলার উদ্বোধনী পর্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের বন, পরিবেশ ও জলবায়ু বিষয়ক উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। মেলার উদ্বোধন করেন চবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. ইয়াহইয়া আখতার। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন উপ-উপাচার্য (একাডেমিক) অধ্যাপক ড. শামীম উদ্দিন খান, উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. কামাল উদ্দিন, বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড.আল-আমিন, এ এফ মুজিবুর রহমান ফাউন্ডেশন এর ট্রাস্টি এম. নুরুল আলম এবং জামাল নজরুল গবেষণা কেন্দ্র পরিচালনা পর্ষদের সদস্য সাদাফ সাজ সিদ্দিকী।
অনুষ্ঠানে আরো বক্তৃব্য রাখেন গুগলের পদকবিজয়ী গবেষক সাউদার্ন ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ড. ইয়াসির খান। গবেষণায় জামাল নজরুল ইসলাম স্মারক বক্তৃতা রাখেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. কামরুল হাসান মামুন।