সালথা-নগরকান্দা (ফরিদপুর) প্রতিবেদক
প্রকাশ : ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ২০:৪১ পিএম
নগরকান্দায় কৃষিজমি ধ্বংস করে অবাধে পুকুর খনন ও মাটি বিক্রি চলছে। প্রবা ফটো
ফরিদপুরের নগরকান্দায় কৃষিজমি ধ্বংস করে অবাধে পুকুর খনন ও মাটি বিক্রির অভিযোগ উঠেছে। পাট, পেঁয়াজ ও আমন ধানের উর্বর জমি থেকে প্রকাশ্যে মাটি কেটে বিক্রি করা হলেও প্রশাসনের কার্যকর তৎপরতা দেখা যাচ্ছে না। এতে দিন দিন সংকুচিত হচ্ছে আবাদি জমি, ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে পরিবেশ ও গ্রামীণ অবকাঠামো।
স্থানীয়দের অভিযোগ, একটি প্রতারক চক্র উপজেলা প্রশাসনের নাম ভাঙিয়ে অবৈধভাবে ফসলি জমির মাটি কাটছে ও ইটভাটায় বিক্রি করছে। ট্রলি ও ভেকু দিয়ে চলছে এই অবৈধ কর্মকাণ্ড। নগরকান্দার বিভিন্ন সড়কে সারাদিনই মাটি বোঝাই ট্রলি চলাচল করছে, যা রাস্তাঘাটের মারাত্মক ক্ষতি করছে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, লস্করদিয়া ইউনিয়নের গোড়াইল এলাকায় মাটি ব্যবসায়ী কামরুল শেখ দীর্ঘদিন ধরে ফসলি জমি নষ্ট করে অবৈধ মাটি ব্যবসা চালিয়ে আসছেন। প্রভাবশালী ব্যক্তিদের ছত্রছায়ায় থাকা এই চক্রে হান্নান মাতুব্বর, পাপ্পু, রিজাউল, রমজান, ওহিদ, ওলিউর, বসার, মারুফ ও ফরহাদসহ একাধিক ব্যক্তি জড়িত বলে জানা গেছে।
স্থানীয় বাসিন্দারা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, অবৈধভাবে মাটি কেটে রাস্তা নষ্ট করা হচ্ছে, বৃষ্টি হলে কাদা জমে দুর্ঘটনার ঝুঁকি বাড়ছে। পরিবেশও মারাত্মকভাবে দূষিত হচ্ছে, শিশু ও বৃদ্ধরা স্বাস্থ্যঝুঁকিতে পড়ছে। শীঘ্রই ব্যবস্থা না নিলে কৃষিজমি ও পরিবেশের অপূরণীয় ক্ষতি হবে।
লস্করদিয়া ইউনিয়নের গোড়াইল গ্রামের আবদুল কাইয়ুম মেম্বার বলেন, আমরা বাধা দিলেও মাটি ব্যবসায়ী কামরুল থামছে না। রাস্তা ভেঙে যাচ্ছে, প্রশাসন ব্যবস্থা না নিলে গ্রামবাসী মাঠে নামতে বাধ্য হবে।
কৃষি জমি থেকে অবৈধভাবে মাটি কাটার বিষয় জানতে চাইলে কামরুল শেখ এই প্রতিবেদককে বলেন, কৃষি জমি থেকে মাটি কাটতে আমার কোনো আইনের ধার ধরতে হয় না। নগরকান্দায় কৃষি জমি থেকে মাটি কাটার বিষয়ে প্রশাসন দেখবে, সাংবাদিকদের এ নিয়ে মাথা ঘামানোর দরকার নেই।
এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা তিলক কুমার ঘোষ বলেন, কৃষিজমির মাটি কাটার ফলে আবাদি জমির পরিমাণ কমছে, যা দুঃখজনক। আমরা সচেতনতার চেষ্টা করছি, তবে আইন প্রয়োগের ক্ষমতা আমাদের নেই।
উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. মাসুম বিল্লাহ বলেন, অবৈধভাবে মাটি কাটলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।