নেশাদ্রব্য মেশানো খাবার খেয়ে শিশুসহ অচেতন ১২

লক্ষ্মীপুরের কমলনগরে খাবারের সঙ্গে চেতনানাশক দ্রব্য মিশিয়ে শিশুসহ ১২ জন নারী-পুরুষকে অচেতন করেছে দুর্বৃত্তরা। ভুক্তভোগী সবাই একই বাড়ির তিন পরিবারের সদস্য। এদের মধ্যে চারজন শিশু রয়েছে।

অচেতন অবস্থায় তাদের উদ্ধার করে প্রথমে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। অবস্থার অবনতি হলে উন্নত চিকিৎসার জন্য কর্তব্যরত চিকিৎসক অচেতন ৯ জনকে লক্ষ্মীপুর সদর হাসপাতালে পাঠান।

মঙ্গলবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) রাতে উপজেলার চর ফলকন ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ড এলাকার শাহজাহান মির্দার বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে। এর মধ্যে একজনের জ্ঞান ফিরে আসে। এর আগে রাতের খাবার খেয়ে অচেতন হয়ে পড়েন তারা।

ভুক্তভোগীরা হলেন- মো. শাহজাহান মির্দা, নুর ভানু, পান্না আক্তার, আকলিমা বেগম, আরমান হোসেন, পিংকি বেগম, মো. নিশান ও মো. নুরুজ্জামান। ভুক্তভোগী শিশুরা হলেন- ইমরান হোসেন, নুসরাত, মরিয়ম ও পলি আক্তার।

জ্ঞান ফিরে আসা পলি আক্তার বলেন, মঙ্গলবার বিকালে প্রতিদিনের মতো রান্না-বান্না শেষ করে ঘরের দরজা বন্ধ করে পরিবারের সবাই মিলে প্রতিবেশী এক বাড়িতে বিয়ের অনুষ্ঠান উপভোগ করতে যাই। এর পর ফিরে এসে রান্না করা হাঁসের মাংস দিয়ে রাতের খাবার খেয়ে ঘুমিয়ে পড়ি। এ সময় দুই শিশু বমি করলেও বিষয়টি অনুমান করতে পারিনি আমরা। পরে জ্ঞান ফিরে দেখি আমি হাসপাতালে।

ভুক্তভোগী শাহজাহান মির্দার ভাতিজা ও স্থানীয় আবুয়াল হোসেন কমিউনিটি ক্লিনিকের (সিএইচসিপি) হেলথকেয়ার প্রোভাইডার মো. কামরুল ইসলাম বলেন, বিয়েবাড়িতে অনুষ্ঠান দেখতে যাওয়ার কোনো এক ফাঁকে দুর্বৃত্তরা রান্না করা খাবারের সঙ্গে চেতনানাশক দ্রব্য মিশিয়ে রাখে। পরে ওই খাবার খেয়ে বাড়ির তিন পরিবারের ১২ জন সদস্য অচেতন হয়ে পড়েন। এ সময় পরিবারের অপর সদস্যরা রাতে বাড়ি ফিরে বারবার ডাকাডাকি করেও কোনো সাড়া না পেয়ে দরজা ভেঙে ঘরে ঢুকে সবাইকে অচেতন অবস্থায় দেখতে পান। পরে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় ভুক্তভোগীদের। তবে ঘরের জিনিসপত্র লুটের বিষয়ে কোনো তথ্য দিতে পারেননি তিনি।

স্থানীয় আবুবকর ছিদ্দিক, নুরুন্নবী ও সালেহা বেগম বলেন, পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী খাবারে নেশাদ্রব্য মেশানো হয়েছে বলে আমাদের ধারণা। কারণ খাবারের পরই সবাই আস্তে আস্তে অচেতন হয়ে পড়েন। যে একজন সুস্থ আছেন, তিনি রাতের খাবার খুবই কম খেয়েছেন। সে কারণে তিনি পুরোপুরি অচেতন হননি।

কমলনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার ডা. সোহেল রানা জানান, অচেতন অবস্থায় নিয়ে আসা শিশুসহ ৯ জনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য লক্ষ্মীপুর সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। তিনজনকে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে। তবে ধারণা করা হচ্ছে খাবারের সঙ্গে নেশা জাতীয় দ্রব্য খাওয়ানো হয়েছে অসুস্থদের।

কমলনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. তৌহিদুল  ইসলাম জানান, খবর পেয়ে হাসপাতালে পুলিশ পাঠিয়েছি। ঘটনার বিষয়ে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।