নড়াইল প্রতিবেদক
প্রকাশ : ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ১৬:২৭ পিএম
আপডেট : ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ১৬:৩৬ পিএম
বীরশ্রেষ্ঠ নূর মোহাম্মদ শেখ। ছবি: সংগৃহীত
বীরশ্রেষ্ঠ নূর মোহাম্মদ শেখের ৮৯তম জন্মদিন বুধবার (২৬ ফেব্রুয়ারি)।
এ উপলক্ষে ‘নূর মোহাম্মদ ট্রাস্ট’ ও জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে নূর মোহাম্মদ নগরে কোরআন তেলাওয়াত, শোভাযাত্রা, স্মৃতিস্তম্ভে গার্ড অব অনার প্রদান ও পুষ্পস্তবক অর্পণ, আলোচনা সভা ও দোয়ার আয়োজন করা হয়েছে।
১৯৩৬ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি নড়াইল সদর উপজেলার চন্ডিবরপুর ইউনিয়নের মহিষখোলা (বর্তমান নাম নূর মোহাম্মদনগর ) গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন তিনি। তার বাবার নাম মোহাম্মদ আমানত শেখ এবং মার নাম জেন্নাতুন্নেছা। বাল্যকালেই বাবা-মাকে হারান তিনি। সপ্তম শ্রেণি পর্যন্ত লেখাপড়া করেছেন বীরশ্রেষ্ঠ নূর মোহাম্মদ শেখ। তার জন্মভূমি মহিষখোলার নাম পরিবর্তন করে ২০০৮ সালের ১৮ মার্চ নূর মোহাম্মদনগর করা হয়।
বীরশ্রেষ্ঠ নূর মোহাম্মদের কর্মময় জীবন থেকে জানা যায়, ১৯৫৯ সালের ১৪ মার্চ তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান রাইফেলসে (ইপিআর) যোগ দেন তিনি। যা বর্তমানে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) হিসেবে প্রতিষ্ঠিত। দীর্ঘদিন দিনাজপুর সীমান্তে চাকরি করার পরে ১৯৭০ সালের ১০ জুলাই যশোর সেক্টরে বদলি হন নূর মোহাম্মদ। পরবর্তীতে ল্যান্স নায়েক হিসেবে পদোন্নতি পান তিনি।
১৯৭১ সালে যশোর অঞ্চল নিয়ে গঠিত ৮ নম্বর সেক্টরে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেন তিনি। নূর মোহাম্মদ শেখ যশোরের শার্শা উপজেলার কাশিপুর সীমান্তের বয়রা অঞ্চলে ক্যাপ্টেন নাজমুল হুদার নেতৃত্বে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেন। ১৯৭১ সালের ৫ সেপ্টেম্বর যশোরের গোয়ালহাটি ও ছুটিপুরে পাকিস্তানি বাহিনীর সঙ্গে সম্মুখ যুদ্ধে গুলিতে সহযোদ্ধা নান্নু মিয়া গুরুতর আহত হলে নূর মোহাম্মদ শেখ হাতে এলএমজি এবং কাঁধে আহত সাথিকে নিয়ে শত্রুপক্ষের দিকে এগিয়ে যান এবং গুলি ছুঁড়তে থাকেন।
এ সময় শত্রুদের ছোড়া মর্টার শেলের আঘাতে মারাত্মক জখম হন তিনি। দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ নূর মোহাম্মদ আশঙ্কাজনক অবস্থায়ও নিজের জীবনের কথা না ভেবে যুদ্ধ চালিয়ে যান এবং গুলি চালাতে চালাতে সামনের দিকে অগ্রসর হন। এক সময় মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন তিনি। এদিন পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীকে প্রতিরোধ এবং দলীয় সঙ্গীদের জীবন ও অস্ত্র রক্ষা করতে গিয়ে শহীদ হন নূর মোহাম্মদ শেখ। তাকে যশোরের শার্শা উপজেলার কাশিপুরে সমাহিত করা হয়।