পঞ্চগড় প্রতিবেদক
প্রকাশ : ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ১৬:০৩ পিএম
আপডেট : ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ১৭:৩১ পিএম
বুধবার দুপুরে পঞ্চগড় চিনিকল মাঠে জেলা জামায়াতে ইসলামীর আয়োজিত জনসভায় জনসভায় বক্তব্য দেন ডা. শফিকুর রহমান। প্রবা ফটো
জামায়াতে ইসলামী আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, গডফাদার, গডমাদার কিংবা মাফিয়াতন্ত্রের বাংলাদেশ দেখতে চাই না, ফ্যাসিবাদের বাংলাদেশ দেখতে চাই না।
বুধবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে পঞ্চগড় চিনিকল মাঠে জেলা জামায়াতে ইসলামীর আয়োজিত এক জনসভায় এসব কথা বলেন।
জামায়াতের আমির বলেন, দুনিয়ার সব দেশ, দেশের মানুষ আমরা একই বিশ্ব সভার সদস্য। ভারত আমাদের নিকটতম প্রতিবেশী। আমরা আমাদের প্রতিবেশীকে অহেতুক কষ্ট দিতে চাই না। তবে আমাদের প্রতিবেশীও যাতে আমাদের ওপর এমন কিছু চাপিয়ে না দেয়, যা বাংলাদেশের মানুষের জন্য সম্মানজনক নয়। যদি এরকম তারা কিছু করে, দেশের স্বার্থে আমরা সেদিন ভূমিকা পালন করতে কারো চোখের দিকে তাকাব না। আমরা বিবেকের দিকে তাকিয়ে, বিবেকের দায়বদ্ধতা থেকে দায়িত্ব পালন করতে বাধ্য হব।
তরুণ সমাজের উদ্দেশে ডা. শফিকুর রহমান বলেন, আমি ছাত্র ভাইদের বলছি। একদিনের জন্য তোমাদের বেকারত্বের অভিশাপের বোঝা বহত করতে হবে না। পড়াশোনা শেষ করে তরুণরা সার্টিফিকেট নিয়ে বের হবে সঙ্গে সঙ্গে তাদের কাজের ব্যবস্থা হবে। মা বোনদের বলতে চাই তোমাদের উন্নয়নে সমাজের উন্নয়নে এমন একটা মানবিক বাংলাদেশ আমরা গড়তে চাই।
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশ এবং জাতিসংঘ যৌথ উদ্যোগে ১৯৭২ সালের ১০ জানুয়ারী থেকে আজকে ২৬ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত যত ঘটনা ঘটেছে এরকম সেগুলো অনুসন্ধান করে একটি শ্বেতপত্র প্রকাশ করা হোক। তাহলে জনগণ জানতে পারবে। কারা সত্যিকার অর্থে মানুষ খুন করেছে, ইজ্জ্বত লুণ্ঠন করেছে, সম্পদ লুণ্ঠন করেছে।
জামায়াত আমির বলেন, কিসের সংখ্যালঘু আর কিসের সংখ্যাগুরু। এদেশে যেই জন্ম নিয়েছে, সেই এদেশের গর্বিত নাগরিক। আমরা নাগরিকদের ভাগ বাটোয়ারা কোনো ধর্ম বা দলের ভিত্তিতে করার পক্ষে নই। অতীতের পতিত স্বৈরাচারী জাতিকে ভেঙ্গে টুকরো টুকরো করে মুখোমুখি লাগিয়ে রেখেছিল। যে দেশের মানুষ ঐক্যবদ্ধ থাকতে পারে না, সে দেশের মানুষ মাথা সোজা করে বিশ্ব দরবারে সম্মানের সঙ্গে দাঁড়াতে পারে না। স্বাধীনতার ৫৪ বছর গেল, আর কতদিন আমাদেরকে টুকরো টুকরো করা হবে। আমাদের স্পষ্ট ঘোষণা আমরা কোন মেজরিটি বা মাইনরিটি মানি না।
২০২২ সালের পঞ্চগড়ে ভয়াবহ নৌকাডুবির ঘটনায় হিন্দু সম্প্রদায়ের নিহত ৭২ জনের পরিবারের সদস্যদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, তোমাদেরকে আমরা আমাদের পরিবারের সদস্য হিসেবে ধারণ করলাম। যতদিন বেঁচে থাকি, সেই ফিলিংস নিয়ে বেঁচে থাকব ইনশাল্লাহ। আমরা বাংলাদেশকে একটি মানবিক বাংলাদেশ হিসেবে গড়ে তুলতে চাই।
জেলা জামায়া আমির অধ্যাপক ইকবাল হোসাইনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা আব্দুল হালিম, কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান বেলাল, জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি জাগপার চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার তাসমিয়া প্রধান প্রমুখ।
এর আগে জেলার ৫ উপজেলা ও পৌরসভা, ইউনিয়ন থেকে ছোট ছোট মিছিল নিয়ে জনসভায় আসেন জামায়াত, শিবির ও অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা।