দুই শিক্ষক নিহত
সালথা-নগরকান্দা (ফরিদপুর) প্রতিবেদক
প্রকাশ : ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ১৮:২২ পিএম
আপডেট : ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ১৮:২৯ পিএম
মঙ্গলবার সকালে সালথা-ফরিদপুর সড়কের মেম্বার গট্টি এলাকায় বিক্ষোভ করেন শিক্ষার্থীরা। প্রবা ফটো
মাহিন্দ্রা (থ্রি হুইলার) গাড়ি চলাচল বন্ধের দাবিতে সালথা-ফরিদপুর আঞ্চলিক সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছে শিক্ষার্থীরা।
মঙ্গলবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) সকাল ১০টা-সাড়ে ১১টা পর্যন্ত সালথা-ফরিদপুর সড়কের মেম্বার গট্টি এলাকায় এ বিক্ষোভ করেন শিক্ষার্থীরা। সম্প্রতি সড়ক দুর্ঘটনায় পরপর দুজন শিক্ষক নিহত ও দুজন পঙ্গু হওয়ার ঘটনায় এ বিক্ষোভ করেন তারা।
এ সময় সড়কের ওপর দুটি গাছের গুড়ি ও বাঁশ ফেলে যানবাহন চলাচল বন্ধ করে দেন বিক্ষোভকারীরা। এতে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়। খবর পেয়ে সালথা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আনিছুর রহমান বালী, সালথা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আতাউর রহমান ও উপজেলা বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক খন্দকার খায়রুল বাসার আজাদ ঘটনাস্থলে এসে শিক্ষার্থীদের দাবি মেনে নেওয়ার আশ্বাস দেন। এর পর শিক্ষার্থীরা ইউএনওর কাছে বেশ কয়েকটি দাবি-দাওয়া তুলে ধরে সড়ক অবরোধ তুলে নেয়।
বিক্ষোভে বক্তব্য দেন- শিক্ষার্থী নাজমুল হাসান, শাহিন খা, সাকিবুল ইসলাম, সজিব শেখ, তুহিন হাসান, মাইমুনা সুলতানা, মারজিয়া ও রাদিয়া আক্তার।
তারা বলেন, শনিবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) স্কুল থেকে বাসায় ফেরার পথে মাহিন্দ্র গাড়ির নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে খাদে পড়ে রাঙ্গারদিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আসমা বেগম নিহত হন। এর আগে ২০২৪ সালের ২১ নভেম্বর সড়ক দুর্ঘটনায় গোয়ালপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. এসকেন্দার আলী মারা যান। এছাড়া সম্প্রতি মাহিন্দ্রা দুর্ঘটনায় খারদিয়া মিয়া মিয়াপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রাজিয়া আক্তার গুরুতর আহত হন। পরে তার পা কেটে ফেলা হয়। একইভাবে ভাওয়াল সরকারি প্রথামিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আক্তারুজ্জামান পঙ্গু হন।
শিক্ষার্থীরা বলেন, বাস চলাচল বন্ধ থাকায় সালথা-ফরিদপুর সড়ক মাহিন্দ্রা গাড়ি দখল করে নিয়েছেন। এ গাড়ি বেপরোয়া গতিতে চলাচল করছে। অদক্ষ ও নেশাগ্রস্ত ড্রাইভাররা মাহিন্দ্রা গাড়ি চালাচ্ছেন। এমনকি শিশুদের হাতে মাহিন্দ্রা গাড়ি তুলে দিচ্ছে পরিবার। যে কারণে প্রতিনিয়ত ঘটছে ভয়াবহ দুর্ঘটনা। এতে একের পর এক মৃত্যুর ঘটনা ঘটছে। অনেকে পঙ্গু হয়ে ঘরে বসে আছে। এমন অবস্থায় আমরা এ সড়কে আর মাহিন্দ্রা গাড়ি চালাতে দেব না।
সালথা-ফরিদপুর সড়কে বাস চালু করার জন্য তিন দিনেরে আল্টিমেটাম দিয়ে বলেন, সালথা-ফরিদপুর সড়কে মাহিন্দ্রা গাড়ি চলাচল বন্ধ করে নতুন করে বাস চালু করার জন্য প্রশাসন ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষন করছি। আগামী তিনদিনের মধ্যে যদি মাহিন্দ্রা বন্ধ করে বাস চালু না করা হয়, তাহলে শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে দুর্বার আন্দোলন গড়ে তোলা হবে।
ইউএনও মো. আনিছুর রহমান বালী বলেন, শিক্ষার্থীরা সালথা-ফরিদপুর সড়কে মাহিন্দ্রা গাড়ি চলাচল বন্ধ করে বাস চালুর দাবি জানিয়ে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছিল। খবর পেয়ে ওসিসহ আমরা ঘটনাস্থলে গিয়ে শিক্ষার্থীদের দাবির সঙ্গে একমত পোষণ করেছি। আমরা শিক্ষার্থীদের দাবিগুলোর বিষয় উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে জানাব। এর একটা সমাধান করে দেব।
তিনি বলেন, পাশাপাশি বাস চালু করার বিষয় মালিক সমিতির সঙ্গে যোগাযোগ করা হবে। আশা করি, শিক্ষার্থীদের দাবিগুলো পূরণ হবে।