রাঙামাটি প্রতিবেদক
প্রকাশ : ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ২১:৩৫ পিএম
আপডেট : ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ২১:৩৬ পিএম
মেঘ-পাহাড়ের উপত্যকা রাঙামাটির সাজেক ভ্যালি পর্যটনকেন্দ্রে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে অন্তত ৯৫টি স্থাপনা পুড়ে গেছে। সোমবার দুপুর সোয়া ১টার দিকে সাজেক ভ্যালি পর্যটনকেন্দ্রের অবকাশ ম্যানুয়েল রিসোর্টসহ আশপাশের এলাকায় আগুন ছড়িয়ে পড়ে বলে জানিয়েছে জেলা প্রশাসন।
সোমবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) রাতে জেলা প্রশাসন এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, দুপুর সোয়া ১টার দিকে আগুনের সূত্রপাত হয়। পরে মুহূর্তেই তা আশপাশে ছড়িয়ে পড়ে। সঙ্গে সঙ্গেই স্থানীয়রা আগুন নেভানোর চেষ্টা করেন। খাগড়াছড়ির দীঘিনালা উপজেলা ফায়ার সার্ভিস ইউনিটের সঙ্গে খাগড়াছড়ি ফায়ার সার্ভিসের চেষ্টায় সাড়ে ৩ ঘণ্টা পর বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। আগুনে প্রায় ৯৫টি রিসোর্ট ও ঘরবাড়ি পুড়ে গেছে। তবে হতাহতের কোনো খবর পাওয়া যায়নি।
স্থানীয়দের অভিযোগ, সাজেক ভ্যালিতে পানির সংকট ও ফায়ার সার্ভিস দ্রুত এসে আগুন নেভানোর কাজ শুরু করতে না পারায় ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ বেড়েছে। এ ছাড়া দীঘিনালা, খাগড়াছড়িসহ অন্যান্য উপজেলা থেকে ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি পৌঁছাতে সময় লাগার কারণে আগুনে ক্ষয়ক্ষতি বেড়ে গেছে। সাজেকে অগ্নিকাণ্ড মোকাবিলার মতো পানি সংরক্ষণের ব্যবস্থা ছিল না।
সাজেক রিসোর্ট ও কটেজ মালিক সমিতির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মতিজয় ত্রিপুরা বলেন, আগুন এখন নিয়ন্ত্রণে এলেও ক্ষয়ক্ষতি কী পরিমাণ হয়েছে, তা এখনও সঠিক বলা যাচ্ছে না। আগুন লেগে মুহূর্তে চোখের সামনে সব শেষ হয়ে গেছে। সঠিক তথ্য জানাতে একটু সময় লাগবে। ১৬৭ নম্বর রুইলুই মৌজার হেডম্যান লাল থাঙ্গা লুসাই বলেন, আগুনের ঘটনায় আমার বসতবাড়িসহ আশপাশের বিভিন্ন স্থাপনা পুড়ে গেছে।
রাঙামাটির অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মোহাম্মদ রুহুল আমীন জানান, সর্বশেষ পাওয়া তথ্য অনুযায়ী সাজেকে ৯৫টির অধিক স্থাপনা পুড়েছে। আগুনে এখনও হতাহতের কোনো খবর পাওয়া যায়নি। হেলিকপ্টারের মাধ্যমে আগুন নেভানোর কথা থাকলেও বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণ আসায় হেলিকপ্টার আসা স্থগিত করা হয়েছে।
রাঙামাটির জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হাবিব উল্লাহ বলেন, যতটুকু জানা গেছে, শর্টসার্কিট থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়েছে। তবে সেটি পরে তদন্তসাপেক্ষে জানা যাবে। আপাতত আগুন নিয়ন্ত্রণে এসেছে। ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণে কাজ চলছে।
খাগড়াছড়ি ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের উপপরিচালক মোহাম্মদ জাকের হোসেন বলেন, বিকাল ৪টার দিকে নিয়ন্ত্রণে এলেও আগুন যাতে অন্যত্র ছড়াতে না পারে, সেজন্য পানি ছিটানোর কাজ করা হয়েছে। তবে এলাকাটি পাহাড়ের ওপর হওয়ায় পানির সংকটে পড়তে হয়েছে।
আপাতত সাজেকে ভ্রমণ নয়
সাজেকে পর্যটকদের ভ্রমণে নিরুৎসাহিত করেছে প্রশাসন। সোমবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে রাঙামাটির অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট পাঠান মো. সাইদুজ্জামানের সই করা এক বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, রাঙামাটি পার্বত্য জেলার বাঘাইছড়ি উপজেলার সাজেক পর্যটন এলাকায় ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড সংঘটিত হওয়ায় পর্যটকদের নিরাপত্তার বিষয়টি বিবেচনা করে ২৫ ফেব্রুয়ারি থেকে পরবর্তী নির্দেশনা না দেওয়া পর্যন্ত সাজেক পর্যটনকেন্দ্রে পর্যটকদের ভ্রমণ নিরুৎসাহিত করা হলো।