লক্ষ্মীপুর সংবাদদাতা
প্রকাশ : ০৩ ডিসেম্বর ২০২২ ১৮:৫৬ পিএম
আপডেট : ০৩ ডিসেম্বর ২০২২ ১৯:১৭ পিএম
কাঁটাতারের বেড়ায় অবরুদ্ধ দুই পরিবার।
লক্ষ্মীপুরে চলাচলের রাস্তায় কাঁটাতারের বেড়া দিয়ে ও পুকুর কেটে দুটি পরিবারকে অবরুদ্ধ করে রাখার অভিযোগ উঠেছে। সদর উপজেলার তেওয়ারীগঞ্জ ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের শহরকসবা গ্রামের বজলুর রহমান হাজিবাড়িতে এ ঘটনা ঘটেছে।
শনিবার (৩ ডিসেম্বর) দুপুরে ঘটনাস্থল গিয়ে অভিযোগের সত্যতা পাওয়া যায়।
আট দিন ধরে অবরুদ্ধ রয়েছে সৌদিপ্রবাসী সাহাব উদ্দিন ও স্যানিটারি ব্যবসায়ী মোসলেহ উদ্দিনের পরিবার। একই এলাকার প্রভাবশালী দিদার হোসেন ও তার বোন পান্না আক্তারের বিরুদ্ধে ভুক্তভোগীদের এই অভিযোগ।
স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, দীর্ঘ ১২ বছর ধরে সাহাব উদ্দিনের পরিবার রাস্তাটি ব্যবহার করছে। হঠাৎ করে দিদার লোকজন দিয়ে কাঁটাতারের বেড়া দিয়ে ওই রাস্তাটি বন্ধ করে দেয়। এতে সাহাব উদ্দিন ও মোহলেহ উদ্দিনের পরিবার অসহায় হয়ে পড়েছে। দিদারদের কাছ থেকে রাস্তার জমিটি কেনার জন্য প্রস্তাব দেয় সাহাব উদ্দিনরা। কিন্তু ওই রাস্তার মুখেই তারা পুকুর কেটে বন্ধ করে দিয়েছে চলাচলের পথ।
সৌদিপ্রবাসী সাহাব উদ্দিনের স্ত্রী মরিয়ম বেগম জানান, তারা প্রায় ১২ বছর আগে জমি কিনে সেখানে বাড়ি বানিয়ে বসবাস করে আসছেন। বাড়ি থেকে বের হওয়ার জন্য সেখানে ৫ ফুট প্রশস্ত একটি রাস্তাও ছিল। সেখানে পল্লী বিদ্যুতের সংযোগের একটি খুঁটিও রয়েছে। কিন্তু আট দিন আগে জমির মালিক দিদার ও তার বোন পান্না সড়কটি কাঁটাতারের বেড়া দিয়ে বন্ধ করে দেয়। এর মধ্যে বাড়ি থেকে বের হওয়ার মুখেই ৪টি খুঁটি স্থাপন করে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে।
বৃহস্পাতবার (১ ডিসেম্বর) ভেকু দিয়ে মাটি কেটে পুকুর খনন করা হয়েছে। রাস্তাটি পরিত্যক্ত বোঝানোর জন্য প্রায় ২০টি সুপারি গাছের চারাও রোপণ করে দেয় অভিযুক্তরা। এখন তিনি চার ছেলেমেয়ে নিয়ে কষ্টে দিনযাপন করছেন। অন্যের ধানক্ষেতের আইল দিয়ে তাদের চলাচল করতে হয়। বর্ষা এলে বাড়ি থেকে বের হওয়া যাবে না বলে জানান মরিয়ম।
ভুক্তভোগী স্যানিটারি ব্যবসায়ী মোসলেহ উদ্দিন বলেন, সাত বছর আগে সাহাব উদ্দিনের ঘরের পাশেই তিনি জমি কেনেন। সেখানে তিনি বসতঘর তৈরি করছেন। ঠিক সেই মুহূর্তে দিদার লোকজন দিয়ে রাস্তায় কাঁটাতারের বেড়া বানিয়ে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করেছে।
তিনি বলেন, ‘একপর্যায়ে ভাড়াটে লোকজন এনে ভেকু দিয়ে রাস্তায় পুকুর কেটে দেয়। এখন আমাদের চলাচলের রাস্তা পুরোপুরি বন্ধ হয়ে গেছে।’
ঘটনাস্থলে গিয়ে জমির মালিক পান্না আক্তার ও তার বোন রৌশন আক্তারকে দেখা যায়। পান্না আক্তার জানান, তারা বাড়ি করার উদ্দেশ্যে প্রায় ১০ বছর আগে জমিটি স্থানীয় নুর হোসেনের কাছ থেকে কেনেন। এখন তারা (দিদার ও পান্না) সেখানে বসতঘর নির্মাণ করবেন। সেখানে রাস্তা ছিল না। জমি খালি পড়ে থাকায় তারা এমনিতেই সেখান দিয়ে হাঁটাচলা করত। বসতঘর নির্মাণ করলে পুকুর অপরিহার্য, সে উদ্দেশ্যেই পুকুর কাটা হয়েছে। এজন্য তারা তাদের জমির নিরাপত্তার জন্য কাঁটাতারের বেড়া দিয়েছেন। কারও বাড়ির পথ বন্ধ করেননি তারা।
তেওয়ারীগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ওমর ফারুক ইবনে হুছাঈন ভুলু বলেন, ‘বাড়ির রাস্তা বন্ধ করা কোনোভাবেই সম্ভব নয়। আগামী বুধবার উভয়পক্ষকে পরিষদের ডাকা হয়েছে। এ বিষয়ে তাদের সঙ্গে কথা বলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’