× ই-পেপার প্রচ্ছদ সর্বশেষ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি শিক্ষা ধর্ম ফিচার ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

পদ্মায় রাত হলেই শুরু হয় বালু লুটের মহোৎসব

দোহার-নবাবগঞ্জ (ঢাকা) প্রতিবেদক

প্রকাশ : ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ১৯:২৪ পিএম

প্রবা ফটো

প্রবা ফটো

ঢাকার দোহারের পদ্মা নদীতে রাত হলেই বালু লুটের মহোৎসব শুরু হয়। এতে প্রায় ৭ থেকে ৮টি কাটার দিয়ে চলে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন। এতে  ক্ষতির মুখে পড়েছে মেঘুলা, নারিশা ও মুকুসুদপুর এলাকার বেড়িবাঁধ। ফলে আতঙ্কে রয়েছে পদ্মাপারের হাজারও বাসিন্দা।

স্থানীয়রা জানান, ঢাকা জেলা দক্ষিণ স্বেচ্ছাসেবকলীগের সদস্য চঞ্চল মোল্লা, মাসুদ মোল্লা, কাজী নূর বেপারী, সাবেক দোহার উপজেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক জেলা যুবদল নেতা মো. মোশারফ হোসেন, নারিশা ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক জিকু বেপারীসহ বেশ কয়েকজনের নেতৃত্বে চলছে এই বালু উত্তোলন। এ বিষয়ে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন পদ্মাপারের মানুষ।

সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, দিনের বেলায় মেঘুলার পদ্মার তীরবর্তী নিরাপদ এলাকায় রাখা হয় বালু উত্তোলনের কাটার। এছাড়া শ্রীনগরের বাঘড়া সীমানার তীরেও দুটি কাটার রাখা হয়। যেগুলো রাত হলেই প্রবেশ করে দোহারের সীমানায়। রাত ১১টার পর থেকে ভোর পর্যন্ত তোলা হয় বালু।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, নারিশা ও মুকসুদপুর পদ্মা তীর রক্ষা বাঁধ বরাবর এলাকায় প্রতিরাতেই বালু উত্তোলন করা হয়। এসব বালু বাল্কহেডে করে দোহারসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বিক্রি করছে প্রভাবশালী এই চক্র। চাহিদা বেশি হওয়ায় প্রভাবশালী মহলটি বালু বিক্রি করে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। দোহারে একটি নৌ পুলিশ ফাঁড়ি থাকলেও এর ১০ কিলোমিটারের মধ্যে চলে বালু উত্তোলনের মহোৎসব। ফাঁড়িটির নীরব ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন অনেকেই।

নারিশার পদ্মাপারের বাসিন্দা আলী হোসেন, সুমন বেপারী ও মনোয়ার ইসলাম জানান, রাত হলেই ড্রেজারের মাটি কাটার শব্দে ঘুম ভাঙ্গে। বিগত সরকারের আমলে যারা পদ্মায় বালু কেটেছে তারাই মিলে মিশে আবার শুরু করেছেন। তাহলে এদেশে আন্দোলন করে কি লাভ হলো আমাদের।

মেঘুলা এলাকার ৫৫ বছরের বৃদ্ধ সবিরন বিবি বলেন, মাটি কাটার শব্দে ঘরে থাকা যায় না। এই পদ্মা এক সময় কি ছিল, এই মাটি কাটার কারণে এখন কি হইয়া গেছে। তিনি আকুতি জানিয়ে বলেন, বাবা তোমরা কিছু কর, আমরাতো ভয়ে বলতে পারিনা।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মেঘুলা পদ্মাপারের বাসিন্দা মেঘুলা মালিকান্দা স্কুল এন্ড কলেজের এক শিক্ষার্থী বলেন, আমাদের পদ্মার বাধ ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে আওয়ামী লীগ সরকারের কিছু বালু ব্যবসায়ীদের কারণে। গত বছরের ৫ আগস্টের পর কয়েকমাস বন্ধ ছিল বালু উত্তলন। এখন আবার শুরু করেছে। উপজেলা প্রশাসন ও নৌ-পুলিশ থাকাকালীন কিভাবে বালু কাটা হয়। তিনি আরও বলেন, এখনই যদি ব্যবস্থা না নেওয়া হয় তাহলে দোহারের মানচিত্র একদিন বিলীন হয়ে যাবে।

এদিকে স্থানীয় ও জাতীয়  সংবাদ মাধ্যমে বিভিন্ন সময়ে এ নিয়ে সংবাদ প্রকাশের পরেও প্রশাসনের নিরব ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন অনেকে। 

এ বিষয়ে অভিযুক্ত চঞ্চল মোল্লা বলেন, ‘আমাকে সমাজে হেয় করার জন্য একটি মহল উঠেপরে লেগেছে।’ এদিকে দোহার উপজেলা যুবদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক জেলা যুবদলের নেতা মো. মোশারফ হোসেন জানান, তিনি এ ব্যবসা করেন না, তিনি ঢাকায় থাকেন।

নারিশা ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক জিকুকে ফোন দিয়েও পাওয়া যায়নি।

পরে দোহারের তীরবর্তী অপর দুটি ড্রেজারের দায়িত্বে থাকা ব্যক্তিদের বক্তব্য নিতে গেলে ড্রেজারের ভেতরে থাকা শ্রমিকরা সাংবাদিকদের উপস্থিতি দেখে দৌড়ে পালিয়ে যায়।

এ বিষয়ে ঢাকা অঞ্চলের নৌ পুলিশ সুপার গৌতম কুমার বিশ্বাস বলেন, ‘বিষয়টি আমার জানা নেই। তবে যেহেতু আপনার মাধ্যমে জানতে পেরেছি বিয়টি গুরুত্বের সঙ্গে দেখছি।’

এ বিষয়ে দোহার উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) তাসফিক সিগবাদ উল্লাহ বলেন, ‘বিষয়টি জানা ছিল না। পদ্মায় যারা অবৈধভাবে কাটার দিয়ে বালু উত্তোলন করবে তাদের বিরুদ্ধে শীঘ্রই আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক : মোরছালীন বাবলা

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা