চট্টগ্রাম অফিস
প্রকাশ : ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ১৩:৪৫ পিএম
আপডেট : ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ১৩:৪৫ পিএম
ছবি : সংগৃহীত
পবিত্র রমজান মাস সামনে রেখে নিত্যপ্রয়োজনীয় ভোগ্যপণ্যের চাহিদা বাড়ছে। আর এই বাড়তি চাহিদাকে পুঁজি করে বাজারে বাড়তে শুরু করেছে এসব পণ্যের দাম। দেশে ভোগ্যপণ্যের অন্যতম পাইকারি বাজার চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জে ১৫ দিনের ব্যবধানে পাইকারিতে ভারতীয় পেঁয়াজের দাম কেজিতে বেড়েছে অন্তত ১০ টাকা। আদা-রসুনের দামও ঊর্ধ্বমুখী।
খাতুনগঞ্জে দুই সপ্তাহ আগে প্রতি কেজি ভারতীয় পেঁয়াজ বিক্রি হয় ৬০ থেকে ৬৫ টাকায়। গতকাল শনিবার তা ছিল ৭২ থেকে ৭৫ টাকা কেজি। আর গত সপ্তাহের তুলনায় কেজিতে ১০ টাকা বেড়ে এখানে প্রতি কেজি চায়না রসুন বিক্রি হচ্ছে ২১৫ টাকায়। অন্যদিকে ১৫ থেকে ২০ টাকা বেড়ে কেরালা আদা বিক্রি হচ্ছে ১১০ থেকে ১১৫ টাকা কেজি।
রমজানকে সামনে রেখে বাজারে চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় আমদানিকৃত এসব ভোগ্যপণ্যের দাম ঊর্ধ্বমুখী বলে জানিয়েছেন আড়তদাররা।
খাতুনগঞ্জের হামিদুল্লাহ মিয়া মার্কেট ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির সভাপতি মোহাম্মদ ইদ্রিস প্রতিদিনের বাংলাদেশকে বলেন, ‘বাজারে এখন পেঁয়াজ, রসুন ও আদার চাহিদা বেশি। চাহিদা বেশি থাকলে দাম সব সময় একটু বাড়তি থাকে। তবে ৭ থেকে ১০ দিনের মধ্যে দাম কমে আসবে।’
তিনি বলেন, ‘ভারতীয় পেঁয়াজের দাম কিছুটা বাড়লেও দেশি পেঁয়াজের দাম স্বাভাবিক রয়েছে। বাজারে দেশি পেঁয়াজ মানভেদে ৩০ থেকে ৪০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে।’
গতকাল শনিবার খাতুনগঞ্জ ঘুরে দেখা গেছে, আড়তগুলোতে পর্যাপ্ত পণ্য সরবরাহ রয়েছে। রমজান সামনে রেখে বেচাকেনাও বেড়েছে। প্রতি বছর রমজানের ১৫-২০ দিন আগে থেকেই খাতুনগঞ্জে বেচাকেনা বেড়ে যায়। তাই স্বাভাবিক সময়ের তুলনায় কিছুটা ব্যস্ত সময় কাটছে আড়তদারদের। আর বেচাকেনা বেড়ে যাওয়ায় রমজানের আগে বাড়তে শুরু করেছে মসলা জাতীয় পণ্য বিশেষ করে পেঁয়াজ, আদা ও রসুনের দাম। ১০ রমজান পর্যন্ত এই ব্যস্ততা থাকবে বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।
আড়তগুলোতে খোঁজ নিয়ে দেখা যায়, শনিবার পাইকারিতে প্রতি কেজি ভারতীয় পেঁয়াজ বিক্রি হয় ৭২ থেকে ৭৫ টাকায়। চলতি মাসের শুরুতে তা ছিল ৬০ টাকা কেজি। ভারতীয় পেঁয়াজের দাম বাড়লেও বাজারে সরবরাহ বাড়ায় এখন স্বাভাবিক রয়েছে দেশি পেঁয়াজের দাম। বাজারে মানভেদে প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজ পাইকারিতে বিক্রি হচ্ছে ৩০ থেকে ৪০ টাকায়।
অন্যদিকে প্রতি কেজি রসুন বিক্রি হচ্ছে ২১৫ টাকায়, যা এক সপ্তাহ আগেও ছিল ১৯৫ থেকে ২০০ টাকা। এ ছাড়া কেরালা আদা প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ১১০ থেকে ১১৫ টাকায়, যা এক সপ্তাহ আগে বিক্রি হয়েছে ৯৫ থেকে ১০০ টাকা কেজি।
এদিকে বাজারে চায়না রসুনের দাম বাড়লেও সরবরাহ সংকট নেই। আড়তগুলোতে পর্যাপ্ত রসুন দেখা গেছে। আমদানির তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, গত অর্থবছরের তুলনায় চলতি অর্থবছরের এই সাড়ে সাত মাসে চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর দিয়ে রসুন আমদানিও বেড়েছে।
উদ্ভিদ সংঘ নিরোধের চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর কেন্দ্রের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর দিয়ে রসুন আমদানি হয়েছিল ৭৯ হাজার ৪২৭ টন। সেখানে ১৭ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত চলতি অর্থবছরের গত সাড়ে ৭ মাসে রসুন আমদানি হয়েছে ৮৯ হাজার ৩৬৫ টন। তবে আদা আমদানি কিছুটা কমেছে।
২০২৩-২৪ অর্থবছরে চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে আদা আমদানি হয়েছিল ৪০ হাজার ৪৩২ টন। সেখানে ১৭ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত চলতি অর্থবছরের গত সাড়ে ৭ মাসে আদা আমদানি হয়েছে ১৮ হাজার ৫৪ টন।