সাভার প্রতিবেদক
প্রকাশ : ২২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ১৬:৪৫ পিএম
প্রবা ফটো
ঢাকার আশুলিয়ায় অভিযান চালিয়ে পৃথকস্থান থেকে দুইজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এদের মধ্যে একজন নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ নেতা এবং অপরজন যুবলীগের সক্রিয় কর্মী। তাদের দুজনের নামেই হত্যাসহ অন্য মামলা রয়েছে।
এদিকে গ্রেপ্তারকৃতদের ছাড়াতে থানায় হাজির হয়েছেন বিএনপি নেতা। শুধু তাই নয়, সুপারিশের অভিযোগ রয়েছে- বিএনপির সাবেক সাংসদের ব্যক্তিগত সহকারীর বিরুদ্ধেও।
শুক্রবার (২১ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে আশুলিয়ার গাজীরচট আড়িয়াড়ার মোড় এলাকার পৃথকস্থান থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।
তারা হলেন- আশুলিয়ার গাজীরচট আড়িয়াড়ার মোড় এলাকার সাহাজুদ্দিন খানের নাম্বার ছেলে মো. সবুজ উদ্দিন খান (২৬) ও একই এলাকার আলফাজ উদ্দিনের ছেলে সেলিম রেজা(২৫)।
এদের মধ্যে সেলিম রেজা ঢাকা জেলা উত্তর ছাত্রলীগের উপ-প্রশিক্ষণ বিষয়ক সম্পাদক ও অন্যজন যুবলীগের সক্রিয় কর্মী বলে জানা যায়।
সেলিম রেজার নামে আশুলিয়া থানায় হত্যা চেষ্টা ও সবুজ খানের নামে হত্যা মামলা রয়েছে।
থানায় তদবিরে আসা আবুল হোসেন মুন্সি ঢাকা জেলা ছাত্রদলের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও আশুলিয়া থানা বিএনপির পদপার্থী।
পুলিশ জানায়, সারা দেশে চলমান অপারেশন ডেভিল হান্টের অংশ হিসেবে শুক্রবার সন্ধ্যার দিকে আশুলিয়ার গাজীরচট আড়িয়াড়ার মোড় এলাকায় অভিযান চালিয়ে নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগ নেতাসহ দুইজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
আশুলিয়া থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) সাইফুল ইসলাম জানান, গ্রেপ্তার দুইজনের মধ্যে একজনের নামে ছাত্র-জনতা হত্যার মামলা রয়েছে। অন্যজন ছাত্রলীগ নেতা।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে আশুলিয়া থানার এক উপ-পরিদর্শক (এস.আই) জানান, আবুল হোসেন মুন্সী ভাই আমাকে মুঠোফোনে কল দিয়ে ওদের দুজনকে ছেড়ে দিতে অনুরোধ করেন। আমি ওনাকে জানাই, ওদেরকে ছাড়া সম্ভব নয়। পরে উনি আরও কিছুক্ষণ অনুরোধ করে কল কেটে দেন।
এদিকে জেল হাজতে পাঠানোর আগেই গ্রেপ্তার হওয়া দুই নেতার সাথে কথা হয়। তারা বলেন, আমাদের গ্রেপ্তারের পর আবুল হোসেন থানায় আসেন। আমাদের সাথে কথা বলে ওসির কাছে সুপারিশ করেন। বলছে কোনভাবে ছাড়ানো যাবে না। রিমান্ড ও মামলা নরম করতে কিছু করা যাবে। তবে দেড় ঘণ্টা হলেও কোন খবর না দিয়ে আবুল হোসেন দেখা করেননি। লোক পাঠিয়ে বলেছে চেষ্টা চলছে।
বিএনপির সাবেক সাংসদ সালাউদ্দিন বাবুর পিএস শরীফুল ইসলাম তাদের খোঁজ নিয়েছেন। অনুরোধ করেছেন মামলার ধরণ পাল্টে দিতে, সেজন্যই আবুল হোসেন মুন্সী নিজে এসে তদবির করেছেন বলে জানান তারা।
তদবিরের বিষয়ে শরীফুল ইসলাম বলেন, এ বিষয়ে আমি কিছুই জানিনা। কারও সাথে আমার কোন কথা হয়নি। থানায় আরও একজন গ্রেপ্তার হয়েছে, সে আমাদের লোক। এখন নিজের লোকের বিষয়ে তো একটু কথা বলতে হয়। তাদের আমি চিনিনা।
এ বিষয়ে আবুল হোসেন মুন্সী অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আমি আজকে নিজস্ব একটা কাজে থানায় গিয়েছিলাম। সেখানে গিয়ে জানতে পারি, আমার এলাকার দুটি ছেলেকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। পরে আমি ওদের সাথে দেখা-সাক্ষাৎ করে চলে আসি। আপনি ওদেরকে ছাড়াতে না পেরে, মামলা হালকা বা যাতে রিমান্ড না হয় সে বিষয়ে তদবির করেছেন; এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, আমি ওদেরকে ছাড়ানোর জন্য বা মামলা হালকা করার জন্য কোন তদবির করিনি।
এ ব্যাপারে আশুলিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ ( ওসি) নুর আলম সিদ্দিক বলেন, আমি আইনের মানুষ। আইন অনুসারে থানা চলবে। এ ব্যাপারে আমার কাছে কেউ আসে নাই আসলেও লাভ নাই। আমি আইন অনুসারে কাজ চালিয়ে যাবো।