নিজস্ব প্রতিবেদক, বরিশাল
প্রকাশ : ২১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ১৬:৫৪ পিএম
আপডেট : ২১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ১৮:০৭ পিএম
বরিশালের মেহেন্দীগঞ্জ উপজেলার ভাসানচরের ৮৫ নং মধ্য চরপশ্চিম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। প্রবা ফটো
বরিশালের সিংহভাগ প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে নেই শহিদ মিনার। ফলে নিজ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে মহান শহিদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালন উপলক্ষে শহীদ বেদিতে পুষ্পার্ঘ অর্পণ করতে পারেননি অধিকাংশ শিক্ষার্থীরা। কিছু কিছু বিদ্যালয়ে কলা গাছ কেটে শহিদ মিনার নির্মাণ করা হলেও তার সংখ্যাও বেশ কম। ফলে জেলা ও উপজেলার কেন্দ্রীয় শহিদ মিনার অথবা পার্শ্ববর্তী কোনো বিদ্যালয়ে শহিদ বেদীতে পুষ্পার্ঘ অর্পণ করতে হয়েছে শিক্ষার্থীদের। এতে করে ভাষা আন্দোলনের তাৎপর্য ও ইতিহাস ধারণ করতে শিক্ষার্থীদের ওপর প্রভাব পড়বে বলে আশঙ্কা করছে সচেতন মহল।
বরিশাল জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস থেকে জানা যায়, জেলার ১০টি উপজেলায় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সংখ্যা ১ হাজার ৫৯২টি। এর মধ্যে আগৈলঝাড়াতে ৯৭টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ২টিতে, উজিরপুরে ১৮১টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৩০টিতে, গৌরনদীতে ১৩১টির মধ্যে ১২টিতে, সদর উপজেলায় ২০৩টির মধ্যে ১৩টিতে, বাকেরগঞ্জে ২৮০টির মধ্যে ১৬টিতে, বানারীপাড়ায় ১২৬টির মধ্যে ৫টিতে, বাবুগঞ্জে ১৩৪টির মধ্যে ৩০টিতে, মুলাদীতে ১৪০টির মধ্যে ১৯টিতে এবং হিজলায় ৯২টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মধ্যে মাত্র ৮টিতে শহিদ মিনার রয়েছে। আর মেহেন্দীগঞ্জ উপজেলায় ২০৮টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের একটিতেও নেই শহিদ মিনার। ফলে মোট শহিদ মিনার রয়েছে মাত্র ১৫৩টি বিদ্যালয়ে। আর শহরের বিদ্যালয়গুলোতে শহিদ মিনার না থাকার কারণ হিসেবে বলা হয়েছে জায়গার সংকটের কথা।
শিক্ষার্থীরা জানান, নিজ প্রতিষ্ঠানে শ্রদ্ধা জানাতে না পেরে ভালো নেই তারা। দ্রুত স্কুল গুলোতে যাতে শহিদ মিনার নির্মাণ করা হয় সেই দাবি তাদের।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে সুজনের সম্পাদক রফিকুল আলম বলেন ৫২ এর ভাষা আন্দোলনের ইতিহাস নতুন প্রজন্মের মাঝে ছড়িয়ে দিতে চাইলে প্রতিটি বিদ্যালয়ে শহিদ মিনার প্রয়োজন। তবে দুঃখের বিষয় অধিকাংশ প্রাথমিক বিদ্যালয়ে তা নেই। আমরা চাই শৈশব থেকে শিশুরা ৫২ এর ভাষা আন্দোলন সম্পর্কে জানুক। তারা ভাষা ও দেশপ্রেমিক হোক। ফলে দ্রুত এ বিষয়ে সংশ্লিষ্টরা যাতে ব্যবস্থা গ্রহণ করে সেই দাবি জানাচ্ছি।
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. গোলাম মোস্তফা সরোয়ার হোসেন বলেন, এখানে নতুন এসেছি। শহিদ মিনারের সংখ্যা না দেখে বলতে পারব না। তবে আমার জানা মতে শহিদ মিনারের জন্য সরকারি পর্যায়ে বাজেট আসে। স্থানীয় পর্যায়েও কেউ যদি শহিদ মিনার নির্মাণ করতে চায় তাহলে করতে পারে। কিন্তু সংকট হচ্ছে জমি নিয়ে। অনেক স্কুলেই পর্যাপ্ত জমি আছে। কিন্তু সেই জমি অবৈধ দখলে। সেখানে শহিদ মিনার নির্মাণ করা যাচ্ছে না।
বরিশালের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ দেলোয়ার হোসেন বলেন, প্রতিটি বিদ্যালয়ে শহিদ মিনার থাকা উচিত। বিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা কমিটির সমন্বয়ে এটি করতে হবে। শহিদ মিনার নির্মাণ করতে যদি প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হয়, তাহলে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সার্বিক সহযোগিতা করা হবে।