মহসিন মোল্যা, শ্রীপুর (মাগুরা)
প্রকাশ : ২০ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ১৯:১৫ পিএম
আপডেট : ২০ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ২১:৪০ পিএম
শ্রীপুরে নারিকেল বাগান। প্রবা ফটো
শখের বশে নারিকেল বাগান গড়ে তুলেছেন মাগুরার শ্রীপুরের বরালিদাহ গ্রামের মো. টিটো মিয়া। ৩০ শতক জমিতে গড়ে তুলেছেন তার এ শখের বাগান। তার এ বাগানে ১৩২টি ভিয়েতনামী জাতের নারিকেল গাছের চারা রোপণ করা হয়েছে। পাশাপাশি আম্রপালি ও বারী-৪ জাতের আম গাছের চারা রোপণ করা রয়েছে এ বাগানে। রোপণের পরের বছর থেকেই আম গাছে ফল ধরা শুরু হলেও চারা রোপণের দুই বছর পূর্ণ হলেও এখনও নারিকেল ধরা শুরু হয়নি। তবে ধারণা করা যায় আগামী দেড় থেকে দুই বছরের মধ্যে নারিকেল গাছে ফল ধরা শুরু হবে।
মাগুরা জেলায় টিটো মিয়া প্রথম এমন নারিকেল বাগান গড়ে তুলে ব্যাপক আলোচনায় আছেন। প্রতিদিন তার এ বাগান দেখতে দূর-দূরান্ত থেকে লোকজন এসে ভিড় জমাচ্ছেন। এমনকি তার দেখাদেখি এমন বাগান গড়ে তুলতে অনেকেই আগ্রহী হয়ে উঠছেন।
বৃহস্পতিবার (২০ ফেব্রুয়ারি) সরেজমিনে দেখা যায়, বাগান পরিচর্যার কাজে দুজন শ্রমিক কাজ করছেন। চারা রোপণের পর থেকেই তারা বাগান পরিচর্যার কাজ করেন৷ তাদের পরিচর্যায় বাগানের গাছগুলো তরতাজা হয়ে উঠেছে। নারিকেল গাছে মুকুলের দেখা না মিললেও আমের গাছে গাছে মুকুলে ছেয়ে গেছে। বাগানের চার পাশ শক্ত জাল দিয়ে ঘিরে রাখা হয়েছে। তাছাড়া উপজেলা কৃষি অফিস তার এ কাজে সার্বিক সহযোগিতা ও পরামর্শ দিয়ে আসছে।
বাগান পরিচর্যার কাজে নিয়োজিত মো. আজাদ বিশ্বাস ও মনিরুল শেখ বলেন, আমরা শুরু থেকেই এ বাগান দেখাশোনা করে আসছি। আমরা বাগানের গাছগুলো যত্ন করি। এখানে কাজ করে যে মজুরি পাই, তা দিয়েই আমাদের সংসার চলে। টিটো ভাইয়ের মত যদি অনেকেই এমন উদ্যোগ নিয়ে বাগান করতো তাহলে আমাদের কাজের ব্যবস্থা হতো।
বাগান মালিক টিটো মিয়া বলেন, আমি শখের বশে বাগানটি করছি। এমন একটি বাগান করতে পেরে মনে শান্তি লাগছে। আমার বাড়িতেও ৪০-৪২টি নারিকেল গাছ রয়েছে। উপজেলা কৃষি মেলায় আমার গাছের বড় নারিকেল প্রদর্শন করা হয়৷ আমাদের দেশে নারিকেলের যথেষ্ট চাহিদা রয়েছে। তা পূরণে আমি নারিকেল বাগান করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। সাথি ফল হিসেবে আম্রপালি ও বারী-৪ জাতের আমের চারা রোপণ করেছি। গাছ লাগানোর পরের বছর থেকেই আম ধরা শুরু হয়েছে। এ বছরও প্রচুর আম পাবো। নারিকেল গাছে ফল আসা শুরু হলে তখন বাগানে শুধু নারিকেল গাছ রেখে দিব। আমি বাগান করার জন্য উপজেলা কৃষি অফিস থেকে সার্বিক সহযোগিতা ও পরামর্শ পাচ্ছি। আমি মনে করি বেকার যুবকদের শুধু শুধু চাকরির পেছনে না ঘুরে এমন বাগান করা উচিত।
শ্রীপুর উপজেলা কৃষি উপ-সহকারী অলোক কুমার বিশ্বাস বলেন, বাগানের শুরু থেকেই উপজেলা কৃষি অফিসের মাধ্যমে তাকে সার্বিক পরামর্শ ও সহযোগিতা করে আসছি। তার এ নারিকেল গাছে ফল ধরা শুরু হয়নি। আশা করছি, আগামী দেড় থেকে দুই বছরের মধ্যে গাছে ফল ধরা শুরু হবে।
শ্রীপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ সালমা জাহান নিপা বলেন, জেলায় তিনিই প্রথম নারিকেল বাগান গড়ে তুলেছেন। তবে গাছে এখনও ফল ধরা শুরু হয়নি। ফল ধরা শুরু হলে তিনি আর্থিকভাবে লাভবান হবেন। তাছাড়া তার এ কাজে উৎসাহিত করতে উপজেলা কৃষি অফিসের মাধ্যমে সার্বিক পরামর্শ ও সহযোগিতা প্রদান করা হয়। তার দেখাদেখি এমন বাগান করতে অনেকেই আগ্রহী হচ্ছেন।