× ই-পেপার প্রচ্ছদ সর্বশেষ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি শিক্ষা ধর্ম ফিচার ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

স্বীকৃতি পায়নি স্কুল পর্যায়ে নির্মিত ‘প্রথম’ শহীদ মিনার

বোয়ালখালী (চট্টগ্রাম) সংবাদদাতা

প্রকাশ : ২০ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ১৮:০৩ পিএম

আপডেট : ২০ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ১৮:২৭ পিএম

কধুরখীল সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে নির্মিত শহীদ মিনার। প্রবা ফটো

কধুরখীল সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে নির্মিত শহীদ মিনার। প্রবা ফটো

ভাষা আন্দোলনে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে ১৯৬৫ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি চট্টগ্রামের বোয়ালখালী উপজেলার কধুরখীল সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে ছাত্ররা গড়েছিলেন শহীদ মিনার। রাতে নির্মাণ করে পরদিন সকালে শহীদদের শ্রদ্ধা জানানো হয়েছিল।

এমএ বার্ণিকের লেখা ‘জেলায় জেলায় শহীদ মিনার’ গ্রন্থে উল্লেখ করা হয়েছে, কধুরখীল উচ্চ বিদ্যালয়ে নির্মিত শহীদ মিনারই দেশের স্কুল পর্যায়ের প্রথম শহীদ মিনার। যদিও স্কুল পর্যায়ের প্রথম শহীদ মিনার হিসেবে তার রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি মেলেনি।

৫২’র ভাষা আন্দোলনের পর ইট-সিমেন্ট দিয়ে তৈরি এই শহীদ মিনারটি দেখতে অনেকটা পিরামিড আকৃতির। শহীদ মিনারটির নির্মাণের সঙ্গে জড়িয়ে আছে বাঙালির অবিচ্ছিন্ন ইতিহাস।

প্রতি বছর ফেব্রুয়ারি মাসের জাতীয় শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের প্রথম প্রহরে এই শহীদ মিনারে এসে শ্রদ্ধা জানান বিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ১৯৬৫ সালে চলছিল পাকিস্তানি সামরিক জান্তা আইয়ুব খানের শাসন। তার মধ্যেই কধুরখীল উচ্চ বিদ্যালয়ের একদল শিক্ষার্থী শাসকগোষ্ঠীর রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে এ শহীদ মিনার তৈরি করেছিলেন। শহীদ মিনার নির্মাণের অপরাধে শাসকগোষ্ঠীর রোষানলে পড়ে স্কুল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছিল স্কুলের দুই ছাত্র মো. নূরুল হুদা ও সৈয়দ আবুল হাসানকে। বাতিল করা হয় ওই বছরের স্কুলটির তিনতলা বিশিষ্ট বিজ্ঞান ভবন নির্মাণ খাতের বরাদ্দ। মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানিরা গুড়িয়ে দেয় শহীদ মিনারটি। ১৯৭২ সালে এটি পুননির্মাণ করা হয়।

এই শহীদ মিনার নির্মাণের নেপথ্য উদ্যোক্তা ছিলেন কমিউনিস্ট পার্টির নেতা সৈয়দ জালাল উদ্দীন। তার সঙ্গে আরও ছিলেন বোয়ালখালী থানা ছাত্র ইউনিয়নের তৎকালীন সাধারণ সম্পাদক ও জাসদ নেতা মো. সৈয়দুল আলম, সাংস্কৃতিক সংগঠক মোহাম্মদ আলী প্রমুখ।

সৈয়দুল আলম বলেছিলেন, ‘সেই রাতে যাদের উদ্যোগ ও সাহসে শহীদ মিনারটি নির্মিত হয়েছিল তাদের অনেকই এখন বেঁচে নেই। শুধু শহীদ মিনার নির্মাণের অপরাধে নূরুল হুদা ও মরহুম সৈয়দ আবুল হাসানকে স্কুল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছিল।’

কধুরখীল সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বিশ্বজিৎ বড়ুয়া প্রতিদিনের বাংলাদেশকে বলেন, ‘ভাষা আন্দোলনে শহীদের শ্রদ্ধা জানাতে ঐতিহ্যবাহী কধুরখীল সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে নির্মাণ করা হয়েছিল প্রথম শহীদ মিনার। ১৯৬৫ সালে পাকিস্তান সরকারের রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে কধুরখীল উচ্চ বিদ্যালয়ের কিছু ছাত্র এই শহীদ মিনার নির্মাণ করেছিলেন। এটিই দেশের প্রথম স্কুল পর্যায়ের প্রথম শহীদ মিনার।’

তিনি আরও বলেন, ‘মায়ের ভাষার আত্মদানকারী বীর শহীদের শ্রদ্ধা জানানো হয় প্রতিবছর। যা আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলেও পালিত হচ্ছে। স্কুল পর্যায়ের প্রথম এই শহীদ মিনারকে রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি দেওয়া হোক- এটাই আমাদের চাওয়া।’

বীর মুক্তিযোদ্ধা শরৎচন্দ্র বড়ুয়া বলেন, ‘১৯৬৫ সালে কধুরখীল উচ্চ বিদ্যালয়ের একদল শিক্ষার্থী এ শহীদ মিনার তৈরি করেছিলেন। মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানিরা গুড়িয়ে দেয় শহীদ মিনারটি। ১৯৭২ সালে এটি পুননির্মাণ করা হয়।’

বোয়ালখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ রহমত উল্লাহ বলেন, ‘এ শহীদ মিনার সম্পর্কে ২০০৯ সালে স্কুলের পক্ষ থেকে বাংলা একাডেমিকে জানানো হয়েছিল বলে জানতে পেরেছি। ১৯৬৫ সালের ফেব্রুয়ারিতে তৈরি করা শহীদ মিনারটি দেশের স্কুল পর্যায়ের প্রথম শহীদ মিনার। এ বিষয়ে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে জেলা প্রশাসক মহোদয়কে জানানো হবে। এর আগে প্রশাসনিকভাবে না জানানোর কারণে হয়তো বিষয়টি এগোয়নি।’

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক : মোরছালীন বাবলা

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা