বগুড়া অফিস
প্রকাশ : ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ২১:১৭ পিএম
আপডেট : ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ২৩:৩১ পিএম
বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুস সালাম নির্বাচন এবং সংস্কার প্রশ্নে অন্তবর্তী সরকার প্রধান ড. মুহাম্মদ ইউনূস এবং ছাত্রদের উদ্যোগে নতুন দলের উদ্যোক্তাদের সমালোচনা করেছেন।
সোমবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) বগুড়ায় বিএনপির এক জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি ড. মুহাম্মদ ইউনূসের উদ্দেশে বলেন, ‘আপনার চ্যাপ্টার ক্লোজ করে দেন। এখন নির্বাচনী চ্যাপ্টার খোলেন। নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা করেন।’
নতুন দলের উদ্যোক্তাদের উদ্দেশে আব্দুস সালাম বলেন, ‘যারা একটু লাফালাফি করছেন, দল করবেন, করেন। কোনো মানা নেই। নির্বাচনে আসেন। কিন্তু এখন নির্বাচন দিলে বিএনপি এসে পড়বে, যেনতেন নির্বাচন আমরা চাই না- এসব বলে জনগণকে অপমান করবেন না।’
দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ এবং নির্বাচনী রোডম্যাপ ঘোষণার দাবিতে কেন্দ্রীয় কর্মসূচীর অংশ হিসেবে সোমবার বিকালে বগুড়া শহরের আলতাফুন্নেছা খেলার মাঠে ওই জনসভার আয়োজন করা হয়।
বগুড়া জেলা বিএনপির সভাপতি রেজাউল করিম বাদশার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত জনসভায় অন্যান্যের মধ্যে সাবেক সংসদ সদস্য হেলালুজ্জামান তালুকদার লালু, কাজী রফিকুল ইসলাম, মোশারফ হোসেন, বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট একেএম মাহবুবর রহমান, দলটির কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক ওবায়দুর রহমান চন্দন, জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আলী আজগর হেনা বক্তৃতা করেন। সভা চঞ্চলনা করেন জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক শহীদ উন নবী সালাম।
রাষ্টব্যবস্থা সংস্কারে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ঘোষিত ৩১ দফার সংস্কার প্রস্তাব ড. ইউনূস পড়ে দেখেননি- এমন অভিযোগ তুলে আব্দুস সালাম বলেন, ‘আপনারা সংস্কার করবেন কি, করবেন না? কি করবেন তা নিয়ে সিদ্ধান্তই নিতে পারেননি। আমাদের দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান শেখ হাসিনার আমলেই রাষ্ট্র ব্যবস্থা সংস্কারে ৩১ দফা দিয়েছেন। আপনি এখনও সেটা খুলেই দেখেননি। ওইটা দেখেন। যদি ৩১ দফা পালন করা হয় তাহলে এই দেশে আর কেউ স্বৈরাচার হতে পারবে না। বিনা ভোটে রাষ্ট্রক্ষমতা দখল করতে পারবে না। রাষ্টপ্রপতির সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতার ভারসাম্য থাকবে। এক নাগারে দুই বারের বেশি কেউ প্রধানমন্ত্রী হতে পারবেন না।’
অন্তবর্তী সরকারের ৬ মাসের শাসনামলের মূল্যায়ন করতে গিয়ে তিনি বলেন, ‘আপনি (ড. ইউনূস) এদিক-সেদিক করে ৬ মাস অতিবাহিত করে ফেলেছেন। আপনাদের দ্বারা আর তেমন কিছু সম্ভব হবে না। আপনার কাছে আমাদের একটাই চাওয়া সেটা হলো- হাসিনা নাগরিকদের ভোটের যে অধিকার ছিনিয়ে নিয়েছিল তা ফিরিয়ে দিন। যত দ্রুত সম্ভব নির্বাচন দেন। যতটুকু সংস্কার দরকার, নির্বাচন কমিশনকে ঠিক করেন। কালো টাকার মালিকরা যাতে নির্বাচনে আসতে না পারে সেটা করেন। অনেকে বলে নির্বাচন দিলে তো বিএনপি ক্ষমতায় আসবে তাই নির্বাচন যত পেছানো যায়। এটা ষড়যন্ত্র।’
সরকার ব্যবসায়ীদের সিন্ডিকেট ভাঙ্গতে এবং শেখ হাসিনাসহ তার সহযোগীদের বিচার এখনও শুরু করতে না পারার সমালোচনা করে আব্দুস সালাম বলেন, ‘আওয়ামী লীগ আমলে ব্যবসায়ীদের যে সিন্ডিকেট হয়েছিল সেই সিন্ডিকেট ভাঙ্গতে পারেননি। শেখ হাসিনা, ওবায়দুল কাদের, আসাদুজ্জামান কামালসহ যারা গণহত্যার সঙ্গে জড়িত তাদের একটি মামলারও বিচার শুরু করতে পারেননি। কবে করবেন? ৬ মাস তো চলে গেছে। আপনারও আযান (যাওয়ার) হওয়ার সময় হয়ে গেছে।’
বিএনপিতে দুর্নীতিবাজদের কোনো জায়গা হবে না জানিয়ে তিনি বলেন, যারা একটু এদিক-সেদিক চিন্তা করেন তাদের উদ্দেশে বলতে চাই তারেক রহমান পরিষ্কার বলেছেন দুর্নীতিবাজদের জায়গা বিএনপিতে নেই। বিএনপি দুর্নীতি, হাইজ্যাকে বিশ্বাস করে না। যারা মাফিয়া আছেন চোর আছেন তারা এখন থেকে সাবধান হয়ে যান, শহীদ জিয়ার সন্তান তারেক রহমান কিন্তু কাউকে ছাড়বেন না। এখনই কিন্তু অনেকের জন্য তারেক রহমানের দরজা-জানালা বন্ধ হয়ে গেছে। অনেকের ফোন কল বন্ধ হয়ে গেছে। কারণ তারেক রহমান দেশের নেতা। তিনি দেশের চিন্তা করেন সাধারণ মানুষের চিন্তা করেন।’
আগামীতে এই দেশের প্রধানমন্ত্রী তারেক রহমান হবেন উল্লেখ করে আব্দুস সালাম বলেন, ‘যেভাবে জিয়াউর রহমান এবং খালেদা জিয়া সফল হয়েছিলেন, রাষ্ট্র ব্যবস্থায় পরিবর্তন এনে তারেক রহমানও সেভাবে সফল হবেন ইনশাআল্লাহ।’