বরিশাল সংবাদদাতা
প্রকাশ : ০৩ ডিসেম্বর ২০২২ ০৮:২৯ এএম
আপডেট : ০৩ ডিসেম্বর ২০২২ ১৪:১৬ পিএম
কর্মীদের পেটাতে জুতা হাতে ছাত্রলীগ নেতা। প্রবা ফটো
শোভাযাত্রায় ছাত্রলীগ কর্মীরা বিশৃঙ্খলা করায় তাদের শাসন করতে গিয়ে প্রকাশ্যে জুতাপেটার অভিযোগ উঠেছে বরিশাল জেলা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক রাজীব হোসেন খানের বিরুদ্ধে।
বরিশাল নগরীতে পার্বত্য শান্তিচুক্তির রজতজয়ন্তী উপলক্ষে শুক্রবার (২ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের উদ্যোগে অনুষ্ঠিত শোভাযাত্রায় এ ঘটনা ঘটে।
এ ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা।
এ বিষয়ে রাজীব হোসেন খান জানান, তিনি তার কর্মীদের শাসন করেছেন মাত্র। তবে ছাত্রলীগের বর্তমান ও সাবেক নেতারা বলছেন, জুনিয়রদের শৃঙ্খলা শেখাবেন, শাসন করবেন। কিন্তু সেটা প্রকাশ্যে জুতাপেটা করে নয়।
পার্বত্য শান্তিচুক্তির রজতজয়ন্তী উপলক্ষে আয়োজিত র্যালির ভিডিওর একাংশে দেখা যায়, ফজলুল হক এভিনিউ অতিক্রমকালে রাজীব হোসেনের নেতৃত্বের খণ্ড শোভাযাত্রাটির দ্বিতীয় সারিতে থাকা কর্মীদের দিকে জুতা হাতে নিয়ে ছুটে যান তিনি। সেই জুতা দিয়ে ছাত্রলীগ কর্মীদের মারধর করেন। পরে আবার র্যালি নিয়ে নগর ভবনের দিকে চলে যান রাজীব। র্যালির সামনের অংশে ছিলেন ছাত্রলীগের নারী কর্মীরা।
প্রত্যক্ষদর্শী ছাত্রলীগ কর্মীরা জানান, রাজীব হোসেনের র্যালিতে তার কিছু কর্মী বিশৃঙ্খলা করছিলেন। এতে রাজীব ক্ষিপ্ত হয়ে তাদের জুতা দিয়ে পিটিয়েছেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জেলা ও মহানগর ছাত্রলীগের একাধিক নেতা বলেন, ছাত্রলীগ কর্মীরা বয়সে অনেক ছোট। তারা সমাবেশ কিংবা র্যালিতে বুঝে না বুঝে বিশৃঙ্খলা কিংবা ভুলত্রুটি করতে পারেন। সেজন্য তাদের প্রকাশ্যে মারধর কিংবা জুতাপেটা করা ঠিক হয়নি। কারণ ছোটবড় সব নেতাকর্মীরই একটা আত্মসম্মানবোধ রয়েছে। শান্তিচুক্তির আনন্দ শোভাযাত্রায় রাজীব হোসেন কর্মীদের জুতাপেটা করে দলীয় শৃঙ্খলাবিরোধী কাজ করেছেন।
জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি মেজবাহ উদ্দিন জুয়েল বলেন, ‘শৃঙ্খলা রক্ষা করতে গিয়ে দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গ করা অপরাধ। একটি বড় কর্মসূচিতে কর্মীরা কিছু ভুল করেন। শৃঙ্খলা ভঙ্গ করেন। তাই বলে প্রকাশ্যে তাদের জুটাপেটা করে শৃঙ্খলা রক্ষা করা যায় না। বর্তমানে যারা ছাত্রলীগের নেতৃত্ব দিচ্ছেন তাদের বুঝতে হবে, কর্মীরা দলকে ভালোবেসে কর্মসূচিতে যোগ দেন। এসব কর্মী কোনো নেতার বেতনভুক কর্মচারী নন যে রাস্তাঘাটে তাদের অপদস্থ করতে হবে। দলীয় কর্মসূচিতে এসে বিশৃঙ্খলা করলে তাদের দলীয় ফোরামে বিচার করা যেত। তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া যেত। প্রকাশ্যে কর্মীদের জুতাপেটা করা মোটেই ঠিক হয়নি।’
ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক রাজীব হোসেন খান বলেন, ‘আমার লোকজনকে আমি একটু শাসন করেছি। আমাদের নেতারাও তো আমাদের শাসন করেন। এটা তেমন কিছু না।’