রায়পুরায় গৃহবধূ হত্যা
নরসিংদী প্রতিবেদক
প্রকাশ : ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ২০:৫৯ পিএম
আপডেট : ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ২১:০২ পিএম
নরসিংদীর রায়পুরায় পূর্ব শত্রুতার জের, গোষ্ঠীগত দ্বন্দ্ব ও আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে প্রতিপক্ষের হামলায় গৃহবধূ শান্তা ইসলাম হত্যা মামলার আসামিদের গ্রেপ্তারসহ বিচার দাবিতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়েছে। রবিবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে রায়পুরা পৌরসভা মাঠে এ মানববন্ধন করা হয়।
পরে পৌরসভার সাবেক মেয়র আব্দুল কুদ্দুসের নেতৃত্বে বিক্ষোভ মিছিল হয়। মিছিলটি রায়পুরা বাজার হয়ে বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে থানা প্রাঙ্গণে শেষ হয়। বিক্ষোভ থেকে থানার ওসিকে আসামি গ্রেপ্তারে ৪৮ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দেওয়া হয়। বিক্ষোভে বিভিন্ন লেখা সংবলিত ফ্যাস্টুন ও ব্যানার নিয়ে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণ করতে দেখা যায়।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, শান্তা ইসলাম দুই মাসের অন্তঃসত্ত্বা ছিলেন। পূর্ব শত্রুতার জের, গোষ্ঠীগত দ্বন্দ্ব ও আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে তাকে সন্ত্রাসী সোহেল বাহিনীর সদস্যরা নির্মমভাবে গুলি করে হত্যা করেছে। ঘটনার ৯ দিন পার হলেও এলাকায় প্রকাশ্যে ঘোরাফেরা করা মামলার প্রধান আসামি সোহেলকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি প্রশাসন। ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে সোহেলকে গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনতে হবে। শান্তা হত্যার কয়েক ঘণ্টা যেতে না যেতেই হত্যাকারীরা ওই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান রিয়াজ মোর্শেদ খানের বাড়ি থেকে একটি গরু লুট করে ভূরিভোজ করেছে বলে অভিযোগ করেন বক্তারা।
মামলার বাদী ও নিহতের বাবা আহসান উল্লাহ বলেন, সোহেল ও তার বাহিনী বাড়িঘর লুটপাট করে অন্তঃসত্ত্বা মেয়ে শান্তাকে গুলি করে হত্যা করেছে। শান্তা বিএ অনার্স পাস করেছে। কিছুদিন পরই তার অস্ট্রেলিয়া যাওয়ার কথা ছিল। শান্তাকে যারা গুলি করে হত্যা করেছে তাদের বিচার চাই।
রায়পুরা থানার ওসি আদিল মাহমুদ বলেন, প্রাথমিক তদন্তে জানতে পেরেছি শান্তাকে হত্যা করেছে সোহেল। তাকে গ্রেপ্তার করতে থানা পুলিশের পাশাপাশি র্যাব ও গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) সদস্যরা তৎপর রয়েছে। এ ছাড়াও রায়পুরা থানার ১০ জন এসআই ও ৬ জন এএসআই নিয়ে একটি স্পেশাল টিম গঠন করা হয়েছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে আসামিদের গ্রেপ্তার করা হবে।
রায়পুরার শ্রীনগর ইউনিয়নে পূর্বশত্রুতার জের, গোষ্ঠীগত দ্বন্দ্ব ও আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে দীর্ঘদিন ধরেই ইউপি চেয়ারম্যান নিয়াজ মোর্শেদ খান রাসেল ও সোহেল ভেন্ডারের মধ্যে বিরোধ চলে আসছিল। গত ৭ ফেব্রুয়ারি দুপুরে সোহেল ভেন্ডারের নেতৃত্বে কতিপয় সন্ত্রাসী ইউপি চেয়ারম্যানের বাড়িতে হামলা চালায়। এ সময় গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত হন শান্তা ইসলাম। তাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। শান্তা ওই এলাকার শাকিল খানের স্ত্রী।
ঘটনার পরদিন ৮ ফেব্রুয়ারি নিহতের বাবা আহসান উল্লাহ জেলা যুবদল সদস্য ও শ্রীনগর এলাকার মৃত নুরুল ইসলামের ছেলে সোহেল মিয়াকে প্রধান করে ১৬ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত ১০/১৫ জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করেন।