কুমিল্লা (দক্ষিণ) সংবাদদাতা
প্রকাশ : ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ২০:৪১ পিএম
আপডেট : ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ২০:৪৬ পিএম
গোমতীর বুকে মাছ শিকারে মেতেছেন জেলেরা। প্রবা ফটো
চারদিকে সবাই মাছ ধরছে। কারও হাতে পোলো, কারও জাল। কেউ আবার ‘উহু পেয়েছি’ বলে চিৎকার করছে। মাথা নুইয়ে নুইয়ে সামনে এগুচ্ছেন তারা। গোমতীর ঘোলা জলে মাছ ধরার এমন দৃশ্য দেখা মেলে বছরে একবার কিংবা দুইবার।
রবিবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) মাছ ধরার এই দৃশ্য দেখা যায় গোমতী নদীর কুমিল্লার আদর্শ সদর উপজেলার জগন্নাথপুর ইউনিয়নের টিক্কারচর ব্রিজের নিচে। আর গোমতীর তীরের আশপাশে ক্রেতা ও দর্শকদের উপচে ভিড়ও দেখার মতোই।
জানা গেছে, সকাল ৮টা থেকে দুপুর ৩টা পর্যন্ত মাছ ধরার এই উৎসব শুরু হয়। এতে শামিল হয় জেলার বিভিন্ন উপজেলা ও আশপাশের বিভিন্ন জেলা থেকে আসা মাছ শিকারিরাও।
সরেজমিনে দেখা গেছে, কোথাও হাঁটু ও কোথাও কোমর পানিতে শ’খানেক মাছ শিকারি গোমতীতে নেমে পড়েছেন। অনেকের গায়ে টি-শার্ট ও পরনে লুঙ্গি। আর অনেকের পরনে সেন্ডো গেঞ্জি ও ট্রাউজার। বাঁশের তৈরি পোলো নামের এক মাছ ধরার ফাঁদ সামনে ফেলে ফেলে এগুচ্ছেন তারা। মাছ আটকালেই পোলোর উপরে থাকা ছিদ্র দিয়ে তুলছেন মাছ।
মাছ শিকারিদের একজন কুমিল্লার বুড়িচং উপজেলার বাকশিমুল ইউনিয়নের আবদুল আজিজ। তিনি বলেন, ‘গোমতী নদীতে বছরের কয়েকদিন আমরা মাছ ধরি। এতে ধরা পড়ে বড় বড় রুই, কাতল, আইর মাছসহ বিভিন্ন প্রজাতির মাছ। ছোট মাছ কমই ধরা পড়ে।’
নগরীর সুজানগর এলাকার জাকির হোসেন জানান, রবিবার বছরের প্রথম মাছ ধরতে নেমে প্রায় ১০ কেজির একটা কাতল মাছ পেয়েছি। পরে গোমতীর পাড়েই এক ক্রেতার কাছে ১০ হাজার টাকা বিক্রি করেছি।
তিনি বলেন, প্রতিবছরের ফাল্গুন মাস এলেই কুমিল্লা জেলার বিভিন্ন উপজেলা থেকে দলবদ্ধভাবে গোমতি নদীতে মাছ শিকার করতে আসেন। আমরাও নামি। কেউই মাছ ছাড়া খালি হাতে যায় না। রবিবার কটকবাজার গোমতী নদীর বাংলাদেশের অংশ থেকে শুরু করে টিক্কারচর ব্রিজ পর্যন্ত প্রায় ৪ কিলোমিটার পর্যন্ত পথ পাড়ি দেয় শিকারিরা। এ সময় ১০০ এর উপরে মৎস্য শিকারি তাদের পোলো ও জাল দিয়ে মাছ শিকার করেন।
বৃদ্ধ মাছ শিকারি বাবুল মিয়া বলেন, স্বাধীনতার পর থেকেই আমাদের পূর্বপুরুষরা এভাবে গোমতি নদীতে মাছ ধরে আসছেন। তাদের কাছে দেখে দেখে আমরাও এখন এই মাছ শিকারের অংশ নেই। মাছ পাওয়াটা বড় কথা না সকলে মিলে মাছ ধরতে আসি মজা করি এটাই অনেক।