মিঠাপুকুর (রংপুর) প্রতিবেদক
প্রকাশ : ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ২০:২৩ পিএম
এসআই নাজমুল। ফাইল ফটো
বিরোধীমতকে দমন, পুলিশ হেফাজতে নির্যাতন, ঘুষ এবং বন্দির পরিবারকে হেনস্তাসহ নানা অপকর্মে যুক্ত ছিলেন মিঠাপুকুর থানার সাবেক উপ-পরিদর্শক (এসআই) নাজমুল। রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর ভুক্তভোগীদের বক্তব্যে উঠে এসেছে তার এসব অপকর্মের কথা।
নির্ভরযোগ্য সূত্র বলছে, ছাত্রলীগের কোঠায় নিয়োগ পাওয়া পুলিশের এই কর্মকর্তা বিরোধীমত দমন পীড়নে বেপরোয়া হয়ে উঠেছিলেন।
এসআই নাজমুল বর্তমানে গাজীপুর সিআইডিতে কর্মরত থাকলেও তার নির্যাতন দমন-পীড়নের স্মৃতি বয়ে বেড়াচ্ছেন মিঠাপুকুরের অনেক ভুক্তভোগী।
‘মিথ্যা মামলায়’ কারাগারে গিয়েছিলেন রংপুর জেলা জিয়া মঞ্চের সদস্য সচিব শাকিল আহমেদ। কারামুক্তির পর তিনি বলেন, ‘ফেসবুকে স্বৈরাচার হাসিনাকে নিয়ে মন্তব্য করায় মিঠাপুকুর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি রফিকুল ইসলাম তুহিনের প্ররোচনায় আমাকে গ্রেপ্তার করে অমানুষিক নির্যাতন করেন এসআই নাজমুল। ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি আদায় করতে শারিরীক অত্যাচার করেন এবং তার ম্যাডামকে নিয়ে কেন লিখেছি তার জন্য এমন কোনো নির্যাতন নাই, যা তিনি করেননি। এমনকি আমার ছোট ভাই মোজাহিদকে ৫০ হাজার টাকা আনতে ৩০ মিনিট সময় বেধে দেন। আমার স্ত্রীকে মানুষিক টর্চারসহ হেনস্তা করেন।’
সখীপুর এলাকার ইউসুফের ছেলে এরশাদুল হক বলেন, ‘এসআই নাজমুল ছিলেন সন্ত্রাসীর ভূমিকায়। পৈশাচিক নির্যাতন করে পিটিয়ে আমাকে পঙ্গু করে দিয়েছেন। আমার জীবনটা শেষ করে দিয়েছেন। স্বৈরাচারের এই দোসরের শাস্তি আমি আমার জীবন দশায় দেখে যেতে চাই।’
এরশাদুলের স্বজন মোস্তফা মিয়া ও এলা মিয়া বলেন, ‘ইয়াবা কারবারি লিটন মিলে মোটা অংকের অর্থের বিনিময়ে আমাদের ভাইয়ের পিটিয়ে দুইটি পা ভেঙ্গে দিয়েছে সন্ত্রাসী নাজমুল। স্ট্রেচার ছাড়া স্বাভাবিক চলাচল করতে না পারায় আয় রোজগার সারা জীবনের জন্য বন্ধ হয়ে গেছে তার।’
মিঠাপুকুর উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য সচিব রুবেল সাদী বলেন, ‘বিরোধীমত দমনে এ পুলিশ কর্মকর্তা যা করেছেন, তা একজন পেশাদার পুলিশের কাজ নয়। বিএনপি জামায়াতের কথা শুনলে তাকে শায়েস্তা করতে এ পুলিশ কর্মকর্তা অতিউৎসাহী ছিলেন। বিভিন্ন সভাসমাবেশ তিনি একাই গুড়িয়ে দিতেন।’
এ ব্যাপারে এসআই নাজমুল হোসাইন বলেন, ‘এসব না করলে তো পুলিশের চাকরি ছেড়ে বাড়িতে বসে থাকতে হবে। আমার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা যা বলেছেন, নির্দেশ দিয়েছেন- আমি সেটাই করেছি।’
তৎকালীন মিঠাপুকুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোস্তাফিজার রহমান বলেন, ‘পা ভাঙার বিষয়টি নিয়ে আমি তার উপর চড়াও হয়েছিলাম। কিন্তু পরে আহত ব্যক্তি নিজেই অজ্ঞাত কারনে পিছু টান দেয়।’