কারাগারে সাবেক এমপি এবিএম ফজলে করিম

জুলাই গণঅভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় চট্টগ্রাম-৬ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য এবিএম ফজলে করিম চৌধুরীকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।

রবিবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) বিচারপতি মো. গোলাম মর্তুজা মজুমদারের নেতৃত্বে তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল এই রায় দেন। পরে আদালত তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

প্রসিকিউশনের পক্ষে প্রসিকিউটর আব্দুল্লাহ আল নোমান ফজলে করিমকে কারাগারে পাঠানোর আবেদন করেন। এ প্রসঙ্গে আব্দুল্লাহ আল নোমান বলেন, তার বিরুদ্ধে ১৬ জুলাই চট্টগ্রামে আওয়ামী লীগের অন্যান্য নেতাকর্মীদের সঙ্গে শিক্ষার্থী ও জনগণের ওপর হামলায় প্ররোচনা, উসকানি ও অংশগ্রহণের অভিযোগ রয়েছে।

এ প্রসঙ্গে ট্রাইব্যুনালের আইনজীবী বি এম সুলতান মাহমুদ বলেন, জুলাই আন্দোলনে মানবতাবিরোধী এক মামলায় এ বি এম ফজলে করিম চৌধুরীকে ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়। প্রসিকিউশনের পক্ষে প্রসিকিউটর আব্দুল্লাহ আল নোমান তাকে কারাগারে পাঠানোর আবেদন করেন। আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ট্রাইব্যুনাল ফজলে করিমকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আগামী ৮ এপ্রিল তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের দিন ধার্য করেছেন।

ট্রাইব্যুনালে বিএম সুলতান মাহমুদ ছাড়াও আইনজীবী গাজী মোনাওয়ার হোসাইন তামিম, মইনুল করিম, তারেক আব্দুল্লাহ ও সাইমুম রেজা উপস্থিত ছিলেন।

গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর থেকে তিনি আত্মগোপনে ছিলেন। পরবর্তীতে গত ১২ সেপ্টেম্বর ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া সীমান্ত হয়ে ভারতে পালিয়ে যাওয়ার সময় তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। এরপর একটি হেলিকপ্টারে করে ব্রাক্ষণবাড়িয়া কারাগার থেকে তাকে চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারে আনা হয়।

পরে ২৪ সেপ্টেম্বর কারাগার থেকে এনে ফজলে করিম চৌধুরীকে আদালতে হাজির করা হলে বিক্ষুব্ধ লোকজন আদালত প্রাঙ্গণে জড়ো হন। এ সময় বেশ কিছু ক্ষুব্ধ জনতা ফজলে করিম চৌধুরীকে বহনকারী প্রিজনভ্যানে ডিম ছুড়ে মারেন। তখন অন্য মামলায় গ্রেপ্তার দেখালেও গত ৫ ফেব্রুয়ারি তাকে আইসিটি মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়। পরে ১৬ ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে হাজির করার নির্দেশনা দেওয়া হয়।

হত্যা, অপহরণ, মুক্তিপণ আদায়, হত্যাচেষ্টা, অস্ত্র দিয়ে ফাঁসানো, অস্ত্রের মুখে জমি লিখিয়ে নেওয়া, ভাংচুর, দখলসহ বিভিন্ন অভিযোগে ছাত্র-গণ অভ্যুত্থানে পতিত আওয়ামী লীগ সরকারের সাবেক এমপি ফজলে করিম চৌধুরীর বিরুদ্ধে চট্টগ্রামের বিভিন্ন থানায় ১০টি মামলা রয়েছে।