এম এ ইউসুফ আলী, রাঙ্গাবালী (পটুয়াখালী)
প্রকাশ : ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ১২:৫৩ পিএম
পটুয়াখালীর রাঙ্গাবালী উপজেলার উত্তর চরমোন্তাজ গ্রামের চরলক্ষ্মী এলাকায় খালের ওপর সেতু নির্মাণ করা হয় গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে। এর ছয় মাস পরই সেতুটির সুরক্ষা দেয়ালসহ সংযোগ সড়ক ধসে পড়ে। প্রবা ফটো
পটুয়াখালীর রাঙ্গাবালী উপজেলার চরমোন্তাজ ইউনিয়নে একটি সেতু নির্মাণের এক বছরের মধ্যেই ধসে পড়ছে এর সুরক্ষা দেয়ালসহ (গাইড ওয়াল) সংযোগ সড়ক। এতে সেতু দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে যানবাহন। দ্রুত সুরক্ষা দেয়ালসহ সংযোগ সড়কটি মেরামতের দাবি স্থানীয়দের।
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) রাঙ্গাবালী কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, ইউনিয়ন-উপজেলা সংযোগ সড়কের অনূর্ধ্ব ১০০ মিটার সেতু প্রকল্পের আওতায় চরমোন্তাজ ইউনিয়নের উত্তর চরমোন্তাজ গ্রামের চরলক্ষ্মী এলাকার খালের ওপর ৬৬ মিটার দীর্ঘ একটি সেতু নির্মাণ করা হয়। নির্মাণকাজ শুরু হয় ২০২৩ সালের প্রথম দিকে। শেষ হয় ২০২৪ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে। সেতুর সঙ্গে নির্মাণ করা হয় সুরক্ষা দেয়ালসহ ৩৫০ মিটার দীর্ঘ সংযোগ সড়ক। এতে ব্যয় হয় সাড়ে ছয় কোটি টাকা। কিন্তু নির্মাণের ছয় মাসেই ধসে পড়ে সেতুর সংযোগ সড়ক ও এর সুরক্ষা দেয়াল।
স্থানীয়রা জানায়, উপজেলার চরমোন্তাজ ইউনিয়নে উত্তর চরমোন্তাজ ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান এমএ মতিনের বাড়ি সংলগ্ন খালের ওপর ৬৬ মিটার সেতু ও ৩৫০ মিটার সংযোগ সড়ক নির্মাণ করা হয়েছে। কিন্তু নির্মাণের এক বছরের মাথায় ভারী বৃষ্টিপাতে সেতুটির সংযোগ সড়ক ও গাইডওয়াল ধসে পড়ে। সেতু বরাবর গাইডওয়ালের গোড়ায় দেখা দিয়েছে ফাটল। যেকোনো সময় পুরো গাইডওয়াল ধসে পড়ে সেতুটি চরম হুমকির মুখে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা তাদের। এ ছাড়া ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে যানবাহন। প্রতিদিন সেতুটি দিয়ে দুই পারের শত শত মানুষকে ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করতে হয়। ঠিকাদারের নিম্নমানের কাজের কারণে এমন হয়েছে বলে দাবি এলাকাবাসীর।
গতকাল শনিবার সরেজমিন সেতু এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, সেতুতে ওঠার আগের বড় অংশ জুড়ে সুরক্ষা দেয়ালসহ সংযোগ সড়ক ধসে পড়েছে। গাইডওয়ালজুড়েই ফাটল স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে। এতে গাইডওয়ালজুড়ে বসানো পিলারগুলোও নড়বড়ে হয়ে গেছে। ফলে এলাকাবাসী ও পথচারীদের মাঝে একধরনের আতঙ্ক বিরাজ করছে। তাদের আশঙ্কা গাইডওয়াল ধসে পড়ে সেতুটিকে দুর্বল ও ঝুঁকিপূর্ণ করে তুলতে পারে। এতে যে কোনো সময় ঘটতে পারে বড় ধরনের দুর্ঘটনা।
চরমোন্তাজ ইউনিয়নের স্থানীয় বাসিন্দা বাহাদুর ইসলাম বলেন, ভারী বৃষ্টির কারণে সেতুর সংযোগ সড়ক ও গাইডওয়াল ভেঙে পড়েছে। কাজ করার ছয়-সাত মাস পরই ধসে পড়ে সেতুটির সংযোগ সড়ক ও গাইডওয়াল। ঠিকাদারের নিম্নমানের কাজের কারণে এমনটা হয়েছে। যদি দ্রুত কাজ না করা হয় তাহলে সেতুটিতে চলাচল করতে ঝুঁকি আরও বাড়বে। তবে দ্রুত সংস্কার করার দাবি তাদের।
স্থানীয় ইজিবাইকচালক মো. সুলাইমান বলেন, সেতুটি করার এক বছরও যেতে পারে নাই। এর আগেই সংযোগ সড়ক বৃষ্টিতে ভেঙে পড়েছে। ঠিকাদারের নিম্নমানের কাজের কারণে এমনটা হয়েছে। এখন আমাদের ঝুঁকি নিয়ে গাড়ি চালাতে হয় এই সেতু দিয়ে। আমাদের দাবি, যত দ্রুত সম্ভব সেতুটির সংযোগ সড়ক ও গাইডওয়াল কাজটি সংস্কার করা হোক। এখন কাজটি না করলে আবার বর্ষা আসছে তখন পুরো রাস্তা আর সেতুর কিছুই থাকবে না। তখন মানুষের দুর্ভোগ আরও বাড়বে।
এ ব্যাপারে ঠিকাদার মো. জামাল হোসেনের সঙ্গে যোগাযোগের জন্য তার মুঠোফোনে একাধিকবার কল দেওয়া হলেও তিনি তাতে সাড়া দেননি।
উপজেলা এলজিইডি প্রকৌশলী মো. হাবিবুর রহমান বলেন, ইতোমধ্যে ঠিকাদারের সঙ্গে কথা হয়েছে। এ ছাড়া ঠিকাদার জামানত কাজ সম্পূর্ণ শেষ করার পর দেওয়া হবে। আর যত দ্রুত সম্ভব কাজটি সংস্কার করা হবে বলে আশা করি।